মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ
ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না পাওয়ায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের মাঝে বিদ্রোহের ধ্বনি শুনা যাচ্ছে। বিজয় সুনিশ্চিত করতে সবদিক বিবেচনা করে সম্ভাব্য প্রার্থী যাচাই সম্পন্ন করেছে দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ ও বিএনপি।
সরকার দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে ৭ ইউনিয়নে তৃণমুল পর্যায়ে বিচার বিশ্লেষণ শেষে নেতৃবৃন্দরা দলীয় মনোনয়নের বিষয়টি চুড়ান্ত করেছেন। দু’টি শীর্ষ রাজনৈতিক দল যে কোন সময়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিবেন। প্রাচীণতম গ্রামীণ সেবা প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন পরিষদে এই প্রথম জাতীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সাধ বা স্বপ্ন অনেকেরই রয়েছে। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাধ ও সাধ্যের বিষয়টি বিগত রাজনৈতিক কর্মকান্ডের মাপকাঠিতে বিবেচনা করছেন দলে শীর্ষ নেতারা।
এদিকে দলীয় মনোনয়ন পাবেনা এমন গুজবে আজিজনগর ইউনিয়নের সরকার দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী কয়েক জন ইতোমধ্যে না পাওয়ার হতাশা ব্যক্ত করেছে। গত কিছুদিন ধরে শুনা যাচ্ছে, আজিজনগর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার জন্য জসিম উদ্দিন কোম্পানী মনোনীত হয়েছেন। এখবর ছড়িয়ে পড়লে, মনোনয়ন প্রত্যাশী অন্যান্যরা ক্ষোভে ফুসে উঠেন।
আজিজনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল আহামদ, ইউপি আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী একরামুল হক বাবুল ও আওয়ামীলীগ নেতা আলহাজ্ব জসিম উদ্দিন একই সুর মিলিয়ে বলেন, আমরা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী হয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বীর বাহাদুরের আদর্শ ধারণ করে আসছি। দলের সিনিয়র নেতারা গনমানুষের মতামতকে পাশকেটে জনবিচ্ছিন্ন কাউকে দলীয় প্রতীকে মনোনয়ন দিলে মানুষ তাদেরকে ভোট দেবে কিনা জানি না।
নৌকা প্রতীক প্রত্যাশী আরেক সাবেক আজিজনগর চেয়ারম্যান আজম খাঁন জানান, তিনি শীর্ষ নেতাদের মাধ্যমে আশ্বস্থ হয়ে বিগত দিনধরে এলাকায় মানুষের সেবায় লাখ লাখ টাকা খরচ করে কাজ করেছি। গত মঙ্গলবার জসিম উদ্দিন কোম্পানী এলাকায় মোটর শোভাযাত্রা করে নিজেকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে জানান দিয়েছে। তবে বিদ্রোহের ধ্বনি উচ্চারিত হলেও কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হবেন না। নাম প্রকাশ না করা সত্ত্বে কয়েকজন নেতা বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি নুরুচ্ছপা মাস্টারকে নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নামতে পারে। দলীয় নীতি নির্ধারক সূত্রে জানা যায়, ২নং গজালিয়া ইউনিয়ন ব্যতিত বাকি ৬ ইউনিয়নে একাধিক নৌকা প্রতীক প্রাথী রয়েছে।
লামা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ ইসমাইল জানায়, ৭ইউনিয়ন থেকে সম্ভাব্য ১৯ জনের নামের তালিকা জেলায় পাঠানো হয়েছে। জেলা থেকে যাচাই বাছাই শেষে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে ফাইল গেছে। ৩য় দফা তফসিল ঘোষণার আগে কেন্দ্র থেকে আসা সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৭ ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।
পক্ষান্তরে, উপজেলা বিএনপি সভাপতি আমির হোসেন বলেন, বিএনপির সবকটি ইউনিয়নে ধানের শীষের প্রতীকের একক প্রার্থী মনোনয়ন চুড়ান্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলা নেতৃবৃন্দের কাছে তালিকা পৌঁেছছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন, ১নং গজালিয়া ইউনিয়নে ম্যংক্যাচিং চৌধুরী, ২নং লামা ইউনিয়ন রবিউল হোসেন ভুইয়া, ৩নং ফাঁসিয়াখালীতে বর্তমান চেয়ারম্যান জাকির হোসেন মজুমদার, ৪নং আজিজনগরে বর্তমান চেয়ারম্যান নাজেমুল ইসমলাম চৌধুরী, ৫নং সরই ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ ফরিদ উদ্দিন, ৬নং রুপসীপাড়াঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম ও ৭নং ফাইতং ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান শামসুল আলম।
পাঠকের মতামত: