উখিয়ায় ৩০টি অবৈধ করাত কলে দিন রাত চিরাই হচ্ছে সামাজিক বনায়নের মূল্যবান কাঠ। সংঘবদ্ধ কাঠ চোর সিন্ডিকেট বনবিভাগের কর্তা ব্যাক্তিদের ম্যানেজ করে বছরের পর বছর এসব অবৈধ করাত কল চালু রেখে সামাজিক বনায়নের অপূরনীয় ক্ষতি সাধন সহ বন বিভাগ ও পরিবেশের ভয়াবহ বিপর্যয় সৃষ্টি করে আসছে। কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সহ উর্ধ্বতন বন কর্মকর্তাগণ বিষয়টি অবগত থাকা সত্তে¡ও কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় বন বিভাগের এবং আইনের শাসনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল। এমনকি উপজেলার পালংখালীতে অবৈধ করাত কলে কাঠ চিরাই করতে গিয়ে ২০১৫ সালের ১ জুলাই আবদু সাত্তার নামে এক শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হলেও প্রশাসনের নজর কাড়েনি।
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উখিয়া উপজেলার ২ টি রেঞ্জ ও ১১ টি বন বিটের অধীনে সরকারী বনভূমি রয়েছে ৩৪ হাজার ৪ শত ৫০ একর। বর্তমানে এ বনভূমি শুণ্যের কোটায় চলে আসছে। দিনরাত নির্বিচারে পাহাড় নিধন, সৃজিত বাগানের গাছ কর্তন বেপরোয়া হওয়ার কারণে বনভূমি যেমন শুণ্যের কোটায় চলে আসছে তেমনি ভাবে অবৈধ করাত কলে কাঠ চিরাই কারণে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণের রাজস্ব। তাছাড়া এক সময় উখিয়ার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে হাজার হাজার কোটি টাকার মূল্যবান কাঠ ছিল। আশির দশকে এ বনাঞ্চল সারা দেশে মডেল হিসাবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। তৎসময়ে এ বনে বাঘ, ভালুক, হাতি, হরিণ, উলুক, হনোমান, বানর, বনমোরগ সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখপাখালি ও বন্য প্রাণীর আভাস স্থল ছিল। এখন তা কেবল সোনালী অতীত বললেই চলে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বনাঞ্চল নিধনের ক্ষেত্রে ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হচ্ছে, অবৈধ করাত কল। ব্যাঙ্গের ছাতার মত যত্রতত্র অবৈধ করাত কল গড়ে উঠায় সংঘবদ্ধ কাঠ চোরেরা সরকারের সংরক্ষিত বাগানের মূল্যবান গাছ কেটে করাত কলে সাইজ করে কক্সবাজার, রামু, চকরিয়া, চট্টগ্রাম, কুমিলা ও ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আনায়াসে নিয়ে যাচ্ছে। এমনকি বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি আমলাকর্তারা বদলীর নামে ভূঁয়া কাগজপত্র তৈরি করে বিভিন্ন চেক পয়েন্ট গুলোর দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চোখের ধোলু দিয়ে মূল্যবান ফার্ণিচার পাচার করে যাচ্ছে। উখিয়ার বনাঞ্চল থেকে প্রতিমাসে কমপক্ষে ৫ কোটি টাকারও অধিক মূল্যবান কাঠ অবৈধ করাত কলে চিরাই করে পাচার হয়ে থাকে।
১৯৮৭ সনে তৎকালীন সরকার লট নিলাম প্রথা বন্ধ করে দেয়ার পাশাপাশি এ উপজেলায় স’মিলের পারমিট সরবরাহ নিষিদ্ধ করে। উক্ত আইনকে অমান্য করে উখিয়ার টাইপালংয়ে ১টি, ফলিয়া পাড়ায় ৩টি হাজির পাড়ায় ২টি, মধুরছড়ায় ২টি, রতœা পালংয়ে ৩টি, রুমখাঁ বাজার পাড়ায় ১টি, রুমখাঁ ছাগলের বাজার রোডের মাথায় ১টি, মরিচ্যায় ২টি, গোয়ালিয়াপালংয়ে ১ টি, থাইংখালীতে ৩টি , কুতুপালংয়ে ২টি, পালংখালীতে ২টি ও খুনিয়াপালংয়ে ৩টি, সোনাইছড়িতে ১টি, সোনারপাড়া বাজারে ২টি, চোয়াংখালীতে ১টিসহ মোট ৩০টি অবৈধ করাত কল গড়ে ওঠে। যা বনবিভাগ ও প্রশাসনের চোখকে বৃদ্ধাগুলি দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। ফলে বনভূমি যেভাবে ধ্বংস হচ্ছে তেমনি ভাবে পরিবেশের বিপযর্য়ের আশংকা দেখা দিয়েছে চরম আকারে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছত্র ছায়ায় থাকা কতিপয় বনদস্যু ও রাষ্ট্রদ্রোহী লোক এসব অবৈধ করাত কলের অ-ঘোষিত মালিক বলে জানা গেছে। গুরুতর অভিযোগ উঠেছে কতিপয় দুর্নীতি বাজ বন কর্মকর্তাদেরকে ম্যানেজ করে উক্ত অবৈধ করাত কল গুলো স্থাপন করা হয়েছে। পরিবশবাদী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা জানিয়েছেন, অবৈধ করাত কলের ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করে মুিষ্টমেয় কিছু লোক লাভবান হলেও বিরাট জনগোষ্ঠী তথা পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছেই বেশী । জনস্বার্থ এবং সরকারী সম্পদ রক্ষার স্বার্থে অভিলম্বে এসব অবৈধ করাত কল উচ্ছেদ করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। অন্যতায় উখিয়ার বনাঞ্চল শ্মশান ভূমিতে পরিণত হয়ে যাবে। উখিয়া রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক(এসিএফ) সারওয়ার আলম জানান, জনবল সংকট ও অভিযান পরিচালনার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট না থাকার কারণে উল্লেখিত করাত কলের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না বলে প্রতিবেদককে অবহিত করেন।
প্রকাশ:
২০১৬-০২-০৪ ০৩:১৩:৫১
আপডেট:২০১৬-০২-০৪ ১৫:০৯:৪৪
- ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে বন্যপ্রাণী শিকার করতে গিয়ে বন্দুক রেখে পালালো ২ জন
- প্রশাসনকে সকল দলের প্রতি বৈষম্যহীন আচরণ করতে হবে
- চকরিয়ার এক ব্যক্তিকে বাঁশখালীতে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া গেছে
- চকরিয়ায় বনের জমিতে অবৈধ গরুর হাট, বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি
- মানিকপুর বেগম আয়েশা হক উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করলেন ইউএনও আতিকুর রহমান
- চকরিয়ার ঢেমুশিয়া জলমহালে লবণ পানি ঢুকিয়ে চিংড়ি চাষ
- খুটাখালীতে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান: জরিমানা, মেশিন আর পাইপ ধ্বংস
- কক্সবাজার প্রেসক্লাব থেকে পদত্যাগ করলেন রয়টার্সের সাংবাদিক মুহম্মদ নূরুল ইসলাম
- চকরিয়ায় হারবাংয়ে কৃষিজমি কেটে সাবাড়, নিরব প্রশাসন
- কক্সবাজার পৌর, সদর ও রামু উপজেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত, নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন
- চকরিয়ায় কলেজ ছাত্র জিহাদ হত্যা মামলার আসামীকে পিটিয়ে হত্যা, আহত ২
- চকরিয়ায় দুইদিন ব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলা শুরু
- চকরিয়ায় কলেজ ছাত্র জিহাদ হত্যা মামলার আসামীকে পিটিয়ে হত্যা, আহত ২
- কক্সবাজার প্রেসক্লাব থেকে পদত্যাগ করলেন রয়টার্সের সাংবাদিক মুহম্মদ নূরুল ইসলাম
- চকরিয়ার ঢেমুশিয়া জলমহালে লবণ পানি ঢুকিয়ে চিংড়ি চাষ
- কক্সবাজার পৌর, সদর ও রামু উপজেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত, নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন
- চকরিয়ায় বনের জমিতে অবৈধ গরুর হাট, বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি
- প্রশাসনকে সকল দলের প্রতি বৈষম্যহীন আচরণ করতে হবে
- চকরিয়ায় হারবাংয়ে কৃষিজমি কেটে সাবাড়, নিরব প্রশাসন
- খুটাখালীতে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান: জরিমানা, মেশিন আর পাইপ ধ্বংস
- মানিকপুর বেগম আয়েশা হক উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করলেন ইউএনও আতিকুর রহমান
- চকরিয়ার এক ব্যক্তিকে বাঁশখালীতে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া গেছে
পাঠকের মতামত: