ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

এবার আসছে না আশানুরূপ পর্যটক

শাহেদ মিজান :::bech
ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে কক্সবাজারে ‘এক ধাক্কা’ পর্যটকনের আগমণ বাড়ে। ঈদের ছুটিতে সারাদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক পর্যটক বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকতের নগরী কক্সবাজারে ছুটে আছেন। এতে অসময়েও কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসা অন্তত কয়েকদিনের জন্য হলেও ব্যাপক চাঙ্গা হয়ে উঠে। কিন্তু এবার ওই চিত্রের কিছুটা ব্যতিক্রম ঘটতে পারে- এমনটাই আশঙ্কা করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। রাঙামাটিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধস, অতিবৃষ্টি, বন্যাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পর্যটকেরা বেড়াতে আসছে না ধারণা করা হচ্ছে। তবে কিছু কিছু হোটেলে বুকিং একটু বেশি হয়েছে।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা তারা বলছেন, বিগত বছরগুলোতে ঈদের এক সপ্তাহে আগেই হোটেল-মোটেল ও গেষ্টহাউজের প্রায় ৮০ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়ে যেতো। কিন্তু এবার হয়েছে তার অর্ধেক। কিন্তু ব্যবসায়ীরা আরো বেশি প্রত্যাশা করেছিলেন। যা বুকিং হয়েছে তা আশানুরূপ হয়নি বলে জানা জানান তারা। এতে ব্যবসায়ীরা কিছুটা হতাশ হয়েছেন।
হোটেল-মোটেল গেষ্টহাউজ মালিক সমিতি সূত্রে জানা যায়, গড় হিসাবে হোটেল-মোটেল গেষ্টহাউজে গড় হিসেবে ৫০ভাগের নিচে কক্ষ বুকিং হয়েছে। ঈদের আগে আর কিছু হলেও তা ১০ ভাগের বেশি বাড়বে না। সব মিলে ৬০ ভাগের বেশি কক্ষ বুকিং হবে না।
তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইস’র জেনারেল ম্যানেজার সেলিম সালেক জানান, ওশান প্যারাডাইস-এ শনিবার মাত্র ৪২ ভাগ কক্ষ বুকিং হয়েছে। তবে তারা আশা করেছিলেন ঈদে অন্তত ৭০ভাগ কক্ষ বুকিং হবে। তা আদৌ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কেননা। বৃষ্টি, পরিবহন সঙ্কট ও ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে যোগাযোগের কারণে এবার ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটক কম আসতে পারে মনে করছেন এই হোটেল কর্মকর্তা।
তবে হোটেল কক্স টুডে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন ভিন্ন কথা। তারা জানিয়েছেন এই তারকা হোটেলে প্রত্যাশা মতো কক্ষ বুকিং হয়েছে। হোটেলের সহকারী ব্যবস্থাপক অং জানান, শনিবার পর্যন্ত হোটেল কক্স টুডে’তে ৬০ ভাগ কক্ষ বুকিং হয়েছে। আরো বুকিং হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
হোটেল-মোটেল গেষ্টহাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান, রাঙামাটিতে ১১০ জনের অধিকসহ সারাদেশে পাহাড় ধসসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেড়শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। এছাড়াও বন্যায় কবলিত হয়ে অনেক স্থানে মানুষের বিপর্যয় চলছে। এছাড়াও অতিবৃষ্টিপাতের কারণে দেশে বিভিন্ন স্থানে সড়ক যোগাযোগ বেহাল হয়ে পড়েছে। এতে গণপরিবহনে ভোগান্তি অনেক বেড়েছে। এইসব কারণে অনেক পর্যটক ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বেড়াতে আসতে পারছে না।
হোটেল-মোটেল গেষ্টহাউজ ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদ উপলক্ষ্যে প্রতিটি হোটেল-মোটেল গেষ্টহাউজে নতুন সাজে সাজানো হয়েছে। পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ সামগ্রিকভাবে বেশি আর কম প্রতি হোটেল-মোটেল গেষ্টহাউজকে সাজানো হয়েছে।
কলাতলীর স্বপ্নবিলাস হলিডে সুইটস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফুর রহমান বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষ্যে প্রতিটি হোটেল-মোটেল গেষ্টহাউজ সাজানো হয়েছে। একই সাথে বুকিংসহ নানা ক্ষেত্রে নানা সুবিধা অফার করা হয়েছে।’
হোটেল-মোটেল গেষ্টহাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘পর্যটনের খন্ড মৌসুমের মধ্যে ঈদুল ফিতর একটি বৃহৎ অংশ। এই সময়টায় ব্যবসায়ীরা অনেক আশায় থাকেন। বিগত কয়েক বছরে ঈদুল ফিতরের ছুটিতে ব্যবসা মোটামুটি ভালো গেছে। কিন্তু এবার তার তুলনায় অনেক কম থাকবে। সে কারণে হোটেল ব্যবসায়ীসহ অন্যান্য পর্যটন ব্যবসায়ীরা কিছুটা হতাশ।’
ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী বলেন, ‘ঈদে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত থাকবে। ট্যুরিস্ট পুলিশের ১২১ সদস্য টেকনাফ, ইনানী, হিমছড়ি ও কক্সাবাজার সমুদ্র সৈকতে নিয়োজিত থাকবে। লাবণী পয়েন্টে বীচবাইক নিয়ে স্পেশাল টিম, সিভিল টিম টহল থাকবে। এছাড়াও ওয়াচ টাওয়ার থেকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। ২৪ ঘণ্টা হটলাইন চালু থাকবে। ইতিমধ্যে হটলাইনের জরুরী নাম্বার সম্বলিত ব্যনার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সাটানো হয়েছে।

পাঠকের মতামত: