কক্সবাজার প্রতিনিধি :: আজ থেকে কক্সবাজার সদর উপজেলায় শুরু হচ্ছে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম। যা চলবে ২২ আগষ্ট পর্যন্ত। এর পরে ২৬ আগষ্ট পর্যন্ত আবেদন যাচাই বাছাই করা হবে। পরবর্তীতে ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ থেকে ৬ ধাপে ছবি তোলার কার্যক্রম শেষ হবে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার শিমূল শর্মা। ভোটার তালিকা হাল নাগাদ কার্যক্রমে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি। এদিকে যে কোন মূল্যে রোহিঙ্গা ভোটার ঠেকাতে তৎপর রয়েছে বলেও জানান তিনি।
সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার শিমুল শর্মা জানান, আজ ১ আগষ্ট থেকে প্রতিটি এলাকায় ১৮ বছর বয়সী বাংলাদেশী নাগরিকদের ভোটার করার কার্যক্রম শুরু হবে। যা চলবে ২২ আগষ্ট পর্যন্ত। পরবর্তীতে ২৩ থেকে ২৬ আগষ্ট সমস্ত আবেদন যাচাই বাছাই করা হবে। এর পরে ৫ থেকে ৬ টি ধাপে ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ছবি তোলার কার্যক্রম শুরু হবে। এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু সরকারি ভাবে কক্সবাজার সহ ৩১ টি উপজেলাকে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত ঘোষণা করা হয়েছে অনেক আগেই তাই এখানে বেশ কিছু বিশেষ কাগজ পত্র আবেদনকারীকে জমা দিতে হবে। তবে রোহিঙ্গা নয় মর্মে যে প্রত্যায়ন আগে নেওয়া হতো সেই বিষয়ে কক্সবাজারের স্থানীয় মানুষের সম্মান এবং মর্যাদার কথা চিন্তা করে সেটা সিথিল করা হয়েছে। তবে চেয়ারম্যান কর্তৃক স্থানীয় নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র অবশ্যই দিতে হবে।
তিনি আরো জানান, ভোটার তালিকা হালনাগাদ কাজে ১৩৬ জন কর্মী মাঠ পর্যায়ে কাজ করবেন, তাদের সুপারভাইজার হিসাবে থাকবে আরো ৩৭ জন। এ সময় তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ভোটার ঠেকাতে সব চেয়ে বড় ভুমিকা রাখতে পারে জনপ্রতিনিধিরা। কারণ তাদের প্রত্যায়ন, জন্ম নিবন্ধন ছাড়া কেউ ভোটার হওয়ার কোন সুযোগ নাই।
এদিকে যখনি ভোটার তালিকা হালনাগাদের কথা আসে সবার আগে আলোচনায় আসে রোহিঙ্গা ভোটার হওয়ার বিষয়ে, এ ব্যাপারে কক্সবাজার রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির সহ সভাপতি আবদুল হক নূরী বলেন, আমার জানা মতে স্থানীয়রা অনেকে গাফেলতি করে অনেক কাগজ পত্র সংগ্রহ না করলেও পুরাতন রোহিঙ্গা এবং তাদের ছেলেমেয়েরা সব কাগজ পত্র সংগ্রহ করে বসে আছে। শুনেছি অনেকে অনলাইনে ইতোমধ্যে আবেদন করে ফাইলসহ জমা দিয়ে ফেলেছে। আমার কাছে তথ্য আছে অফিসে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা উৎকোচ দিলে ফাইল জমা নেয়।
রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির প্রচার সম্পাদক সাংবাদিক নেজাম উদ্দিন বলেন, পুরাতন রোহিঙ্গার ছেলেমেয়ের সবার স্কুল কলেজের সার্টিফিকেট আছে, তারা অনেকে ভুয়া চাচা, ফুফু বা আত্মীয় স্বজন তৈরি করে রেখেছে, আর টাকা দিলে তাদের সব কাগজ আগেই তৈরি হয়ে যায়। তাই তারা ভোটার হতে কোন বাধা নেই। আর সারা বছর চলমান ভোটার কার্যক্রমে টাকা দিয়ে তারা ভোটার হয়েছে এরকম কয়েকশত প্রমাণ দিতে পারবো। এখন অনিয়ম দূূর্নীতের বিচার কাকে দিব। মূলত একশ্রেণীর জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের দেশ প্রেম না থাকলে কোন কিছু দিয়ে রোহিঙ্গাদের রোধ করা যাবে না।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার বারের সিনিয়র আইনজীবি এড. আবু ছিদ্দিক ওসমানী বলেন, সুনির্দিষ্ট কিছু কাজ করতে পারলে রোহিঙ্গাদের কিছুটা নিয়ন্ত্রন করা যাবে, যেমন পুরাতন রোহিঙ্গাদের তালিকা করে তাদের এনআইডি, পাসপোর্ট বাতিল করা, রোহিঙ্গাদের ছেলেমেয়ে যারা স্কুল কলেজে পড়ছে তাদের সার্টিফিকেটে পুরাতন শরণার্থী বা রোহিঙ্গা লেখা থাকা, যারা ঘর বাড়ি নিয়ে বসবাস করছে তাদের চিহ্নিত করে বাড়ির সামনে রোহিঙ্গার বাড়ি লেখা থাকা। তাহলেই দেখা যাবে নতুন করে কেউ ভোটার হতে আগ্রহ প্রকাশ করবে না।
পাঠকের মতামত: