এম.শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার, ৩০ জুন ॥
“মধুর হাজারো গুণ’’ এই প্রকৃতি থেকে পাওয়া মধু আজ বিলীনের পথে। এক সময় কক্সবাজার জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মেঠো পথের আশ-পাশে ঝোপ-বাগান ও বাড়ির আঙ্গিনার গাছের ডালে ডালে এখন সময় দেখা যেত মৌ’মাছির চাক।
বিভিন্ন কলাকৌশলের মাধ্যমে মৌমাছির চাক থেকে মধু সংগ্রহ করে মধু ব্যবসায়ীরীরা তাদের সংসার চালাতেন। বর্তমানে সেই মৌচাক আর দেখা যায় না।
আধুনিক পদ্ধতির মাধ্যমে মৌ-মাছির চাষ করে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে বর্তমানে। গ্রামগঞ্জ থেকে দিন দিন মৌচাক বিলীণ হয়ে যাচ্ছে।
মৌ’মাছির চাক পড়ত এখন আর দেখা যাই না সেখানে। এ ভাবে জেলার সব জায়গায় আগের মতো আর মৌমাছি আসছে না গাছে গাছে চাক পড়ার জন্য।
কিন্ত সাম্প্রতিক সময় কিছু প্রতারক চক্র মৌ মাছির চাক সংগ্রহ করে অভিনব কায়দায় পাতিল ভরে নকল মধু দেদারছে বিক্রি করে সরল মানুষের সাথে চরম ভাবে প্রতারণা করে আসছে। এদৃশ্য জেলার গ্রামাঞ্চলের চেয়ে কক্সবাজার শহরেই বেশি চোখে পড়ছে।
প্রতারক চক্র একটি বা দুটি মৌ মাছির চাক সংগ্রহ করে লোভনীয় কায়দার সারা বছরই খাঁটির মধুর তকমা লাগিয়ে নকল মধু বিক্রি করছে।
কক্সবাজার শহরের আদালতপাড়ায় মৌচাক সহ মধু বিক্রেতা জয়নাল জানান, তিনি সহ আরো ৪ জন কক্সবাজারের পার্শ্ববর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার পাহাড়ি এলাকা থেকে মৌচাক সংগ্রহ করে তারা বিক্রি করছেন।
তিনি দাবী করেন, মৌ মাছির চাক সংগ্রহ করা তাদের কাজ। মধু বিক্রি করেই সংসার চালান।
একপ্রশ্নে জবাবে তিনি দাবী করেন, সংগৃহিত মৌ মাছির চাকেও বংশ বিস্তার করে। এভাবে মধুর পরিমাণও বাড়তে থাকে।
রামু ঈদগড় পাহাড়ি এলাকার ৯৩ বছরের বৃদ্ধ ফসি আলম জানান, আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন বাঁশ-বাগানে, আমগাছে, গাফগাছে, তেতুলগাছে ও পিচফল গাছ থেকে মৌ-মাছির চাক কেটে, মধু এনে বাড়ির সবাই মিলে দৈনিক সকালে রুটি দিয়ে খেতাম।
মধু খাওয়ার জন্য সহজে আমাদের কোন রোগ ব্যাধি হতো না। যদি কেউ মৌচাক কাটতে বাধা দিতো তাতেও আমরা থামতাম না।
তিনি বলেন, একসময় চুরি করে মৌচাকের ভিতরে পাটকাটির একটি মাথা দিয়ে অন্য পাশ মুখ নিয়ে মধু খেতাম। এখন মধু পাইনা, তাই খাওয়া হয়ে উঠেনা আগের মতো। এখন এসব কথা অতীত। তাই বাজারে মৌচাকিরা যেসব মধু বিক্রি করছে, তা বিশুদ্ধ মধু নয়। নকল ভাবে বানিয়ে খাঁটি মধু হিসেবে বিক্রি করে সাধারণ মানুষের সাথে চরম ভাবে প্রতারণা করা হচ্ছে।
পাঠকের মতামত: