ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪

১০ কোটি টাকার রাস্তা নির্মাণ কাজ চলছে যেনতেনভাবে

durnitiকক্সবাজার প্রতিনিধি :

কক্সবাজার খুরুশকুল চৌফলদন্ডি সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি আর কারচুপি হচ্ছে। নি¤œ মানের ইট বালু আর নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে রাস্তার কাজ করছে আর রাস্তার প্রসস্থকরণ প্রত্যেক জায়গায় সমান হচ্ছে না, এছাড়া ঠিকমত পানি না দিয়ে যেনতেনভাবে মাটি চাপা দিয়ে দায়সারাভাবে কাজ করছে ঠিকাদার। এতে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির সাথে সাথেই সব কাজ উঠে গিয়ে নষ্ট হয়ে যাবে বলে মনে করছে স্থানিয়রা। এদিকে কক্সবাজার সড়ক ও  জনপদ বিভাগের আওতায় ১০ কোটি ৪ লাখ টাকার এ কাজে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে, আর তা তদন্তপূর্বক দ্রুত ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসককে অভিযোগ দিয়েছে এলাকার সর্বস্থরের মানুষ।
খুরুশকুল এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত হয়েছি অনেক দিন পর খুরুশকুলের মানুষের আশা পূরণ হতে চলেছে। আমাদের দীর্ঘ দিনের দাবী ছিল খুরুশকুল প্রধান সড়কটি প্রসস্থ করে সময়োপযুগি করে গড়ে তোলা। সেই স্বপ্নপূরণ করে কক্সবাজার সড়ক জনপদ বিভাগ ২/৩ মাস আগে খুরশকুল চৌফলদন্ডি রাস্তা সংস্কার আর প্রশস্থকরন কাজ শুরু করে। কিন্তু আমরা হতাশ হয়েছি, কারন কাজ খুবই নি¤œমানের হচ্ছে। আমরা দেখছি মাটি কেটে সেখানে কিছু ইটের খোয়া দিয়ে সেই মাটি দিয়েই আবার ভরাট করা হচ্ছে। কিন্তু পরে জানতে পেরেছি রাস্তা প্রশস্থকরন কাজ হিসাবে রাস্তার উভয় পাশে আড়াই ফুটের মত মাটি কেটে পাথর দিয়ে সেখানে পানি দিয়ে ভাল ভাবে ভিজেয়ে রোলার দিয়ে শক্ত করে সেখানে নতুন মাটি দিয়ে তার পর ভরাট করতে হবে। প্রথমে আমরা বিষয়টি জানতে না পারলেও পরে জানতে পেরে কাজের বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তারা উল্টা আমাদের সরকারি কাজে বাধা দিয়ে দেওয়ার কারনে মামলার হুমকি দেয়। পরে আমরা সিডিউল নিয়ে তাদের দেখালে এখন তারা কাজের কিছুটা মান বাড়িয়েছে।
কুলিয়া পাড়া এলাকার নাজির হোসেন বলেন, কয়েক মাস ধরে রাস্তার কাজ চলছে অনেক মানুষ সেচ্ছায় রাস্তার কাজের জন্য জমি ছেড়ে দিয়েছে। শ্রমিকরা এতদিন কাজ করেছে মাটি কুড়ে কিছু ইটের খোয়া দিয়ে আবার তারাই ভরাট করে দিয়েছে কোন রোলার দিয়ে চাপ দেয় নি। পরে আমরা প্রতিবাদ করায় এখন একটি রোলার এনেছে তাই বেশির ভাগ সময় বিকল থাকে। মোট কথা ঠিকাদাররা খুবই নি¤œ মানের কাজ করছে। আবার কিছু জায়গায় মাটির গভীরতাও অনেক কম। মাটিও কালো সে মাটিও সেখানেও তারা সে সব মাটি দিয়ে তাৎক্ষণিক ভারট করে দেয়। আমাদের ধারনা সামনের বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি হলে এ কাজ সম্পূর্ণ উঠে যাবে। আর সব কিছু ভেস্তে যাবে। মূলত যত টুকু যানি ১০ কোটি টাকার বেশি এই কাজটি নিয়েছে কক্সবাজারের ২ জন ঠিকাদার তারা প্রভাবশালী হওয়ায় সব কিছু ম্যানেজ করে ফেলে। আর কোন কিছুই তারা তোয়াক্কা করে না।
খুরুশকুল রাস্তার পাড়া এলাকার জানে আলম বলেন, আমি কাজের মান নিয়ে দায়িত্বরত সুপারভাইজার সাইফুলের সাথে কথা বললে তিনি বলেন ঠিকাদরী কাজ এর চেয়ে ভাল হয় না। এখানে কাজ করে যা পাবে তার ২০% বেশি বিভিন্ন কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে দিতে হবে। তাছাড়া ঠিকাদার নিজেরাও অনেক সচেতন তারা কোন কিছু পাত্তা দেয় না। আপনাদের কোন অভিযোগ থাকলে সওজ অফিসে গিয়ে বলেন, তারা প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা নেবে। পরে এলাকার সাধারণ মানুষ জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে।
খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ফিরোজ আহাম্মদ ছিদ্দিকি বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ বার বার অভিযোগ করছে রাস্তার সংস্কার কাজ খুবই নি¤œ মানের হচ্ছে। আমি নিজেও বেশ কয়েক বার নির্মাণ শ্রমিকদের কাজের মান ঠিক রাখার জন্য বলেছি। কিন্তু আমার মনে হয় তারা গদবাধা কাজ করছে। আসলে অনেক দিন পর রাস্তা প্রসস্থ করন কাজ হচ্ছে এটা আমাদের সম্পদ সে হিসাবে ইউনিয়নের জনগণের কাছে আহবান থাকবে প্রতিটি পাড়া মহল্লায় স্থানিয় মানুষ যেন কাজ সিডিউল দেখে বুঝে নেওয়ার জন্য।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার আবুল কাশেম সিকদার আর বজল আহাম্মদের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করলেও সংযোগ পাওয়া যায় নি।
খুরুশকুল ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার আবদুর রহিম বলেন, কাজ কিছুটা নিম্নমানের হচ্ছে এটা সত্য। তবে শুধু অভিযোগ না করে কাজ উঠিয়ে নেওয়া এবং শেষ করা আমাদের দায়িত্ব সেটা সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়–য়া বলেন, খুরুশকুল চৌফলদন্ডি সড়ক ১১ কিলোমিটার প্রসস্থকরণ ছাড়াও ৩ টি কালভার্ট নির্মাণ কাজের জন্য ১০ কোটি ৪ লাখ টাকার বেশি প্রকল্প চলছে। কাজ আমরা নিয়মিত পরিদর্শন করছি। আমি ছাড়াও আরো কয়েক জন প্রকৌশলী দায়িত্বে আছে। আর এটা চলমান প্রক্রিয়া। তবে সাধারণ মানুষ যে কাজের মান যাচাই করছে এটা ভাল দিক। – See more at: http://www.dainikcoxsbazar.net/?p=80748#sthash.LNGaIy8p.dpuf

পাঠকের মতামত: