ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

ঈদগাঁওতে ৬ ছড়া খালের শাখা প্রশাখা মুমুষর্: দখলদারিত্ব হারিয়ে দিয়েছে অস্থিত্ব

sara kalসেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও (কক্সবাজার) প্রতিনিধি :::

দখল দারিত্বের কবলে পড়েছে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও নদীসহ আশ পাশের ৬ ছড়া-খাল। স্বেচ্চাচারিভাবে নদী তীরে দোকান পাঠ, কৃষি খামার এমনকি ঘর বাড়ী ও তোলা হয়েছে নদীর মধ্যে। পানির প্রবাহ হারিয়ে এ সমস্ত নদীর শাখা প্রশাখা মুমুর্ষ দশায় এবং দখলদারিত্ব নদীর অস্থিত্বকে আরেক দফা হারিয়ে দিয়েছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ঈদগাঁও নদীর ২শ কিলোমিটারেরও বেশি চর পানি শূন্য এলাকায় এখন দিব্যি বাড়ী ঘর তৈরি করে বসতী করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ঈদগাঁও বাজারের বাঁশঘাটা- বাঁশ বাজার, মুসলিম বাজারের দু’পাশের এলাকা একইভাবে ঈদগাঁও ভোমরিয়াঘোনা, বাসষ্টেশনস্থ ব্রীজের আশপাশ এলাকা,  পালপাড়া, রাবারড্যাম, লরাবাক, নাইক্ষ্যংদিয়া, পশ্চিম পোকখালী ও পূর্ব গোমাতলী ব্রীজ ঘাটের দু’তীরে স্থাপনা তৈরি করায় এক সময়ের খরস্রোতা ঈদগাঁও নদী পরিণত হয়েছে স্থরী স্থলভূমি হিসাবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহত্তর ঈদগাঁওর মাইজপাড়ার ভরাখাল, কালিরছড়া খাল, বোয়ালখালী- ইউছুপেরখীল খাল, ইসলামপুর ফুলছড়ি খালের দু’তীর এখন পুরোপুরি বেদখল। ঈদগাঁও নদী ও কালিরছড়া খালের কিছু কিছু জায়গায় বালু মহাল তৈরি করে পুরো নদীই দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালীরা।

সূত্রে জানা গেছে, ভূমিহীন অথবা ভূমিহীন সেজে প্রভাবশালীদের সহায়তায় নদীর কূলে ও চরে নারী পুরুষ দখলে মেতেছে। স্থানীয় রাজনৈতিক দাপটশালী ব্যক্তি ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার কথিত ভূমিহীনদের সাথে গোপন ও আর্থিক চুক্তিতে নদীর কূলে ও চরে তাদের বসিয়ে দিয়েছে। এ ব্যাপারে বসতী স্থাপনকারীরা জানান, তাদের কাছ থেকে এককালীন এমনকি মাসিক চুক্তিতে টাকা আদায় করা হয়েছে।

সূত্র মতে, কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তারা একই ভাবে আর্থিক সুবিধা নিয়ে নদীর কূল অথবা চরে বসতীর সুযোগ করে দিয়েছে। তাদেরকে নিয়মিত টাকা দেওয়া না হলে সময়-অসময়ে উচ্ছেদের হুমকি ও দেয়া হয় বলে জানান দখলদাররা। ঈদগাঁও নদীর চর সবটাই এখন দখলদারদের দখলে। এ নদীর বুকেই গড়ে উঠেছে পাড়া গ্রাম। এ ব্যাপারে সংশিষ্টদের তেমন কোন আইনগত ভূমিকা না থাকায় দখলদারিত্ব স্থায়ী হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে স্ব স্ব এলাকার জনপ্রতিনিধিরা তাদের ভোটের অংক হিসাব কষতে গিয়ে এসব দখলদারদেরকে উচ্ছেদের সহায়তা করা দূরে থাকুক তাদের বসতী কায়েমী করার চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে।

সরেজমিন ঈদগাঁও নদীর ২শ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উভয় তীরে নদীর চর ও নদী গর্ভের জায়গা দখল করে প্রভাবশালীরা মিল-কারখানা,মুরগির ফার্ম,বসতবাড়ী তৈরি করে বসবাস করছে। আবার ভূমিহীন সেজে স্থানীয় ভূমি অফিসকে ম্যানেজ করে নদী বক্ষের জায়গা সরকারের কাছ থেকে একসনা লীজ নিয়ে বছরের পর বছর বসবাস করছে। এসব অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও নদী শাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকার ব্যর্থ হওয়ার কারণেই মূলত ঈদগাঁওর ছোট বড় সকল খাল-ছড়া গুলো অস্থিত্ব সংকটে পড়েছে। নানামূখী অব্যবস্থাপনার কারণে পানি প্রবাহ হারানো ছড়া-খালগুলো এভাবে দখলে চলে যাচ্ছে।

অবৈধ দখলে চলে যাওয়া ছড়া-খাল উদ্ধারে সরকারের রাজস্ব বিভাগের তেমন কোন প্রচেষ্টা নেই। অচিরেই এসব ছড়া-খাল দখলমুক্ত করা না হলে কালের বিবর্তনে তা সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে এমন আশংকা স্থানীয়দের।

পাঠকের মতামত: