ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

রোদ যত বাড়ছে তত মরছে সবজি ক্ষেত

নিজস্ব প্রতিনিধি ::1a82cfed5b50294e9ce42261772ffa56

হাজার হাজার কৃষকের কপাল পুড়েছে সাম্প্রতিক বর্ষিত অকাল বৃষ্টি। গত ৮ মার্চ থেকে এক সপ্তাহব্যাপী টানা বৃষ্টিতে এখানকার এসব কৃষকদের সব ধরনের চাষ পানিতে তলিয়ে যায়। বিশেষ করে সবজি চাষের অবস্থা হয় বেহাল। আর ১৪ মার্চ থেকে বৃষ্টি থেমে রোদ উঠলেও এখানকার কৃষকদের ভাগ্য বদলায় নি। বরং রোদ যত বাড়ছে এখানকার সবজি খেত ততই মরছে। যাতে করে ক্ষতির পরিমাণ দ্বিগুণ হয়েছে। কৃষকরা বলছেন এ পর্যন্ত কৃষি অফিসের কোন কর্মকর্তা তাদের এ অবস্থা দেখতে একবারও মাঠে আসে নি। এ কারণে তারা আরো হতাশ।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ৫ ইউনিয়নের অধিকাংশ জমিতে তামাক চাষ হলেও বাকি সামান্য জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। আর পার্শবর্তী রামু উপজেলার ১১ ইউনিয়নেও মাত্র ১০ শতাংশ জমিতে সবজি চাষ হয় অনুরূপভাবে। এসব খেতে যে সব সবজি চাষ হয়েছে সেগুলো হলো: টমেটো, সীম, তীত করলা, ভুট্টা, বেগুন, গোল আলো, মিষ্টি আলো, পেয়াজ, রসুন ও ঢেড়ঁসসহ হরেক রকম গ্রীষ্মকালীন সবজি। এই এলাকায় যা এককালের প্রধান অর্থকরী ফসল ছিল। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দৌছড়ি ইউনিয়নের কৃষক আবদুল্লাহ ও হাবিবুর রহমান জানান, এক সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টি তাদের সবজি খেতের চরম ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টির সময় কিছু ফসল মরতে শুরু করেছিল আর বাকি বৃষ্টি বন্ধের পর গত মঙ্গলবার থেকে রোদ উঠে। এ রোদ যতই বাড়ছে তাদের চাষের খেতগুলো ততই মরছে। যা ভাষায় প্রকাশের নয়। তারা আরো বলেন, বর্তমানে তাদের লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি হয়েছে শুধু এ কারণেই।

রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের জাংছড়ি গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মো. আয়াজ জানান, তার এক কানি টমেটো ও আরো এক কানি কাঁচা মরিচ ক্ষেত বৃষ্টি পরবর্তী রোদে মরে যাচ্ছে। গত সপ্তাহে বৃষ্টিতে পানি জমে সামান্য ক্ষতি হলেও গত মঙ্গলবার থেকে প্রখর রোদে তার এ সব চাষ আগুনে পুড়ার রূপ ধারণ করেছে রোদেই। এভাবেই নাইক্ষ্যংছড়ি ও রামু উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের হাজার হাজার কৃষকের করুণ অবস্থায় দিন কাটছে। এখানকার অধিকাংশ কৃষক জানান, তারা বর্তমানে মরেও বেঁচে আছেন কোন মতে। এ বিষয়ে রামু উপজেলার কৃষি কর্মকর্তাকে একাধিকবার মোবাইল ফোন করে পাওয়া না গেলেও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: মুনিরুজ্জামান জানান, বৃষ্টির পানিতে শেকড় বা গোড়া পঁচে গিয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ জনিত বিষয়। এ নিয়ে কাউকেও দোষারোপ করা যায় না। তবে তিনি তামাক চাষিদের উদ্দেশ্যে বলেন, তামাক চাষের চাইতে আরো বেশি লাভবান গ্রীষ্মকালীন ফসল রয়েছে। যা সহজ ব্যবস্থাপনায় এসব করা যেতে পারে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম সরওয়ার কামাল জানান, অকাল বৃষ্টিতে রবি শস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে । আর রোদ বাড়ার সাথে সাথে অনেক সবজি খেত মারা যাওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক।

এদিকে রামু উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজুল আলম কৃষি অফিসারদের মাঠে পরিদর্শন করা না করা বিষয়ে জানান, প্রত্যেক নাগরিক তার উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলে জনগণ উপকৃত হয়। গত ক’দিন আগে শেষ হওয়া টানা বৃষ্টিতে রবি শষ্যের ক্ষতির পর আবার রোদ। এ রোদে পুনরায় ফসলের ক্ষতির ব্যাপকতা বাড়ার বিষয়টি কষ্টের। তিনি আরো জানান, এ ধরনের কাজে কৃষি অফিস কী ভূমিকা রেখেছেন তা তিনি দেখবেন। কেননা সরকার কৃষকদের বিষয়ে খুবই আন্তরিক। এ বিষয়ে অবহেলা নয়।

পাঠকের মতামত: