বৈশাখের ক্রান্তিলগ্নে এবং জৈষ্ঠের শুরুতে। এই মাঝামাঝি সময়টাকেই মধু মাস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই সময়টাতেই রসালো সব ধরনের ফলের আগমন ঘটে বাজারে। আম, লিচু, কাঁঠাল, এই তিন ফলই মধুমাসের প্রধান বিশেষত্ব। এক দিকে জৈষ্ঠের খরতাপ অন্যদিকে প্রাণ জুড়ানো ফলের সমারোহ। কিন্তু প্রাকৃতিক সেই সময়ের পূর্বেই বাজারে এখন মৌসুমি ফল কাঁঠালের আধিপত্য বেশ লক্ষ্য করা গেছে।
গতকাল সোমবার উখিয়ার হাটবাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিকট থেকে জানা যায়, সাতকানিয়া, নোয়াখালী, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উখিয়ায় আসতে শুরু করেছে মৌসুমি ফল কাঁঠাল। যদিও চড়া দাম, তবুও যেন দম নেই বেচাকেনায়। এরই মধ্যে উঠতে শুরু করেছে তরমুজও। কাঁঠালের রাজত্ব যে সব অঞ্চলকে ঘিরে, সেই সব অঞ্চল অপেক্ষায় রয়েছে মধুমাসের। জৈষ্ঠের শুরুতে এবং মাঝামাঝি সময়েই দেশ জুড়ে থাকবে সেই সব রসালো ফলের আনাগোনা। চৈত্রের বিদায় বেলাই যেন ক্লান্তি আর সুখের মিলনমেলা।
উখিয়ার সর্বত্রে এখন কাঁঠাল দেখা পাওয়া যায়। বিক্রেতারা বলছেন বাজারে উখিয়ার হাটবাজার গুলোতে কাঁঠালের চাহিদা বেশি থাকায় পূর্বেই দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে কিছু কিছু মৌসুমি ব্যবসায়ী এসব কাঁঠাল গুলো নিয়ে আসে উখিয়াতে। বিশেষ কক্সবাজারের অন্যান্য উপজেলার তুলনায় বর্তমানে কাঁঠালের প্রবেশ উখিয়াতেই বেশ বেড়েছে বলেও জানান ব্যবসায়ীরা।
উখিয়া হাটবাজারের এক ব্যবসায়ী আলী আহাম্মদের নিকট মৌসুমি ফলের বাজার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১২ মাসই এখানে একটার পর একটা ফল আসে, পাইকারি বেচাকেনা হয়। তবে গরমের সময় একটু বেশি থাকে। কয়েকদিন ধরে মৌসুমি ফল উঠতেছে, এখন যেমন ধরেন কাঁঠালের এবং তরমুজের চাহিদা একটু বেশি। তাই অনেক আকর্ষণীয় সাঁজে ফলের পসরা নিয়ে বসেন তাঁরা। তবে এসব রসালো ফল বিক্রিতে কোন রকম বেগ পেতে হয় না তাদের। অতিরিক্ত চাহিদার ফলে, খুব সহজেই অতিরিক্ত লাভের অংক গুনেন তাঁরা। এমনই একজন ক্ষুদে ব্যবসায়ী নুর আহমদ, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে উখিয়াতে ফলের ব্যবসা করে আসছেন তিনি। মৌসুমের পূর্বেই তাঁর কাছে কাঁঠালের সমাহার। বিক্রি করছেন বড় সাইজের ৩৫০ থেকে ৪০০টাকা, মাঝারি ২৫০ থেকে ৩০০টাকা এবং ছোট সাইজের ১৫০ থেকে ২৫০টাকা পর্যন্ত। এই চড়া দামের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন তো কাঁঠালের মৌসুম না, এ জন্যে দামটা একটু বেশি। আর এসব কাঁঠালে নিয়ে আসতে আমাদের পরিবহন, ধোলাই খরচ অনেক বেশি। অপরদিকে দেখা গেছে স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত কিছু কিছু কাঁঠাল বাজারে উঠতে শুরু করেছে। যদিও বা মাস খানেকের মধ্যেই সর্বসাধারণের নাকের ডগাতেই থাকবে স্বাধে মধুময় এসব ফলের দাম। তবুও যেন তর সইছে না অনেকের। অতিরিক্ত দামেও প্রথম স্বাধ নিতে ব্যস্ত অনেকে। তবে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, দোকানের এখন মূল আকর্ষণ রসালো ঐসব ফল। নির্দিষ্ট দামে নয়, ক্রেতা বিক্রেতার সমঝোতাতেই বেচাকেনা হচ্ছে এসব ফল। এমনটাই লক্ষ্য করা গেছে বাজার গুলোতে।
উখিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত মৌসুমি ফল আম,কাঁঠাল,তরমুজ এখনো বাজারে আসেনি। তাই একটু দাম চড়া। যদি এখানকার উৎপাদিত ফল গুলো বাজারে আসে তাহলে সাধারণ মানুষের নাগালের ভিতরে বিক্রি হবে এসব ফল।
পাঠকের মতামত: