কক্সবাজার দেশের অন্যতম সম্ভাবনাময়ী জনপদ। সরকারের অনেক উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা শুধু কক্সবাজার কেন্দ্রিক। জনসংখ্যা, অর্থ-সম্পদ কোনটির অভাব এখানে নেই। অভাব শুধু সঠিক নেতৃত্বের। পর্যটন শহরের উন্নয়নে সব মেধা ও যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তি এক হয়ে কাজ করলে কক্সবাজার হবে একটি উন্নয়নের সিটি। পরিকল্পিত কক্সবাজার গড়ার লক্ষ্যে বৃহত্তর ঈদগাঁও সমিতি গঠিত হয়েছে।
কক্সবাজার পৌরসভায় অবস্থানরত ঈদগাঁওর ৬ ইউনিয়ন (ইসলামপুর, পোকখালী, ইসলামাবাদ, ঈদগাঁও, জালালাবাদ ও চৌফলদন্ডি) এর বাসিন্দাদের সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর ঈদগাঁও সমিতির ‘প্রথম সাধারণ সভায়’বক্তারা এমন অভিমত প্রকাশ করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন সমিতির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সাবেক এমপি লুৎফুর রহমান কাজল, কক্সবাজার সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যাপক মমতাজুল হক। অমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন কক্সবাজার সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি প্রফেসর এম.এ বারী, উপদেষ্টা তাহের কুতুবী, সহ-সভাপতি বাদল চন্দ্র বড়–য়া।
শনিবার (৪ মার্চ) সকাল ১০ টায় কক্সবাজার সাংস্কৃতিককেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি প্রবীণ শিক্ষাবিদ প্রফেসর জাফর আহমদ। সভাপতির আসন গ্রহণ বিষয়ে ধন্যবাদ প্রস্তাব পেশ করেন সমিতির প্রচার সম্পাদক ইমাম খাইর।
কক্সবাজার বদর মোকাম জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও সমিতির অন্যতম সদস্য হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ ইউনুছ ফরাজীর কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া ‘প্রথম সাধারণ সভায়’ দুই শতাধিক সদস্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ গ্রহণ করে।
সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম ও দপ্তর সম্পাদক মো: সরওয়ার রোমনের সঞ্চালনায় সভায় ত্রিমাসিক প্রতিবেদন পেশ করেন সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আবুল কালাম। বার্ষিক বাজেট (জানুয়ারী ২০১৭-ডিসেম্বর) পেশ করেন সহ-সভাপতি মোহাম্মদ তৈয়ব। আয়-ব্যয়ের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন কোষাধ্যক্ষ বেলাল আহমদ। অনুমোদনের জন্য সদস্যদের উদ্দেশ্যে ‘খচড়া গঠনতন্ত্র’ উপস্থাপন করেন কৃষিবিদ আবুল কালাম। দীর্ঘ আলোচনা-পর্যালোচনা শেষে সবার কণ্ঠভোটে গঠনতন্ত্র পাশ হয়। সবশেষে ৬ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ ও ২১ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠনের খচড়া প্রস্তাব করেন প্রফেসর জাফর আহমদ। সবার সম্মতিতে আগামী দুই বছরের জন্য বৃহত্তর ঈদগাঁও সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটি পাশ হয়।
কমিটি নি¤œরূপ: সভাপতি প্রফেসর জাফর আহমদ, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ তৈয়ব ও ইঞ্জিনিয়ার ছৈয়দ নূর ফরাজী, সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আবুল কালাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সরওয়ার কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ বেলাল আহমদ, যুগ্ম-কোষাধ্যক্ষ কায়চার ইদ্রিছ, দপ্তর সম্পাদক সরওয়ার রোমন, প্রচার সম্পাদক ইমাম খাইর, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, সমাজ কল্যাণ ও পাঠাগার সম্পাদক মনজুর আলম, কার্যনির্বাহী সদস্য ঈদগাহ ফরিদ আহমদ কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ওমর ফারুক, নুরুল আজিম ফরাজী, মো. হুমায়ুন কবির হেলালী, হাজী মোহাম্মদ কালু, আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম, আবদুল কাইয়ুম, শফিকুর রহমান, নুরুল আবছার সিকদার ও মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন। সভায় বক্তৃতা করেন কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সমিতির প্রভাবশালী সদস্য এডভোকেট সলিম উল্লাহ বাহাদুর, ইসলামপুর ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান মাস্টার আবদুল কাদের, এডভোকেট ছৈয়দুল হক, এডভোকেট মোহাম্মদ আকতার উদ্দিন হেলালী প্রমুখ।
সভাশেষে সভাপতির সমাপনি ভাষণে প্রফেসর জাফর আহমদ উপস্থিতির উদ্দেশ্যে বলেন, বৃহত্তর ঈদগাঁও সমিতি আপনার জন্য। এই সমিতি আপনার কল্যাণে, আপনার প্রয়োজনে। প্রফেসর জাফর বলেন, সবার গঠনমূলক পরামর্শ ও সহযোগিতা পেলে বৃহত্তর ঈদগাঁও সমিতি সারাদেশের অন্যতম একটি মডেল সমিতি হিসেবে পরিণত হবে। এ জন্য সবার আন্তরিকতা দরকার।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে নভেম্বর মাসে বৃহত্তর ঈদগাঁও সমিতি যাত্রা। ৬ ইউনিয়ন ইসলামপুর, পোকখালী, ইসলামাবাদ, ঈদগাঁও, জালালাবাদ ও চৌফলদন্ডির বাসিন্দারের মধ্য থেকে যারা কক্সবাজার পৌরসভায় বসবাস করছেন- মূলতঃ তারাই সমিতির সদস্যভূক্তির অধিকার রাখে। বৃহত্তর ঈদগাঁও এলাকার বাসিন্দাদের সুসংগঠিত করে কল্যাণমূলক কাজে সহযোগিতা করাই সমিতির কাজ। সমিতিটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ও বিভিন্ন পেশার লোকজন এতে সম্পৃক্ত রয়েছে।
পাঠকের মতামত: