মানবপাচারের মূল ঘাঁটি চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নে বিভিন্ন গ্রাম থেকে গত ১ বছরে সাগরপথে দুই শতাধিক লোক পাচার হয়েছে। পাচার হওয়া অভিবাসীদের অধিকাংশের এখনও কোনো হদিস মেলেনি। তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তাও অজানা। উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের কচ্ছপিয়া এলাকা থেকে দালালদের মাধ্যমে দফায় দফায় মালয়েশিয়ায় মানবপাচার হয়েছে। ইতিমধ্যে এলাকা থেকে সাগরপথে মালয়েশিয়ায় পাচারের শিকার হয়েছেন ৮৪ জন।
বিভিন্ন প্রকাশিত সংবাদ মাধ্যম ও স্থানীয় সূত্রে মানবপাচারকারী চক্রের মূলহোতা জিয়াবুল,আব্দল হক ,ইসলাম ,শাহআলম ,আবুবক্কর ,আক্তার কামাল, হাছু ও তার সহযোগিরা পাচার হওয়া অভিবাসীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পাচার হওয়া ব্যক্তিরা বর্তমানে অনেকেই মালয়েশিয়ার কারাগারে রয়েছেন দাবি করে স্বজনদের কাছ থেকে আরও টাকা আদায় করছে দালাল চক্রটি। এমনকি পাচার হওয়া ৮৪ জনের মধ্যে ২০-২৫ জনের স্বজনদের কাছ থেকে সেখানে নির্যাতন থেকে রক্ষা পাওয়ার শর্তে বিপুল অর্থ আদায় করা হয়েছে।
তবে এসব অভিবাসীর ভাগ্যে বাস্তবে কী ঘটেছে তার কোন সঠিক তথ্যও মিলছে না। স্বজনরা দালালদের টাকা দিয়েও আপনজনদের খোঁজ না পাওয়ায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের দারে দারে ঘুরছে।
পাচার হওয়া অভিবাসীদের স্বজনরা অভিযোগ করেন, দালাল হাছুর নানা প্রলোভন দেখিয়ে এবং অর্থ উপার্জন নিশ্চিতের কথা দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। তবে গত ১ বছরে ও অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য জানার সুযোগ হয়নি।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানায় মানবপাচারকারী চক্রের মূলহোতা হাছুসহ একাধিক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এরপর খানিকটা পুলিশি তৎপরতা বাড়লেও আসামিরা রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা মানবপাচারকারীদের গ্রেপ্তারের কোনো উদ্যোগ না নিয়ে বাদীকে উল্টো ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছেন মামলার বাদী।
অভিযোগ রয়েছে, দালাল হাছু ও তার সহযোগিরা মালয়েশিয়ায় পাচার করা লোকদের কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে টেকনাফ হয়ে সাগর পথে তাদের পাঠানো হয় মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে।
পুলিশ জানায়,গত বছরের শেষ দিকে উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের মইক্যাঘোনা সংলগ্ন মহাসড়ক থেকে ২০ জনকে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার প্রস্তুতির সময় আটক করা হয়েছিল। এ সময় ১ মানবপাচারকারীকেও আটক করা হয়। অবশ্য পরে সে ছাড়া পেয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, খুটাখালীর মানব পাচারকারী চক্রের মূলহোতা হাছু, বক্কর, জিয়াবুল। বর্তমানে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারে উদ্যোগ নিচ্ছে না। ফলে থেমে নেই মানবপাচার।
এ ব্যাপারে চকারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম খান জানান, মানবপাচার ঘটনায় একাধিক অভিযোগ দায়ের হয়েছে। জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
পাঠকের মতামত: