ঢাকা,শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪

মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীর গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

টেকনাফ প্রতিনিধি ::b9b524896b3c6789a95511871e606342-TEKNAF

নাফ নদীতে মাছ ধরার সময় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির গুলিতে এক বাংলাদেশি জেলে নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরেকজন জেলে। আহত জেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাজিরপাড়ার ২ নম্বর স্লুইসগেট-সংলগ্ন নাফ নদীতে বাংলাদেশের জলসীমানায় এই ঘটনা ঘটে বলে অক্ষত এক জেলের ভাষ্য।

নিহত জেলের নাম নুরুল আমিন (২৬)। বাড়ি টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়ায়। বাবার নাম কবির আহমদ। আহত হয়েছেন একই এলাকার সোনা মিয়ার ছেলে মর্তুজা হোসেন (২৪)।

ঘটনায় অক্ষত থাকা জেলে নুর হাকিমের ভাষ্য, আজ সকালে নুরুল ও মর্তুজার সঙ্গে তিনি একটি নৌকায় করে নাফ নদীতে মাছ ধরতে যান। বাংলাদেশ জলসীমার নাজিরপাড়া পয়েন্ট-সংলগ্ন এলাকায় জাল ফেলে তাঁরা নৌকায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। সকাল সাড়ে আটটার দিকে মিয়ানমারের বিজিপির কয়েকজন সদস্য একটি স্পিডবোটে করে বাংলাদেশ জলসীমানায় ঢুকে পড়ে। তাঁরা নৌকা লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি ছোড়ে। এতে নুরুল ও মর্তুজা গুলিবিদ্ধ হন। তিনি (নুর হাকিম) নৌকায় শুয়ে পড়ে প্রাণ বাঁচান। বিজিপির সদস্যরা চলে গেলে নৌকা নিয়ে টেকনাফে আসেন। গুলিবিদ্ধ দুজনকে টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে নুরুলকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসা কর্মকর্তা।

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা শোভন দাশ বলেন, নুরুলের বুকে একটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। মর্তুজার পিঠে কয়েকটি গুলি লেগেছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) টেকনাফ সদর চৌকির সুবেদার মো. ইব্রাহীম বলেন, খবর পেয়ে তাঁরা টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। বিষয়টি দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান।

টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আবু জার আল জাহিদ প্রথম আলোকে বলেন, বিজিপির সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। তাদের ভাষ্য, বাংলাদেশি জেলেরা সীমান্ত অতিক্রম করেছিলেন। থামার সংকেত দিলে জেলেরা তা অমান্য করলে বিজিপি গুলি ছোড়ে।

টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক বলেন, চুক্তি অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি সীমান্তে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যায়। কিন্তু এভাবে গুলি করা সীমান্তচুক্তির পরিপন্থী। বিজিপি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করায় একটি প্রতিবাদলিপি পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

টেকনাফ মডেল থানার পুলিশের পরিদর্শক শফিউল আজম বলেন, ঘটনাটি তাঁরা শুনেছেন। নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

পাঠকের মতামত: