ঢাকা,রোববার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি এমন ইয়াবা ব্যবসায়িরা বেপরোয়া

কক্সবাজার প্রতিনিধি ::
কক্সবাজারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানেও অধরাই রয়েছে গেছে অধিকাংশ ইয়াবা গডফাদার। এছাড়া বর্তমানে যাদের আত্মসমর্পণ করেছে এতে অধিকাংশ গডফাদার নেই। এ ছাড়া তালিকাভুক্ত না হলে অসংখ্য ইয়াবা ব্যবসায়ি নিবিঘেœ চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা ব্যবসা।
অধরাই রয়ে গেল অসংখ্য ইয়াবা গডফাদার। এ ছাড়া তালিকাভুক্ত হয়নি এমন ইয়াবা ব্যবসায়ির সংখ্যা অনেক। যারা নির্বিঘেœ ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় গত জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত তালিকায় কক্সবাজারের যে ৭৩ জন প্রভাবশালী ইয়াবা কারবারির (গডফাদার) নাম ওঠে এসেছিল তার অধিকাংশই এখরো ধরাছোয়ার বাইরে। তালিকায় থাকা মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারে‘চল যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’ এই শ্লোগানে দেশজুড়ে অভিযান শুরু করেও মুলহোতাদের অধিকাংশই এখনো অধরাই রয়ে গেছে। অনেকেই রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় নিজেকে আড়াল করা জোর প্রচেষ্টায় আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযানে কথিত বন্ধুক যুদ্ধে নিহত কিংবা গ্রেপ্তার হয়েছে এতে হাজী সাইফুল করিম ও শাহজাহান চেয়ারম্যান ছাড়া অধিকাংশই ছোট বা মাঝারি শ্রেণীর মাদক ব্যবসায়ী বলে।

কক্সবাজার সোসাইটির সভাপতি কমরেড গিয়াস উদ্দিন জানিয়েছেন, নিজেকে রক্ষা করতে রাজনৈতিক নেতা ও শীর্ষ জনপ্রতিনিধিদের ছত্রছায়ায় রয়েছে অনেক ইয়াবা ব্যবসায়ি। বিভিন্ন সভা সমাবেশে নেতৃবৃন্দের পিছনে এসব বিতর্কিত লোকজনকে দেখা যায়। অনেকেই আছে নিজেকে দুরে সরিয়ে রেখে অন্য লোকজনকে দিয়ে ইয়াবা ব্যবসা চালায়। যারা ব্যবসা চালায় তারাও শীর্ষনেতাদের পিছনে ঘুরঘুর করে। তাই এই ব্যাপারে  নেতৃবৃন্দের আরো সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। এ ছাড়া তালিকাভুক্ত নয় এমন ইয়াবা ব্যবসায়ি রয়েছে অনেক। যারা এখনো নির্বিঘেœ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এদের অনেকেই শূন্য থেকে এখন কোটিপতি। চকরিয়া, টেকনাফ ও মহেশখালীর কুতুবজুম  কেন্দ্রিক একটি সিন্ডিকেট এখনো বড় ধরণের ইয়াবার চালান দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করছে এমন জনশ্রুতি রয়েছে। তারাও এখন ধরা ছোয়ার বাইরে। এদের সবাই রাজনৈতিক মুখোশ নিয়ে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
মহেশখালী কলেজের প্রভাষক এহছানুল করিম জানিয়েছেন, ইয়াবার আগ্রাসন ঠেকাতে প্রশাসনকে আরো কঠোর হতে হবে। না হয় দিনদিন আরো বেড়ে যাবে। টেকনাফ কেন্দ্রিক অভিযান জোরদার হলেও ইয়াবা ব্যবসায়ির সংখ্যা কমেনি বরং বেড়েছে। নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করতে কঠোর অভিযানের বিকল্প নেই।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রতিনিধি জানান, স্ব রাষ্ট্র মন্দ্রনালয়ের কয়েক তালিকাভুক্তসহ অসংখ্যা ইয়াবা ব্যবসায়ী থাকার পর রহস্যজনক কারণে তারা জামাই আদরে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। চকরিয়া পেৌর সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতাসহ প্রায় অর্ধশতাধিত ইয়াবা ব্যবসায়ী পুরো শহর দাপিয়ে বেড়ালেও ধরা পড়ছেনা অনেকেই। মাঝে মধ্যে পুলিশ গুটি কয়েক খুচরা ইয়াবা ব্যবসায়ী পুলিশের হাতে ধরা পড়লেও প্রকৃত ইয়াবা ব্যবসায়ীরা রয়ে যায় ধরা ছোয়ার বাইরে।
সুত্রে আরো জানা যায় কতিথ বন্ধুক যুদ্ধে যারা নিহত হয়েছে তাদের অধিকাংশই মাদকের খুচরা ব্যবসায়ী, সেবনকারী এবং দরিদ্র ও  পরিবারের লোকজন। মাদক সাম্রাজ্যে এরা কেবল ‘বাহকের’ ভূমিকা পালন করতেন। কিন্তু যারা মাদক আমদানি থেকে শুরু করে দেশের বিশাল মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে তাদের কেউই ধরা পড়েনি। মহেশখালীতে ২০/২৫ জন মাদক স¤্রাট থাকলেও তারা এখনো অধরাই রয়ে গেছে। এদের কয়েকজন গডফাদারের ছবিসহ পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন জানিয়েছেন, কোন ইয়াবা ব্যবসায়ি রেহাই পাওয়ার সুযোগ নেই। অভিযান অব্যাহত আছে থাকবে। কারা ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত তাদের চিহ্নিত করেছে প্রশাসন।

পাঠকের মতামত: