সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও ::::
রমজানের আগে নিত্যপণ্যের দাম এখন আকাশ ছোঁয়া। রমজান আসতে এখনও এক সপ্তাহের মত বাকি। বাজারে বাড়তি চাহিদা শুরু হয়নি এখনও, কিন্তু এরই মধ্যে বেড়ে গেছে এই মাসে বিক্রি বাড়ে এমন পণ্যগুলোর। এর কোনো যৌক্তির কারণ বলতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। সরকার ঘোষিত নজরদারির কোনো নমুনাও নেই কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও বাজারে।
গত সপ্তাহ ধরে বেড়েই চলছে চিনি, ভোজ্যতেল, ছোলার দাম। গত এক সপ্তাহে এরই মধ্যে পাইকারিতে প্রতিকেজি ছোলার দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৭ টাকা। সেই হিসেবে এখন কেজি প্রতি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৮ টাকায়। প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। ভালো মানের চিনি কিনতে হলে লাগবে ৭৪ টাকা। অপরদিকে ছোলা চিনির সাথে পাল্লা দিয়ে দাম বেড়েছে মসুরের ডালের। তবে দাম বাড়লেও বাজারে কোনো পণ্যের সংকট নেই। ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজানের চাহিদা মেটানোর মত পর্যাপ্ত আমদানি হয়েছে।
ঈদগাঁও বাজারের চিনি বিক্রেতা হোসেন বলেন, কয়েকদিন ধরে চিনির দাম বাড়তি থাকলেও দাম কমে গেসে। মনে হয় না রমজানের আগে আর চিনির দাম বাড়বে।
এদিকে খুচরা বাজারের চিত্র আরো খারাপ। রমজানের প্রতিটি পণ্যই প্রায় ২০ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। বাজারের দুইজন পাইকারি ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পণ্য নিয়ে রাজনীতি করাই দাম বৃদ্ধির মূল কারণ। প্রতিবছর আমদানি করা ছোলার মধ্যে কী পরিমাণ বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে, তা মনিটরিং করারও পরামর্শ দেন তাঁরা।
কেবল রমজান পন্য না, বাড়তি চালের দামও। চালের দাম দুই সপ্তাহ আগে এক দফা বাড়িয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। চলতি সপ্তাহে আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। স্থিতিশীল সবজি বাজারে কিছু সবজির দাম কমলেও ঢেড়শ,পটল,বরবটি,চিচিংগার মতো সবজি কেজি প্রতি ৫-১০টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে গ্রীস্ম শুরু হলে এই ঋতুর ফল বাজারে দেখা যাচ্ছে। তরমুজ,বাকী,বেল,কাঠাঁল বাজারে মিললেও এগুলো অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় সব ধরনের মাছের দাম তুলনামূলক ভাবে বেশি। সপ্তাহিক হাটের দিন বয়লার মুরগী বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ১৬৫-১৭০টাকায়। ১কেজি ওজনের দেশী মুরগী বিক্রি হয়েছে ২৮০-২৮৫ টাকায় আর ১কেজি ওজনের পাকিস্তানী মুরগী বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০টাকায়। চাহিদার সাথে পাল্লা দিয়ে আবারো বাড়তে শুরু করেছে ভোজ্যতেলের দাম। পাশাপাশি বেড়েছে বোতলজাত সয়াবিন তেলে দাম। তবে আগের মতো নির্ধারিত ধরে বিক্রি হচ্ছেনা খোলা সয়াবিন তেল। ঈদগাঁও বাজারের মাছের বাজারে দামের উত্তাপ আগের মতই রয়েছে। ক্রেতারা মাছের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে বলে অভিযোগ করছেন। আর মাছ বিক্রেতারা বলছেন সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে।
ঈদগাঁও বাজারের সদাই করতে আসা ইসলামপুর দক্ষিণ খাঁন ঘোনার মোস্তাক আহমদ জানান, দাম বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীরা এসব অজুহাত দিচ্ছে মাত্র। জালালাবাদ লরাবাগের ছৈয়দ জানান, সরকারের বাজার পর্যায়ে তদারকী ব্যবস্থা না থাকায় এ অবস্থা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দিন দিন সাধারণ মানুষ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে প্রতিনিয়ত বাজেট ফেল করছে। ফলে আয়ের সঙ্গে বাড়ছে ব্যায়ের খাত। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে সাধারণ মানুষ নিত্য পণ্যে ক্রয়ের সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করবে।
পাঠকের মতামত: