ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারে স্বেচ্ছাসেবকদের হাতে চিকিৎসক লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ

জসিম উদ্দীন :: কক্সবাজারে কর্মস্থলে আসতে-যেতে প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা চিকিৎসকদের বাঁধা প্রদানের অভিযোগ উঠেছে।ডিসির পারমিশনের অজুহাত দেখিয়ে লকডাউন বাস্তবায়নে নিয়োজিত কিছু অতি উৎসাহী কিছু স্বেচ্ছাসেবকরা চিকিৎসকদের বাঁধা প্রদান করেছে বলে জানাগেছে।

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গত ৬জুন থেকে রেড জোন চিহৃত করে কক্সবাজার পৌরসভায় আগামী ১১জুলাই পর্যন্ত লকডাউন বাস্তবায়নে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।লকডাউনের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স,রোগী পরিবহন,স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী ব্যাক্তিবর্গ, (অন ডিউটি) পরিবহন, কোভিড ১৯ মোকাবেলায় ও জরুরি সেবা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের গাড়ি।

কিন্তুু পরিচয়পত্র দেখিয়ে আকুতি-মিনতি করলেও কোন কিছুই শুনেন না অতি উৎসাহি কিছু স্বেচ্ছাসেবক এমনটাই জানিয়েছেন ভুক্তভোগী দুইজন চিকিৎসক।

ভুক্তভোগী চিকিৎসকদের একজন কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার শামীম রাসেল।তিনি বর্তমানে কক্সবাজার জেলা কারাগার ও সদর হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছেন। ডাক্তার শামীম রাসেল জানিয়েছেন,সোমবার ২২জুন দুপুরে হলিডে মোড়ে তার গাড়ি আটকে দেন স্বেচ্ছাসেবকরা।পরিচয় পত্র দেখালেও স্বেচ্ছাসেবকরা ডিসির পারমিশন না থাকার অজুহাত দেখিয়ে তাকে হাসপাতালে যেতে দেয়নি, গাড়ি ঘুরিয়ে উল্টোপথে ফিরে যেতে বাধ্য করেন।

ডাক্তার শামীম স্বেচ্ছাসেবকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে শেষ পর্যন্ত অন্য একটা রাস্তা দিয়ে ওইদিন হাসপাতালে গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।তার মতে, অজ্ঞ অতিউৎসাহী কিছু স্বেচ্ছাসেবকদের হাতে হয়তো অনেকেই এই ধরনের হেনস্তার শিকার হচ্ছে, কিন্তুু লজ্জায় কেউ বলছে না । তারপরও মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে গিয়ে কর্মস্থলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিষয়টা জেলা কারাগারের সুপারকে অবগত করেছেন বলে জানিয়েছেন ডাক্তার শামীম।

একইভাবে দু’বার হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন, হোপ ফাউন্ডেশনের গাইনি চিকিৎসক ডাক্তার ফাহমিদা আক্তার । তিনি জানান,কর্মস্থলে যাওয়ার পথে সদর উপজেলার পরিষদের সামনে তাকে গাড়ি থেকে একবার নামিয়ে দেন স্বেচ্ছাসেবকরা। আরেকবার কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সামনে গাড়ি আটকে পায়ে হেঁটে বাসায় যেতে বাধ্য করা হয়ে তাকে।

ভুক্তভোগী ডাক্তার ফাহমিদা এখন তার প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে নিতে ডিসির ছাড়পত্র নেয়া গাড়ি না আসলে বাড়ি থেকে বের হন না বলে জানিয়েছেন।

কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডাক্তার মাহবুবুর রহমান বলেন, অভিযোগ এখনো পর্যন্ত আমার কাছে আসেনি।তবে ডাক্তারদের যদি হয়রানি করা হয়ে থাকে এর চেয়ে দুঃখের আর কিছু হতে পারে না।তিনি বলেন,যদি সন্দেহ হয় কেউ ভুয়া ডাক্তার পরিচয় দিচ্ছে সেক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবকরা জেলা প্রশাসনের সহায়তায় তাদের আইনের মাধ্যমে শাস্তি প্রদান করতে পারেন। অতি উৎসাহী হয়ে ডাক্তারদের হেনস্থা করা কিছুতেই কাম্য নয়।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন বলেন, যদি এমনটা হয় বিষয়টা দুঃখজনক। তিনি বলেন হয়তো হাতেগোনা কয়েকজন অতি উৎসাহী স্বেচ্ছাসেবকদের এ ধরনের ভুল ত্রুটি করছে, তবে বিষয়টা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পাঠকের মতামত: