নিজস্ব সংবাদদাতা, চকরিয়া :::
মাতামুহুরী নদী। বর্ষা মৌসুমে মাতামুহুরী নদীর করাল গ্রাসে ল–ভ- হয়ে যায় ঘর-বাড়ি, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও জমি। আবার শুষ্ক মৌসুম আসলেই এই নদীতে বিভিন্ন ধরণের সবজি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে ঘর-বাড়ি হারানো মানুষগুলো। এবছরও মাতামুহুরীর চরে বাদামের বাম্পার ফলন হওয়ায় সম্ভাবনা দেখছেন চাষীরা। চরে লাগানো বাদাম পরিচর্যা করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। চলতি মৌসুমে বাদামের আশাতিত ফলন হওয়ায় কক্সবাজারের চকরিয়ার নদী কুলবর্তী কৃষকদের মাঝে মুখে হাসি ফুটেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক বছর আগেও নদী কূলবর্তী তীরে শুষ্ক মৌসুমে তামাকের চাষ করতো চাষীরা। কিন্ত বিগত দুই বছর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রশাসন নদীর চর বা সরকারি খাস জমিতে তামাক চাষ নিষিদ্ধ করে। ফলে, নদী তীরের চাষীরা তামাকের পরিবর্তে ভরাট চরে বিভিন্ন সবজি চাষের পাশাপাশি বাদাম চাষ শুরু করে। এবার বাদাম চাষে ফলন হয়েছে আশাতীত। বাজারে বাদামের ন্যায্যমূল্য পাওয়া যাচ্ছে। এতে কৃষক পরিবারে ফুটেছে হাসি। আগামীতে বাদাম চাষের ব্যাপকভাবে করতে উৎসাহিত হয়ে উঠছেন।
চকরিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্র জানা গেছে, চলতি বছর মাতামুহুরীর চরে ২০০ হেক্টর জমিতে চীনা বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে ২শ হেক্টর অধিক পরিমাণ জমিতে বিভিন্ন চীনা জাতের বাদাম চাষ করা হয়েছে। চরের বালুতে প্রতি হেক্টর জমিতে ১৫-১৮ মণ চীনা বাদাম হয়। আর প্রতিমণ কাঁচা চীনা বাদাম ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা দরে পাইকারিভাবে বিক্রি করা হয়।
এ বছর উপজেলার মাতামুহুরীর ব্রিজ পয়েন্ট, হাজিয়ান, কাকারা, সুরাজপুর-মানিকপুর, বমুবিলছড়ি, ফাঁসিয়াখালী চরে চীনা জাতের বাদামের চাষ করা হয়েছে। কোনো রোগ বালাই না থাকায় বাদামের গাছ নষ্ট হয়নি। তাই বাদামের ফলন অনেক ভালো হবে। প্রতি কেজি কাঁচা বাদাম পাইকারি দরে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করছেন চাষীরা।
হাজিয়ান এলাকার কৃষক আবদুল আজিজ জানান, এই বছর আবহাওয়া ভাল থাকায় বাদামের ফলন ভাল হয়েছে। মাতামুহুরীর চরে অন্য যেকোন চাষের চেয়ে বাদাম চাষ করলে বেশ লাভ করা যায়। তাই অন্যান্য বছরের মতো এবছরও বাদাম চাষ করে লাভবান হয়েছি। ফলন ভাল হওয়ায় টাকাও পাচ্ছি বেশি।
চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো.আতিক উল্লাহ বলেন, গতবছরের তুলনায় এ বছর বাদামের ফলন ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে, কৃষকরা বাদাম তোলা শুরু করেছেন। এতে চরাঞ্চলের হাজারো কৃষক পরিবারে ফিরে এসেছে হাসি।
পাঠকের মতামত: