ঢাকা,মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪

হত্যাকা-গুলোকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈধতা দেয়া হচ্ছে : ইমরান

সি এন ডেস্ক:
গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারকে ফের হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। ঘটনাটি নিজের ফেসবুক পেজে লিখে জানান তিনি। এর আগেও একাধিকবার হত্যার হুমকি পান ডা. সরকার। উগ্রপন্থিদের ‘হিট লিস্ট’-এও রয়েছে তাঁর নাম। ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে ডা. সরকার বলেন, ‘‘হুমকি-ধামকি দিয়ে আমাকে থামানো যাবে, এটা ভাবাও অবান্তর। যে দেশে খুন-ধর্ষণেরই বিচার হয় না, সেদেশে হুমকি তেমন বড় কোনো ঘটনা নয়। তাই এবার আমি থানায় কোনো জিডি করিনি। পুলিশকেও জানাইনি কিছু। আমায় যখন প্রকাশ্যে হুমকি দেয়া হয়েছিল, তখন আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি। তাই এবার, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে না জানানোটা আমার এক ধরনের প্রতিবাদ। তবে দেশের এই পরিস্থিতিতে আমি মোটেও নিরাপদ বোধ করছি না। এর কারণ, বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোশকতা দেয়া হচ্ছে, হত্যাকা-গুলোকে রাষ্ট্রীয়ভাবেই বৈধতা দেয়া হচ্ছে। এই বৈধতার আড়ালে হত্যাকারীরা এতটাই হিংস্র হয়ে উঠেছে যে, কাউকে হত্যা করতে কুণ্ঠা বোধ করছে না।’
সাম্প্রতিক হত্যাকা-গুলোর বিচারের দাবি করায় এ ধরনের হুমকির মুখোমুখি হতে হচ্ছে বলে মনে করেন কিনা – এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘হ্যাঁ, তা তো অবশ্যই। খুন-ধর্ষণ-লুটপাটের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার পর থেকেই হুমকির মাত্রা বেড়ে গেছে। ক্ষমতাসীন অনেকে তো প্রকাশ্যেই হুমকি দিচ্ছেন এখন।’ এর আগে গত বছরের ১৬ অক্টোবর হুমকি পাওয়ার ডা. ইমরান এইচ সরকার ডয়চে ভেলেকে বলেছিলেন, হুমকির মিছিলের সঙ্গে মৃত্যুর মিছিলও দীর্ঘ হচ্ছে বাংলাদেশে। তাই পুলিশের সহায়তা নিচ্ছেন তিনি। ডা. সরকার বলেছিলেন, যে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁকে হুমকি দেয়া হয়েছে সেটির সঙ্গে ‘ইসলামিক স্টেট’-এর সম্পৃক্ততা রয়েছে। আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীটির বিভিন্ন পাতা এবং গ্রুপে সদস্যপদ রয়েছে অ্যাকাউন্টটির।
ইমরান মনে করেন, ‘‘উগ্রপন্থিদের দমনে সরকারের কঠোর উদ্যোগ নেয়ার সময় এসেছে। অন্যথায় বাংলাদেশে উগ্রবাদীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।’ ডা. ইমরান এইচ সরকারকে এমন সময় হুমকি দেয়া হলো, যখন ঠিক তার দু’দিন আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে গত ৬ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও মুক্তমনা লেখক নাজিম উদ্দিনকে হত্যা করা হয়। এই দু’টি হত্যাকা-ের সঙ্গে মিল রয়েছে। কারণ এঁরা দু’জনেই উগ্রবাদীদের বিরুদ্ধে লেখালেখি করতেন, কথা বলতেন। এখনও পর্যন্ত অবশ্য এই দুই হত্যাকা-ের কোনোটিরই কুলকিনারা করতে পারেনি পুলিশ। অধ্যাপক হত্যাকা-ে শুধুমাত্র সন্দেহভাজন একজন শিবির নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া আর কোনো অগ্রগতি নেই। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ১০ জন মুক্তমনা লেখককে হত্যা করেছে উগ্রবাদীরা। কিন্তু তদন্তের নামে সময়ক্ষেপণ ছাড়া আসল অপরাধী বা তাদের মদতদাতাদের কাউকেই ধরতে পারেনি পুলিশ।-ডিডাব্লিউ।

পাঠকের মতামত: