ঢাকা,মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪

রামুতে সন্ত্রাসী কায়দায় সরকারি খাস ও মাদ্রাসার জমি দখল

রামু প্রতিনিধি ::
রামুতে সন্ত্রাসী কায়দায় মাদ্রাসার খতিয়ানভুক্ত ও সরকারি খাস জমি জবর দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নের হাফেজপাড়া এলাকায় এ জবর-দখলের ঘটনা ঘটেছে। জমি জবর দখলে বাঁধা দেয়ায় হামলার শিকার হয়েছেন দুই জন নারী।
রাজারকুল মারকাযুল উলুম ইসলামীয়া মাদ্রাসার (প্রস্তাবিত) পরিচালক ও জমিদাতা মাওলানা সিরাজুল মোস্তফা জানিয়েছেন- পাশর্^বর্তী চাকমারকুল ইউনিয়নের মৌজিমেরদ্বীপ এলাকার মৃত বদরুজ্জামানের ছেলে মোহাম্মদ আলম এবং দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের পূর্ব উমখালী গনি সওদাগরপাড়ার উম্মত আলীর ছেলে আবদুল মালেক ও আবু ছৈয়দের নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন মাদ্রাসার নামে দানকৃত জমি এবং পাশাপাশি থাকা সরকারি মূল্যবান খাস জমি জবরদখলের অপচেষ্টা চালিয়ে আসছিলো। তিনি ঢাকায় বিশ^ ইজতেমায় থাকার সুযোগে ভ‚মিদস্যু চক্রটি ভাড়াটে লোকজন নিয়ে গত ১৫ জানুয়ারি বিকালে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মাদ্রাসার খতিয়ানভুক্ত ও পাশর্^বর্তী খাস জমিতে পাকা খুঁটি ও শিকলের ঘেরাবেড়া দিতে শুরু করে। এসময় বাঁধা দেয়া জবর দখলকারিরা তাঁর মা নুরহাবা বেগম (৫০) ও বোন মনোয়ারা বেগম (২৭) লাটি-সোটা দিয়ে এবং শারীরিকভাবে মারধর করে। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
এ ঘটনার পর রবিবার, ২২ জানুয়ারি দুপুরে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা একই কায়দায় এ জমিতে দ্বিতীয় দফা হামলা চালিয়ে মাদ্রাসা ভবন নির্মাণের জন্য মুজদকরা নির্মাণসামগ্রীসহ জমিটিতে আরো ঘেরাবেড়া দিয়ে সেখানে একটি হাঙ্গামা ঘর নির্মাণ করে। জবর-দখল চলাকালে মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা সিরাজুল মোস্তফা পুলিশের সহায়তা চেয়ে ৯৯৯ এ কল করেন। এরই প্রেক্ষিতে দুপুরে রামু থানার এএসআই আশরাফুলের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যান। তবে এ নিয়ে কাউকে আটক করা হয়নি।
মাওলানা সিরাজুল মোস্তফা আরো জানান- নিজেদের পৈত্রিক ও ক্রয়সূত্রে প্রাপ্ত ৫ শতক জমি মারকাযুল উলুম ইসলামীয়া মাদ্রাসাকে রেজিষ্ট্রি দলিলমূলে দান করে। পরবর্তীতে জমিটি এ মাদ্রাসার নামে খতিয়ানভুক্ত হয়। কিন্তু হামলাকারি ভূমিদস্যু চক্রটি মাদ্রাসার খতিয়ানভুক্ত এবং পাশর্^বর্তী খাস জমি জবর দখলের উদ্দেশ্যে ৩ বছর ধরে তাদের হয়রানি করে আসছেন। এ নিয়ে রামু উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভ‚মি), রামু থানা প্রশাসন, রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ইউপি সদস্যের কাছে একাধিকার অভিযোগ দেন। এসব অভিযোগের একাধিকবার সালিশ বৈঠক হলেও জবর-দখলকারিরা এ জমির পক্ষে কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। কিন্তু উল্টো এসব বিচারের তোয়াক্কা না করে জবর-দখলের এ হীন প্রচেষ্টা শুরু করেছে।
রাজারকুল মারকাযুল উলুম ইসলামীয়া মাদ্রাসা (প্রস্তাবিত) পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও রাজারকুল আজিজুল উলুম মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মোহছেন শরীফ জানিয়েছেন- মাদ্রাসার নামে রেজিষ্ট্রিকৃত ৫ শতক জমিতে জবর-দখলের ঘটনা দুঃখজনক। প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব জমিতে লোভের বশবর্তী হয়ে এ ধরনের ঘটনা কাম্য নয়। এখানে কারও মালিকানা থাকলে জমি রয়েছে। সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে নিতে পারে। তিনি মাদ্রাসার জমিটি রক্ষায় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের আন্তরিক হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তদন্তকারি কর্মকর্তা রামু থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) এমিলন বড়–য়া জানান- এখানে মাদ্রাসার জমি নিয়ে বিরোধ নিরসনে উভয় পক্ষকে নিয়ে সমাধানের জন্য বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে দুপক্ষ সার্ভেয়ার নিয়োগ করে পরিমাপ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি জানান- মাদ্রাসার জমি জবর-দখলমুক্ত করতে পুলিশ কাজ কাজ করছে।

পাঠকের মতামত: