কক্সবাজার প্রতিনিধি ::::
মা ইলিশ রক্ষায় প্রজনন মৌসুমে কক্সবাজারের বঙ্গোপসাগরসহ দেশের বিভিন্ন জেলার নদ-নদী এবং উপকূলে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে।
প্রধান প্রজনন মৌসুমে ‘মা-ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত কক্সবাজার সহ ২৭ জেলার ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাতে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। একই সঙ্গে দেশব্যাপী এই ২২ দিন ইলিশ আহরণ, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহণ, মজুদ ও বিনিময় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞা ১২ অক্টোবর থেকে আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
এদিকে, এরই মধ্যে মৎস্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলার টাস্কফোর্স সব মৎস্য আড়তে ও জেলে পাড়ায় মা ইলিশ রক্ষার জন্য সতর্ক করে ব্যানার সাটানো হয়েছে। এ বিষয়ে সচেতনতার জন্য মাইকিংও করা হয়েছে।
মৎস্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই ২২ দিন প্রজনন ক্ষেত্র ছাড়াও সারাদেশের মাছঘাট, মৎস্য আড়ত, হাটবাজার ও চেইনশপে ব্যাপক অভিযান চালানো হবে। এই কার্যক্রম বাস্তবায়নে মন্ত্রণালসহ মৎস্য অধিদফতর, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ, নৌপুলিশ, র্যাব, বিজিবিসহ সংশ্লিষ্ট জেলা-উপজেলা প্রশাসন একযোগে কাজ করবে।
মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে আরও জানায়, ইলিশের প্রধান প্রজননক্ষেত্র কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর কুতুবদিয়া থেকে গণ্ডামারা পয়েন্ট পর্যন্ত মোট ৭ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকার সীমানাসহ আরো ২৭ জেলায় ইলিশ শিকার বন্ধ থাকবে। এসব এলাকা হচ্ছে মিরসরাই উপজেলার শাহেরখালী থেকে হাইতকান্দি পয়েন্ট, ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার উত্তর তজুমদ্দিন থেকে পশ্চিম সৈয়দ আওলিয়া পয়েন্ট, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপালী পয়েন্ট।
এই কার্যক্রমের উদ্দেশ্য হচ্ছে, ইলিশ সারা বছর ডিম ছাড়লেও অক্টোবর মাসের (আশ্বিন-কার্তিক) বড় পূর্ণিমার সময় ইলিশের ভরা প্রজনন মৌসুম। এই মৌসুমে ৬০ শতাংশের বেশি মা ইলিশ ডিম ছেড়ে থাকে পাশাপাশি ইলিশধরা নিষিদ্ধ সংক্রান্ত সরকারি বিধির বাস্তবায়ন, ডিমওয়ালা ইলিশ মাছসহ সকল প্রকার মাছধরা বন্ধের মাধ্যমে ইলিশ রক্ষায় গণসচেতনতা সৃষ্টি, ইলিশ প্রজনন ক্ষেত্র সম্পর্কিত গবেষণা ও সমীক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও সংরক্ষণ, অবাধ প্রজননের মাধ্যমে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি করা।
ইলিশ শিকার নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ২৭টি জেলা হচ্ছে কক্সবাজার, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, শরীয়তপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা, মাদারীপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, খুলনা, কুষ্টিয়া ও রাজশাহী জেলার নদনদী।
পাঠকের মতামত: