শীতের জীর্ণতা সরিয়ে ফুলে ফুলে সেজে ওঠেছে প্রকৃতি। গাছে গাছে নতুন পাতা, স্নিগ্ধ সবুজ কচি পাতার ধীর গতিতে বাতাসের সঙ্গে বয়ে চলা জানান দেয় নতুন কিছুর। শীতে খোলসে ঢুকে থাকা বন-বনানী অলৌকিক স্পর্শে জেগে উঠে। পলাশ, শিমুল গাছে লাগে আগুন রঙের খেলা। প্রকৃতিতে চলে মধুর বসন্তে সাজ সাজ রব। প্রকৃতি আজ দক্ষিণা দুয়ার খুলে দিয়েছে। সে দুয়ারে বইছে ফাগুনের হাওয়া। বসন্তের আগমনে পাতার আড়ালে-আবডালে লুকিয়ে থাকা বসন্তের দূত কোকিলের মধুর কুহু কুহু ডাক, ব্যাকুল করে তুলবে অনেক বিরহী অন্তর। ভ্রমরও করছে খেলা। গাছে গাছে পলাশ আর শিমুলের মেলা। আজ পহেলা ফাল্গুন।
ফাল্গুনের হাত ধরেই ঋতুরাজ বসন্তের আগমন। ঋতুরাজকে স্বাগত জানাতে প্রকৃতির আজ এতো বর্ণিল সাজ। বসন্তের এই আগমনে প্রকৃতির সঙ্গে তরুণ হৃদয়েও লেগেছে দোলা। সকল কুসংস্কারকে পেছনে ফেলে, বিভেদ ভুলে, নতুন কিছুর প্রত্যয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা নিয়ে বসন্তের উপস্থিতি। তাই কবির ভাষায়- ‘ফুল ফুটুক আর না-ই ফুটুক আজ বসন্ত’।
নবযৌবনের ঋতুকে বরণ করে নিতে ফাগুনের প্রথম প্রভাতেই শুরু হয়ে গেছে সে উৎসবের। রাজধানীর শাহবাগ, চারুকলা, টিএসসি, পাবলিক লাইব্রেরি আর উদ্যানে উদ্যানে নর-নারীর বাসন্তী সাজ মনে করিয়ে দিচ্ছে- ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক, আজ বসন্ত।
বসন্তের প্রথম সকালে বাসন্তী রং শাড়ি, কপালে টিপ, হাতে চুড়ি, পায়ে নুপুর, খোঁপায় ফুল জড়িয়ে বেরিয়ে পড়বে তরুণীর দল। পাঞ্জাবি, ফতুয়া পরা ছেলেরাও সঙ্গী হবে বসন্তবরণের বিভিন্ন আয়োজনে।
ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে ফুলে ফুলে ভরে গেছে বাংলার সবুজ প্রান্তর। কোকিলের ডাক যেনো মানুষের জীর্ণতা প্রস্তুত শ্যামল বাংলার গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে।
ফাগুনের প্রথম দিনে বসন্তের রঙ থাকবে বইমেলাতেও। ১৯৫২ সালে এমনই এক বসন্তের দিনে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ আরো অনেক ভাষা শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাঙালির রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা আদায় হয়েছিল। ঋতুরাজ বসন্ত ঘিরে বাংলাদেশের মানুষের যে আবেগ, তা পরশ বইমেলায়ও পড়ার অপেক্ষায় রয়েছেন প্রকাশকরা।
ফাগুনের প্রথম দিন মঙ্গলবার বিক্রি অন্যান্য দিনের চেয়ে ভালো হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করছেন। সেই সঙ্গে আগামীকাল বুধবার বিশ্ব ভালবাসা দিবসেও তার ধারাবাহিকতা থাকবে বলে মনে করছেন তারা।
পাঠকের মতামত: