ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

উখিয়া রাজাপালং ইউনিয়নে দু’রাজনৈতিক পরিবারের মধ্যে নৌকা-ধানেরশীর্ষ মার্কায় লড়াই হবে

mail.google.comফারুক আহমদ, উখিয়া ::::

জনশ্র“তি রয়েছে ৩৬০পালং তার মধ্যে রাজাপালং। তাও আবার উখিয়া উপজেলা সদর ইউনিয়ন হচ্ছে রাজাপালং ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের যিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি প্রশাসনিক প্রাণকেন্দ্র উপজেলা পরিষদের সকল কর্মকান্ড ও কর্মসূচীতে সক্রিয়ভাবে সম্পৃত্ত হতে হয়। তাই সদর রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের গুরুত্ব অনেকাংশে মর্যদা বেশি। তবে বলা বাহুল্য যে স্বাধীনতার পর থেকে দুই রাজনৈতিক পরিবারের মধ্যে মূলত চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দিতা হয়। তৎ মধ্যে একটি পরিবার হচ্ছে সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীর পরিবার অপর পরিবার হচ্ছে সাবেক উপজেলার চেয়ারম্যান মরহুম নুরুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশ ঠান্ডা মিয়ার পরিবার। এবারও ইউপি নির্বাচনে তা ব্যতিক্রম হচ্ছে না। বরাবরের মতই আসন্ন ইউপি নির্বাচনে দুই প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের মধ্যে প্রতিদ্বন্দিতা হবে। এতে কোন সন্দেহ নেই।

সচেতন ভোটারগণ জানান, ২০১১ সালের জুন মাসে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশ ঠান্ডা মিয়ার ছোট ছেলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে অদ্যাবধি পর্যন্ত দায়িত্বপালন করছেন। পক্ষান্তরে ১৯৯০ সাল থেকে একটানা ২১ বছর অর্থাৎ ২০১১ সাল পর্যন্ত জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীর ছোট ভাই আলহাজ্ব শাহ কামাল চৌধুরী রাজাপালং সদর ইউনিয়নে চেয়ারম্যানের দায়িত্বপালন করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রকাশ, নির্বাচন কমিশনের তপশীল অনুযায়ী ৪ মে প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ দিন। সর্বশেষ দফা নির্বাচন ৪ জুন রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচন করবেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, বিরোধী দল বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ধানেরশীর্ষ মার্কা নির্বাচনে লড়বেন সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহ কামাল চৌধুরী। এছাড়াও মনোনয়ন প্রত্যাশীর মধ্যে উখিয়া যুবলীগের সভাপতি মুজিবুল হক আজাদ ও জাতীয় পার্টির মাসুদ রযেছে।

বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, ২০০৪ সালে উখিয়া কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক, ২০১২ সালে রাজাপালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সর্বশেষ ২০১৪ সালে উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগে কাউন্সিলারদের ভোটে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি বলেন, ২০১১ সালে রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচিত হয়ে বর্তমান সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়নের অংশ হিসাবে তার নিজ এলাকায় রাস্তা, ব্রীজ, কালভার্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে ব্যাপক উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছে। বিশেষ করে উখিয়া-টেকনাফ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আবদুর রহমান বদির সহযোগিতায় তিনি ইউনিয়নের অভুর্তপূর্ব উন্নয়ন এবং জনসেবা, ন্যায় বিচার নিশ্চিত ও নাগরিক সুযোগ সুবিধা, মানবসেবা প্রদানে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি অপর এক প্রশ্নের জবাবে আরো বলেন, আমার পরিবার হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবার। আমার পিতা মরহুম নুরুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশ ঠান্ডা মিয়া উখিয়ার জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। তারই সুযোগ্য সন্তান হিসাবে ইউনিয়ন বাসী আমাকে গ্রহণ করে গেল বার বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন। এবারও নৌকা মার্কার প্রতীক নিয়ে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে জয়ী হওয়ার দৃঢ় আশাবাদী তিনি।

সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহ কামাল চৌধুরী বলেন, আমার পিতা মরহুম আবুল কাশেম চৌধুরী স্বাধীনতার আগে ও পরে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বৃহত্তর রাজাপালং-পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। আমার বড় ভাই শাহজাহান চৌধুরী উখিয়া-টেকনাফ আসন হতে চার চার বার নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য। বর্তমানে জেলা বিএনপির সভাপতি। আমার মেজভাই এডভোকেট শাহজালাল চৌধুরী উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। আমার ছোট ভাই সরওয়ার জাহান চৌধুরী বর্তমানে উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। বলতে গেলে দক্ষিণ কক্সবাজারে আমার পরিবার এক বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক পরিবার হিসাবে পরিচিত। জন্ম থেকে আমরা রাজনীতি, মানবসেবা ও গণমানুষের পাশে রয়েছি। আমাদের ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ১৯৯০ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত একটানা চার চার বার রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দায়িত্বপালন করে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করেছি। সমাজসেবা ও মানবসেবা করার অবদানস্বরুপ স্বর্ণপদক সহ ফিলিপাইন, হংকক ও ব্যাংককে রাষ্ট্রীয় সফর করেন। এবারের নির্বাচনেও তিনি বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ধানেরশীর্ষ মার্কায় নির্বাচন করবেন। সুষ্ট ও অবাধ নির্বাচন হলে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন বলে তার প্রত্যশা।

সচেতন ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পুরো জেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মধ্যে রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন প্রশাসন থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহলের দৃষ্টি থাকে। কারণ দুই রাজনৈতিক পরিবারের মধ্যে প্রতিদ্বন্দিতা করে কে জয়ী হচ্ছে তা দেখার বিষয়। এবারেও সাবেক সংসদ শাহজাহান চৌধুরীর পরিবার ও সাবেক উপজেলার চেয়ারম্যান মরহুম নুরুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশ ঠান্ডা মিয়ার পরিবারের মধ্যে ধানেরশীর্ষ ও নৌকা প্রতীকের মধ্যে শক্ত প্রতিদ্বন্দিতা হবে এতে কোন সন্দেহ নেই।

পাঠকের মতামত: