নুন আনতে যাদের পান্তা ফুরায় তাদের আবার কোটি টাকার চিকিৎসা! কথাটি ভাবতেই অবাক হতে হয়। তবে অবাক হবার কিছু নেই ঘটনা সত্যি। বিনামূল্যে প্রায় শতাধিক অসহায় জন্মগত ত্রুটি, অগ্নিদগ্ধ ও অসহায় পঙ্গু মানুষ পেয়েছেন নতুন জীবনের অনুপ্রেরণা। তারা স্বপ্ন দেখছেন সুন্দর জীবন নিয়ে বাঁচার। কঠিন এ অপারেশন ঢাকা-চট্টগ্রাম কিংবা বিদেশ গিয়ে নয়, পেয়েছেন নিজ এলাকা কক্সবাজারেই। আর তাতেই বেজায় খুশি এতদাঞ্চলের প্রায় শতাধিক অসহায় রোগী ও তাদের পরিবার।
কক্সবাজারের রামুর চেইন্দা হোপ হসপিটালে সরেজমিন গিয়ে চোখে পড়ে মানবিক এই দৃশ্য। এমন উদার গল্পের ব্যাখ্যা দিয়ে ঢাকা থেকে আসা প্লাস্টিক সার্জন ডা. ইমরান চৌধুরী জানান, এই চিকিৎসা ক্যাম্পে প্রতি রোগীর পেছনে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রায় একলাখ টাকারও বেশি খরচের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে এই চিকিৎসা ক্যাম্পে নিজ উদ্যোগে আর্থিক সহযোগিতা করছেন ইউরো গ্রুপের চেয়ারম্যান এ এস এম হায়দার নামে একজন ব্যবসায়ী, সাংবাদিক পুত্র। তিনি কক্সবাজারের রামু উপজেলার হোপ হসপিটালের মাধ্যমে জন্মগত ক্রটি, অগ্নিদগ্ধ ও পঙ্গু রোগীদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। তিনি তৃতীয় বারের মতো বিনামূল্যে এই চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।
চিকিৎসা নেয়া উখিয়ার ঈসমাইল নামে এক রোগী জানান, আমি কখনো ভাবিনি পঙ্গু অবস্থায় আবার নতুনভাবে হাঁটতে পারবো। কিন্তু হোপ হসপিটালের মাধ্যমে আমি আজ নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখছি। এতে আমি এবং আমার পরিবারের সবাই আনন্দিত।
এদিকে রামুর হোপ হসপিটালের কান্ট্রি ডিরেক্টর এস এম ফেরদৌস জামান বলেন, আমরা প্রতি বছর ইউরো গ্রুপের চেয়ারম্যান এ এস এম হায়দারের সহযোগিতায় এই ক্যাম্পটি চালু করেছি। ক্যাম্প শুরু হওয়ার আগে থেকে আমরা কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন প্রান্তিক এলাকায় গিয়ে রোগীদের খুঁজে বের করি। এরপর আমরা সার্জারির জন্য তৈরী করি। এদিকে এবারের ক্যাম্পে পর্যায়ক্রমে মোট ৫০ জন রোগীকে অস্ত্রোপচার করা হবে। হোপ হসপিটালে বিশ্রামহীন কাজ করে যাচ্ছেন প্লাস্টিক সার্জন ডা. ইমরান চৌধুরীর নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি টিম। উক্ত টিমের সদস্যরা হলেন ডা. শামীম হাসান, ডা. ওয়াহিদ মোর্শেদ, ডা. সৈয়দ আতিকুর রহমান ও ডা. মোস্তফা আমিন খান।
পাঠকের মতামত: