নিজস্ব প্রতিবেদক ::
আগামী ৩০ মার্চ, শুক্রবার। কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরির শহীদ দৌলত ময়দানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে “কক্সবাজার লোকজ উৎসব- ১৪২৪। কক্সবাজার লোকজ উৎসব উদযাপন পরিষদের ব্যানারে কয়েকজন সংস্কৃতিবান তরুণ সমন্বয় করছে এই উৎসবের।
আড়ম্বরপূর্ণ এই আয়োজনে গান করবেন কক্সবাজারের প্রান্তিক এলাকার শিল্পীরা। এছাড়া চট্টগ্রামের জনপ্রিয় শিল্পী শ্যাম সুন্দর বৈষ্ণবের ছেলে প্রেম সুন্দর বৈষ্ণবের সাথে গান করবেন কক্সবাজারের বুলবুল আক্তার। যিনি দেড় হাজারের অধিক গান করেছেন। থাকবেন উখিয়ার মাস্টার শাহ আলম। যিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতার পাশাপাশি কক্সবাজারের লোক সাহিত্য নিয়ে কাজ করেছেন। রচনা করেছেন কক্সবাজারের লোক সাহিত্যের বিভিন্ন মাধ্যম। প্রান্তিক এলাকার এমনি স্বজাত শিল্পীদের নিয়ে হবে একদিনের এই আয়োজন।
২৭ মার্চ মঙ্গলবার বিকেলে কক্সবাজার প্রেস ক্লাব সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানান কক্সবাজার লোকজ উৎসব উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উৎসব উদযাপন পরিষদের সমন্বয়ক রিদুয়ান আলী। বক্তব্য রাখেন সমন্বয়ক তৌফিকুল ইসলাম লিপু, ফয়সাল মাহমুদ সাকিব, মনির মোবারক ও সৌরভ দাশ।
সংবাদ সম্মেলনে সমন্বয়করা জানান, স্থানীয় অঁলা, পুঁতি, আইল্লাগীত, বান্ডা সহ স্থানীয় মানুষের যাপিত জীবন নিয়ে রচিত বিভিন্ন আঞ্চলিক গান পরিবেশীত উৎসবে পরিবেশীত। থাকবে স্থানীয় রাখাইন জনগোষ্ঠীর নৃত্য। উৎসবের অংশ হিসেবে কক্সবাজারের লোক শিল্পীদের নিয়ে তৈরি করা হয়েছে একটা প্রামাণ্য চিত্র। যা উৎসবের দিন মোড়ক উন্মোচন ও পরিবেশন হবে।
কক্সবাজার অঞ্চলের বিশিষ্ট গীতিকার আহম্মদ বশিরের লেখা ‘হক্সবাজার দইজ্জার চর’ গানে পরিবেশনের মধ্য দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করবেন জেলার প্রবীণ শিল্পীরা। যারা সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ত্যাগ করেছেনে নিজেদের জীবনের সবচেয়ে বেশি সময়। সাথে থাকবে স্থানীয় নৃত্য শিল্পীদের পরিবেশনায় উদ্বোধনী নৃত্য।
উৎসবে প্রধান অতিথি থাকবেন নবাগত জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। গানের পর্ব ছাড়াও অনুষ্ঠিত হবে সমাজ, সংস্কৃতি বিষয়ক আলোচনা। এতে মূখ্য আলোচক হিসেবে থাকবেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বিশিষ্ট নৃবিজ্ঞানী ড. রাহমান নাসির।
প্রথমবারের মতো আয়োজন করা কক্সবাজার লোকজ উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে ‘আইচ্চা পাগল মনরে দিন গেলে তুই ঘরত বই বই হান্দিবি’, ‘ও কালা চাঁন গলার মালা পেট পুরেদ্দে তোয়ারলাই’ গানের রচয়িতা এবং মরমী শিল্পী আমান উল্লাহকে গায়েনকে।
আকাশ সংস্কৃতির আগ্রাসান আর প্রলোভনের যুগে দেশীয় সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখতেই এই আয়োজন বলে জানান আয়োজকেরা। সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকরা আরো জানান, দেশে অনেকে বিদেশ থেকে ভিন্ন ভাষাভাষী শিল্পী এনে হাজার হাজার টাকার টিকেট বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে, অথচ এদেশের শিল্পীরা, আমাদের সংস্কৃতি, নাচ-গান, এতিহ্য চরমভাবে উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।
পাঠকের মতামত: