ঢাকা,মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

রাত পেরুলেই চকরিয়া পৌরসভার নির্বাচন

110-300x141ছোটন কান্তি নাথ, চকরিয়া্ :::
রাত পোহালেই আগামীকাল রবিবার অনুষ্ঠিত হবে কক্সবাজারে চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচন। শেষপর্যন্ত নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে কী-না তা নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছেন অনেক প্রার্থী। মেয়র পদে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি প্রার্থীদের কর্মীদের মধ্যে গত তিনদিন ধরে তেমন কোন ঘটনা না ঘটলেও অশান্ত হয়ে উঠেছে পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্ধিতায় থাকায় আবুল কালামের পক্ষের লোকজন বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত বারোটার দিকে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে উপর্যপুরি ফাঁকা গুলি ছুঁড়লে এলাকায় ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশের একটি টিম ওই এলাকায় টহল জোরদার করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে ফাঁকা গুলি ছোড়ার ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। এদিকে ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করতে বাড়ানো হয়েছে আইন-শৃক্সক্ষলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা। গতকাল শুক্রবার রাত আটটায় প্রচারণা শেষ হওয়ার পর পরই ৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট’র নেতৃত্বে স্ট্রাইকিং ফোর্স মাঠে নামার তথ্য জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। .
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত বারোটার দিকে দুই নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল কালামের ছেলে হানিফ, সাইফুল, আরিফ ও জমিরের নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র লোক জালিয়া পাড়ায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে অস্ত্র প্রদর্শন করে। এ সময় তারা ভোটারদের হুমকি দেয় কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল কালামকে ছাড়া অন্য কাউকে ভোট দিলে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হবে। এ সময় প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী রেজাউল করিমের লোকজন এর প্রতিবাদ করলে তাদেরকে ধাওয়া দেয় আবুল কালামের লোকজন। এর পর থেমে থেমে ৬-৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
দুই নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী রেজাউল করিম অভিযোগ করেছেন, প্রতীক পাওয়ার পর থেকে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী আবুল কালাম তার কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে আসছে। সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়েও অস্ত্র প্রদর্শন করে হুমকি দিচ্ছে তাকে ভোট না দেওয়ার জন্য। একইভাবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে জালিয়া পাড়ায় নির্বাচনী উঠান বৈঠক করার সময় আবুল কালামের লোকজন হামলার চেষ্টা করে। এ সময় তার (রেজাউল) কর্মীদেরও ধাওয়া দেয়। এমনকি রাত বারোটার দিকে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে এলাকায় মহড়া দেয় এবং উপর্যপুরি ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। এই অবস্থায় দুই নম্বর ওয়ার্ডে দুটি ভোটকেন্দ্রে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহন অনুষ্ঠান নিয়ে যথেষ্ট শংকা দেখা দিয়েছে।
বক্তব্য নেওয়ার জন্য অভিযুক্ত কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল কালামের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুল আজম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে ফাঁকা গুলি ছোঁড়ার খবর পেয়ে পুলিশের একটি দলকে জালিয়াপাড়া এলাকায় পাঠানো হয়। এর পর থেকে আর গুলির শব্দ পাওয়া যায়নি। তবে কে বা কারা ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছে তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে।’
চকরিয়া থানার ওসি মো. জহিরুল ইসলাম খান বলেন, ‘দুই নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল কালামের জন্য ভোটের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট হতে দেওয়া যাবেনা। যে যত বড়ই সন্ত্রাসী হউক না কেন তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনের সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘১৮টি কেন্দ্রের সবকটি কেন্দ্রকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এজন্য আজ (গতকাল) সিদ্ধান্ত হয়েছে আইন-শৃক্সক্ষলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর জন্য। ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক প্রতিটি কেন্দ্রে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, আনসার সদস্য সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রাখার পাশাপাশি দুই প্লাটুন বিজিবি ও র‌্যাবের চারটি টিম আইন-শৃক্সক্ষলা নিয়ন্ত্রণে মাঠে নিয়োজিত করা হবে। আর ৬জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে স্ট্রাইকিং ফোর্সের নেতৃত্বে।’

পাঠকের মতামত: