ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজার শহরজুড়ে পতিতাদের হয়রানির শিকার স্থানীয়সহ পর্যটকরা

potitaনিউজ ডেস্ক::

কক্সবাজার শহরের লাল দিঘীর পাড়, আদালতপাড়া, পেট্রোল পাম্প, হাসপাতাল সড়ক, সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সামনে ও সুগন্ধা পয়েন্টে ও বিভিন্ন হোটেল-মোটেল ঘিরে তার আশপাশ এলাকায় দালাল ও পকেটমারসহ ভাসমান পতিতা এবং বিভিন্ন ধরনের অপরাধীদের বিচরণ দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টার। আদালতের প্রবেশপথের সোনালী ব্যাংকের পশ্চিম গলিতে পানের দোকান, কম্পিউটার দোকান ও হোটেল ঘিরে মাদক, পকেটমার, ছিনতাই এখনও সক্রিয় রয়েছে।

তারা নির্ভয়ে শহরে আসা পর্যটক ও স্থানীয়কে পকেটমার, ছিনতাই ও পতিতাতের হাতে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। তাদের কারণে উটতি বয়সী যুবক ও স্কুল/কলেজ পডুয়া ছাত্ররা প্রতারিত হচ্ছে। সারা রাত অবধি আদালতপাড়াসহ আশেপাশের পানের দোকানীর নেতৃত্বে এসব অপকর্মের বিচরণ করে বলে জানান স্থানীয়রা।

সূত্রে জানা যায়, পুলিশে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে হোটেল এর মালিক ও অপরাধীরা নিরাপদে তাদের অপকর্ম চালাচ্ছে। স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ী ও টমটম চালকরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শহরের জুড়ে হোটেল-মোটেল জোন ও সৈকতের বিভিন্ন এলাকা অপরাধীদের আস্থানা হিসেবে পরিচিত।

মেরিন ড্রাইভ সড়কসহ সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যটক ছিনতাই, চাঁদাবাজি, পতিতা ব্যবসা ও ইয়াবাসহ মানবদেহে ক্ষতিকারক বিভিন্ন প্রকার মাদকের ব্যবসা থেকে শুরু করে এমন কোন অপরাধ নেই যা প্রতিনিয়তেই হচ্ছেনা। তবে সম্প্রতি পুলিশের ওসব দূর্নীতিবাজ সদস্যদের আশকারায় এতই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে এখন তারা প্রকাশ্যে টমটম যোগে মাদক পৌঁছে দিচ্ছে বিভিন্ন হোটেলে গ্রাহক সহ মাদকসেবীদের হাতে। সাথে সাথে পতিতাদের হাতে হয়রানির শিকার হচ্ছে স্থানীয়সহ পর্যটকরা।

অভিযোগে আরো জানা যায়, ওই অপরাধীরা প্রায় প্রতিদিনই নির্ভয়ে এ অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এবং শহরের বেশ কয়েকটি জায়গায় লাইট হাউস পাড়া, বুদ্ধমন্দির পাড়া, বড় বাজার, দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়া, সমিতি পাড়া, সমিতি বাজার ও লার পাড়াসহ এলাকায় নির্দিষ্ট একটি জায়গায় কৌশলে বিদেশি মদ, বিয়ার ও ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য রাখা হয়। মাদক সরবারহের কাজে ব্যবহৃত টমটমগুলোর গোপনীয় স্থানে। অর্ডার মতোই টমটম চালকরা গ্রাহকদের হাতে পৌঁছে দেয় মাদক। আর প্রতিদিন এ ব্যবসায় লাভের মোটা অংকের টাকা ভাগভাটোয়ারা করে ওই সিন্ডিকেট সদস্যরা। যার বিশাল একটি অংশ দেওয়া হয় এ অপরাধ কাজের অন্যতম সহযোগী হিসেবে বিভিন্ন পুলিশ প্রশাসনকে।

ভুক্তিভোগিরা দাবী করছেন, যদি অচিরেই আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসব অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করতে অভিযানে না নামে তাহলে আদালতের প্রবেশ মূখেরসহ পুরো শহর পরিবেশ অনেকটা নষ্ট হয়ে যাবে। অপরাধীরা কয়েকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে শহর এলাকায় অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে বেড়াচ্ছে। তখন অপরাধের শিকার ব্যক্তিদের আর কিছুই করার থাকে না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আদালতের নিচতলাসহ আদালত পাড়ার পশ্চিমে খালি জায়গায় পতিতাদের পাশাপাশি পকেটমার বিচরণ করতে দেখা গিয়েছে। পুরো আদালতপাড়ার সামন ঘিরে ফুটপাতে কাপড়ের ও বিভিন্ন ভাসমান দোকান রয়েছে। আদালত পাড়াসহ ফুটপাতে চায়ের দোকান ও পানের দোকান। প্রকাশ্যে ডজন খানেক পতিতারা খদ্দেরকে নিয়ে টানা-হেঁচড়া এসবের মধ্যে ওৎপেতে থাকে পকেট মারসহ অপরাধ চক্রের সদস্যরা। এরা আদালত পাড়ায় আগতদের পকেট কাটছে। কেউ ইচ্ছে করেই ধাক্কা দিয়ে গায়ের ওপর পড়ছে।

স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, ক’দিন আগে তিনি আদালতের হাজিরা দিতে এসে পকেটমারের হাতে শিকার হয়ে তার মানিব্যাগসহ  নিয়ে যায়। তিনি টেরই পাননি কিভাবে মানিব্যাগটা নিয়ে গেলো। তখন আশ্চার্য মনে হলো। দ্রুত পালিয়ে যাওয়ায় পকেট মারকে ধরা সম্ভব হয়নি।

বেশ কজন ভুক্তভোগী জানান, আদালত পাড়াসহ কয়েকটি পয়েন্টে বেশ কয়েকজন পানের দোকানের অধিনে রয়েছে কিছু দালাল চক্র। এরা আগত বাদি-বিবাদীদের কাছে ভিড়ে তাদের প্রতারণা করছে। টাকা নিচ্ছে, কাজ করছে না। এভাবে প্রতারিত হচ্ছে শত শত মানুষ।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর মডেল থানার অপারেশন অফিসার আব্দুর রহিম জানান, আদালত পাড়াসহ বেশ কয়েকটি স্থানে এলাকায় অপরাধ প্রবণতা হওয়ার কারণে প্রায় সময়ে অভিযান চালানো হয়। অভিযানের পরে কয়েকদিন ভাল গেলেও আবারো তাদের উৎপাত বেড়ে যায়। অভিযান আরো বাড়িয়ে দিবে বলে জানান তিনি।

পাঠকের মতামত: