উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির মধ্যে চুলচেড়া বিশ্লেষণ চলছে। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীর সংখ্যাও ততবৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে বিএনপি প্রার্থী একাধিক হওয়ায় বেশ বে-কায়দায় পড়েছে বিএনপির হাইকমান্ড। একক প্রার্থী হওয়ায় অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে আওয়ামীলীগ প্রার্থী।
পর্যটন স্পট খ্যাত ইনানী জালিয়াপালং ইউনিয়নে হওয়ায় জেলা ব্যাপী এ ইউনিয়নের কদর আলাদা। তাই যিনি চেয়ারম্যান হবেন, তার মর্যদা অন্যান্য ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের চেয়ে একটু বেশি। তাই এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে পড়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ ও বিরোধী দল বিএনপির প্রার্থীরা।
স্থানীয় ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সমুদ্র উপকূলীয় জালিয়াপালং ইউনিয়ন হচ্ছে বিএনপি সমর্থক ও ভোটার বেষ্ঠিত এলাকা। স্থানীয় নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচনে স্বাধীনতার পর থেকে বিএনপি সংখ্যা গরিষ্ট ভোট পেয়ে আসছে। তবে এবারের স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপির দখলে থাকা চেয়ারম্যান ভাগিয়ে আনার জন্য আওয়ামীলীগ আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বিএনপিও চেয়ারম্যান পদে ঠিকে থাকার জন্য মরিয়া।
জানা যায়, নির্বাচন কমিশনের তপশীল অনুযায়ী শেষ দফা অর্থাৎ ৪জুন জালিয়াপালং ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হচ্ছে বর্তমান চেয়ারম্যান আনোয়ার হোছাইন চৌধুরী, জালিয়াপালং উত্তর ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী ও দক্ষিণ ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি জহুর আলম চৌধুরী। আওয়ামীলীগের একক মনোনয়ন প্রত্যাশী হচ্ছেন জালিয়াপালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান এস.এম ছৈয়দ আলম।
সচেতন ভোটারা জানান, মনোনয়ন প্রত্যাশী একাধিক প্রার্থী থাকায় বিএনপি বেশ বে-কায়দায় পড়েছে। মনোনয়ন দিতে সঠিক সিদ্ধান্ত না হলে বিএনপির মধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে বিএনপির হাইকমান্ডকে বিচ্ছক্ষনতার পরিচয় দিতে হবে। নচেৎ বিএনপির ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত জালিয়াপালং ইউনিয়নে দীর্ঘদিনের চেয়ারম্যান পদটিও হারাতে পারে। অপর দিকে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান এস.এম ছৈয়দ আলম আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী হওয়ায় বেশ সুবিধা জনক অবস্থানে রয়েছে।
আওয়ামীলীগ মনোনয়ন প্রত্যাশী ও একক প্রার্থী এস.এম ছৈয়দ আলম জানান, ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান সভাপতি হওয়ায় ইউনিয়ন বাসীকে সেবা করে আসছেন। তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদে সাথে তার সুসম্পর্ক বেশি। এছাড়াও ২০০৩ সালে চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত হয়ে এলাকায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন সহ নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করেছিল। এছাড়াও তিনি ১৯৭৩ সালে উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সফল সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্বপালন করেন। উল্লেখ্য যে, ২০১৩ সালে কাউন্সিলারদের সরাসরি গোপন ভোটে জালিয়াপালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে পুরো আওয়ামীলীগ পরিবারে আলোচনায় আসেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রামে গঞ্জে ব্যাপক উন্নয়ন করায় এবারের ইউপি নির্বাচনে নৌকার প্রতীকে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তাই তিনি আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেলে জয়ের ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদী। উল্লেখ্য যে, ইউনিয়নের ৮টি ওয়ার্ডের ১৬ জন সভাপতি সাধারণ সম্পাদক ইতি মধ্যে যৌথ স্বাক্ষর করে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এস.এম ছৈয়দ আলম কে নৌকার প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দের নিকট দাবী জানিয়েছেন।
বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান চেয়ারম্যান আনোয়ার হ্ছোাইন চৌধুরী বলেন, ১৯৯৪ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত জালিয়াপালং ইউনিয়ন বিএনপির সফল সভাপতি হিসাবে দায়িত্বপালন করে এ ইউনিয়নকে বিএনপির ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত করেছি। এছাড়াও গত ২০১১ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির অনেক প্রার্থীকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে সফলতার সহিত দায়িত্ব পালন করেই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছি। তাই বিএনপি থেকে আমি মনোনয়ন পাওয়ার দাবীদার। উত্তর ইউনিয়নে বর্তমান সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী জানান, বিএনপির ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের একজন নিবেদিত সদস্য হিসাবে আমার নিজস্ব বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে। ২০০৩ সালে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় পুরো ইউনিয়নের জনগণের নিকট আমার গ্রহণ যোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা অনেকাংশে বেশি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস সে ক্ষেত্রে বিএনপির হাইকমান্ড ধানের শীর্ষ মার্কার প্রার্থী মনোনয়ন দিতে বিচ্ছক্ষনতার পরিচয় দিবে।
পাঠকের মতামত: