দীপন বিশ্বাস, কক্সবাজার :: আষাঢ়ের প্রথম বৃষ্টিতেই বেসামাল হয়ে পড়েছে পৌরশহর কক্সবাজারসহ জেলার নিম্নাঞ্চল। টানা ২দিনের প্রবল বর্ষণে পৌরশহর ও জেলার বিভিন্ন হাটবাজারসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কক্সবাজার শহরেই অন্তত ১০হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
বৃষ্টির পানিতে পৌর শহরের বিভিন্ন অলি-গলি ও বাসা বাড়িতে পানি ঢুকে জলমগ্ন হয়ে পড়ায় মানুষের দূর্ভোগের অন্ত নেই। এমনিতেই কক্সবাজার পৌর শহরের সব ক’টি ওয়ার্ডকে রেড জোন ঘোষণা করে চলছে লকডাউন। তার উপর বৃষ্টির পানি মানুষকে দূর্বিসহ করে তুলেছে। এর উপর অতি বৃষ্টিতে পাহাড় ধ্বসের আশংকা করছেন এলাকাবাসি।
কক্সবাজার ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ঘোনারপাড়া সমাজ কমিটির নেতা দুলাল দাশ চকরিয়া নিউজকে জানান, আষাঢ় মাস শুরুর দিন থেকেই শুরু হয়েছে মুসুলধারে বৃষ্টি। বৃষ্টিতে জনজীবন বিষন্ন করে তুলেছে। তার উপর সবদিকে নালার পানির সাথে রাস্তা বৃষ্টির পানি একাকার হয়ে গিয়েছে। যার ফলে দূষিত হয়ে পড়েছে পরিবেশ। ঘোনারপাড়ার অনেক মানুষ পাহাড়ে ঝুঁকিতে বসবাস করছে। অতি বৃষ্টির ফলে পাহাড় ধ্বসে তাদের জানমাল ক্ষতি হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
শহরের টেকপাড়া সমাজ কমিটির নেতা আবদুল গাফ্ফার চকরিয়া নিউজকে জানান, টেকপাড়াসহ পৌর শহরের বিভিন্নস্থানে পৌরসভা কতর্ৃক নালার উন্নয়ন কাজ চলছে। লকডাউনের কারনে তা মাঝপথে বন্ধ হয়ে যাওয়াতে বৃষ্টির পানি ঠিকমত নালা দিয়ে প্রবাহিত হতে পারছে না। যার ফলে রাস্তার উপরেই জমে থাকছে পানিগুলো। এর ফলে জলবদ্ধতা সৃষ্টির পাশাপাশি এলাকার পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়ছে। জন চলাচলে বেড়েছে নানা ভোগান্তি। যদি নালার উন্নয়ন কাজগুলো এক এক সড়কে করে সম্পন্ন করা হতো তাহলে এত দূর্ভোগ হতো না। এখন পৌর শহরের প্রায় নালা খুঁড়ে রাখা হয়েছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ১১ ঘন্টায় ২০৯ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। যা এই বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড। এছাড়াও গত ২৪ ঘন্টায় ২৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আশরাফুল আফসার চকরিয়া নিউজকে জানিয়েছেন, সকাল থেকে অতি বৃষ্টির ফলে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন সড়ক, নিম্নাঞ্চল সহ জেলার অনেক জায়গায় পানি জমে আছে। এছাড়া নদ-নদীতে জোয়ারের পানি বাড়ার ফলে পানি নামতে পারছেনা। জোয়ার কমে গেলে জলাবদ্ধতা কমে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করছেন।
তিনি জানিয়েছেন, ভারি বর্ষনের ফলে পাহাড় ধসের আশংকা রয়েছে। জেলা প্রশাসন বিষয়টি মনিটর করছে। পাহাড়ে ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। প্রয়োজনে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে কোন দূর্যোগ মোকাবেলায় সব ধরণের প্রস্তুুতি রয়েছে।
পাঠকের মতামত: