সাতটি দেশের প্রখ্যাত ক্বারীদের অংশগ্রহণে পর্যটন শহর কক্সবাজারে হতে যাচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক ক্বেরাত সম্মেলন ও হুসনে সওত প্রতিযোগিতা ২০১৭’। হুসনে সওত হলো মহান আল্লাহর বাণী আল-কুরআনের সুন্দর কন্ঠের তেলাতওয়াতের প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় কক্সবাজার জেলার স্কুল ও মাদ্রাসার ১০ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করবে।
আন্তর্জাতিক ক্বেরাত সম্মেলন সংস্থা কক্সবাজার জেলা শাখা এই সম্মেলন ও প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে।
আগামি ২ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩টায় কক্সবাজার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে হবে আন্তর্জাতিক ক্বেরাত সম্মেলন। এই সম্মেলনেই যোগ দেবেন মিশর, মরক্কো, ইরান, ব্রুনাই, ভারত, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের ৯ জন প্রতিথযশা ক্বারী। এরা হলেন মিশরের শাইখ মুহাম্মদ আল হুসাইনী ঈত্বা ও শাইখ মুহাম্মদ আল-মুরিজ্বী, মরক্কোর ড. আবদুল ফাত্তাহ আল ফুরাইসী, ইরানের ক্বারী কারীম মানসুরী, ব্রুনাইয়ের ক্বারী আওয়াং হাজ্জ মেতুসসীন, ভারতের মাওলানা ক্বারী তৈয়ব জালাল, মালয়েশিয়ার ক্বারী ওয়ান আইনুদ্দীন ও বাংলাদেশের ড. আহমদ বিন ইউছুফ।
এই সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন চট্টগ্রামের জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ার সাবেক ক্বেরাত বিভাগীয় প্রধান ও উসতাযুল কুররা ক্বারী আল্লামা আবদুল গণি (বড় ক্বারী সাহেব হুজুর)।
বিকালে এই সম্মেলন হলেও সকালে হবে হুসনে সওত প্রতিযোগিতা (সুন্দর কন্ঠের প্রতিযোগিতা)। এই প্রতিযোগিতা হবে কক্সবাজার শহরের তানযীমুল উম্মাহ হিফয মাদ্রাসার হল রুমে।
শনিবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে কক্সবাজার প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক ক্বেরাত সম্মেলন সংস্থা কক্সবাজার জেলা শাখার আহবায়ক হাফেয রিয়াদ হায়দার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি জানান, এই সম্মেলনে ‘বর্তমান বিশ্বের শ্রেষ্ট ক্বারী’ মিশরের ড. আহমদ আহমদ নাঈনা অংশ নেয়ার কথা ছিল। শেষ মুহুর্তে তাঁর স্ত্রীর গুরুতর অসুস্থতাজনিত কারণে বাংলাদেশে আসতে পারছেন না।
হাফেয, কবি ও ইসলামি গানের শিল্পী রিয়াদ হায়দার জানান, শুধু এই দুনিয়ায় নয়, বেহেশতেও কুরআনের ক্বেরাত সম্মেলনের আয়োজন হবে। সেই সম্মেলনে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ট নবী ও রাসূল হযরত মুহম্মদ (স.) ও হযরত দাউদের (আ.) মতো নবীরা কুরআন তেলাওয়াতে অংশ নেবেন। সেই সম্মেলনে মহান আল্লাহ নিজেও সূরা আর-রাহমান তেলাওয়াত করবেন।
তিনি বলেন, ‘সেইদিন মহান আল্লাহ সূরা আর-রাহমান না বলে আনা-রাহমান বলে তেলাওয়াত শুরু করবেন। সেই সম্মেলন হবে বান্দাহদের জন্য মহিমান্বিত।’
মহান আল্লাহ আল-কুরআনকে সুন্দর সুরে তেলাওয়াতের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন বলে জানিয়ে রিয়াদ হায়দার জানান, কুরআন তেলাওয়াতের তিনটি ধারা রয়েছে। একটি হলো হদর, পবিত্র কাবাঘরে তারাবী নামাজে যেভাবে কুরআন তেলাওয়াত করা হয়। আরেকটি হলো তারতীল। অন্যটি হলো কুরআন পাঠের সর্বোচ্চ আর্ট ‘তাদবীর’।
তিনি সকলকে কুরআনের এই সম্মেলনে উপস্থিত হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এই সম্মেলনে মহিলাদের জন্য পর্দাসহকারে প্রজেক্টরের মাধ্যমে তেলাওয়াত শোনার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলেও জানান মাওলানা রিয়াদ হায়দার।
আন্তর্জাতিক ক্বেরাত সম্মেলন সংস্থা কক্সবাজার জেলা শাখার সদস্য সচিব হাফেজ মাওলানা তোফাইল উদ্দিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্টিত সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংস্থার আহবায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য গোলাম কিবরিয়া, আবুল কাসেম, আনিসুল হক চৌধুরী, নুরুল হক নূর ও মাওলানা জামাল হোসাইন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির সহকারি সদস্য সচিব হাফেজ কাউসারুল হক।
পাঠকের মতামত: