ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারের সংরক্ষিত বনের গাছ কেটে গড়ে ওঠছে অবৈধ বসতি

বিশেষ প্রতিবেদক:
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের আওতাধীন খুটাখালী বনবিটের পাগলিরবিল এলাকায় সংরক্ষিত বনের গাছ কেটে সেখানে নির্মিত হচ্ছে অবৈধ বসতবাড়ী। ওই এলাকায় এতোমধ্যে প্রায় ৭ হাজার চারাগাছ কেটে সাবাড় করে ফেলা হয়েছে। অভিযোগ ওঠেছে, বন রক্ষায় নিয়োজিতদের সাথে আঁতাত করে বসতি গড়ে ওঠায় দখলবাজদের বিরুদ্ধে কোন এ্যাকশান নেয়া হয়না। যে কারণে নিত্য নতুন স্থাপনা নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, স্থানীয় বনপ্রহরি নুরুর বাড়ীর পূর্ব পাশে ৩/৪ একর জায়গা দখল করে বসতঘর নির্মাণ করা হয়েছে। আরো কয়েকটি ঘর নির্মাণ অপেক্ষায় রয়েছে। কেটে ফেলা হয়েছে আকাশ মনি, গর্জন, জাম, তেলসুরসহ সংরক্ষিত বনের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। খুটাখালী বনবিটের আরো বেশ কয়েক জায়গায় অবৈধ বতসি নির্মাণের মহোৎব চলছে।
শুধু তাতে শেষ নয়। খুটাখালী বনবিটের আওতাধীন মধুশিয়া, ঠান্ডাছড়ি, পাগলিরবিল এলাকার বাগানের ভেতরে শক্তিশালী মেশিন বসিয়ে দেদারছে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রতিদিন অন্তত ২০ ট্রাক বালি অন্যত্র সরবরাহ করে হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারী লাখ টাকা। এতে জড়িত রয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যক্তি। যাদের সাথে সরাসরি বোঝাপড়া রয়েছে খুটাখালী বনবিট কর্মকর্তাদের সাথে। এমন অভিযোগ প্রত্যক্ষদর্শী লোকজনের। অভিযোগের তীর খোদ রেঞ্জ কর্মকর্তা কাজী মোকাম্মেল কবির ও খুটাখালী বিট কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে।
এলাকাবাসীর সাথে কথা হলে তারা জানায়, ক্ষমতাসীন দলের পরিচয় দিয়ে মো. জিল্লুর রহমান নামে এক ব্যক্তি বনের জায়গা দখল করেছেন। নির্মাণ করছেন বসতঘর। তার সায়েত রয়েছে আরো বেশ কয়েকজন দখলবাজ। চিহ্নিত চক্রটি মিলে মিশে সংরক্ষিত বন দখল উৎসবে মেতেছে।
স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি জানিয়েছেন, সংরক্ষিত বনের গাছ কেটে ঘর নির্মাণের বিষয়ে অবগত আছেন বন কর্মকর্তারা। রহস্যজনক কারণে তারা অভিযান চালায়না। এ কারণে দখলবাজরা আরো বেপরোয় হয়ে ওঠেছেন। মাসখানেক আগে সেগুনবাগিছা এলাকায় অবৈধ বসতি উচ্ছেদ করতে গিয়ে এক ফরেস্টগার্ড আহত হয়।
জানতে চাইলে ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা কাজী মোকাম্মেল কবির জানান, বেশ কিছু দিন আগে কয়েকটি অবৈধ ঘর উচ্ছেদ করা হয়েছিল। নতুন করে বসতি নির্মাণের বিষয়ে তাদের জানা নেই। এ সময় দখলবাজদের সঙ্গে তাদের আঁতাতের অভিযোগ অস্বীকার করেন।
কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা কেরামত আলী মল্লিক জানান, এরকম কোন অভিযোগ তাদের কাছে আসেনি। এরপরও খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

পাঠকের মতামত: