বাংলাদেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গা গণনার জন্য যে শুমারি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার বলছে তার উদ্দেশ্য বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো।
বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বিবিসি বাংলার টেলিভিশন অনুষ্ঠান বিবিসি প্রবাহ অনুষ্ঠানে বলেছেন সরকার মনে করে যেসব রোহিঙ্গা মিয়ানমারের অধিবাসী আন্তর্জাতিক আইন kঅনুযায়ী তাদের সেখানেই ফিরে যাওয়া উচিত এবং এই শুমারির মূল লক্ষ্য তাদের প্রত্যাবাসন করা।
‘‘যারা মিয়ানমারের অধিবাসী তাদের সেদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া উচিত এবং সেখানে তাদের যে সম্পদ ও বাড়িঘর ছিল সেখানে ফিরে যাওয়া।’’
তিনি বলেন বিশেষ করে গত কয়েক বছরে মিয়ানমার সরকারে বড় পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু সরকার বা সরকার সমর্থকদের মানসিকতায় বড়ধরনের পরিবর্তন আসে নি।
‘‘বাংলাদেশ সরকার আশা করেছিল নির্বাচনের পর অং সান সূচী এসে গেলে তিনি অন্তত এদের ব্যাপারে সংবেদনশীল হবেন। তিনি মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেন- গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলেন । কিন্তু তারপরেও দেখা গেছে তিনি এব্যাপারে কোনো মন্তব্য করছেন না ।’’
মিঃ ইমাম বলেন মিয়ানমার সরকারের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে গেলে একটা আন্তর্জাতিক চাপ দরকার। তিনি বলেন বাংলাদেশ সরকার বিষয়টি তাই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে যেতে চায়।
তিনি বলেন বিষয়টিতে এখন আইওম এবং ইউএনএইচসিআর জড়িত রয়েছে। প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ বিষয়টি জাতিসংঘে নিয়ে যেতে পারে।
মিঃ ইমাম বলেন এরা কয়েকশ’ বছর ধরে মিয়ানমারের নাগরিক ছিল। হঠাৎ আইন করে মিয়ানমার এদের নাগরিকত্ব নিয়ে নিয়েছে, এরা ঘরবাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে, সম্পদ হারিয়ে, নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে চলে এসেছে।
তিনি বলেন মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে – বিশেষ করে ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ।
মিঃ ইমাম বলছেন তারা মিয়ানমার সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করবেন যে এই রোহিঙ্গারা উৎপাদনশীল জনগোষ্ঠি এবং তারা ফেরত গেলে মিয়ানমারের উপকারই হবে। তিনি বলছেন গত কয়েক বছর ধরেই মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে তারা পর্যায়ক্রমে আলোচনা চালাচ্ছেন।
তিনি বলেছেন চলতি মাসে শুরু হওয়া রোহিঙ্গা শুমারির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করা ।
মিঃ ইমাম স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দিয়ে তাদের স্থায়ীভাবে বাংলাদেশে থাকতে দেওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই।
পাঠকের মতামত: