ঢাকা,মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

মাতামুহুরীতে কল্পজাহাজ ভাসানো দেখতে হাজারো মানুষের ভীড়

chakaria-jahaj-vasaসোলতানা পারভিন, চকরিয়া:

সোমবার রাত ৮টা। হঠাৎ আলোকিত হয়ে উঠে মাতামুহুরী নদী। দু’তীরে হাজার হাজার নারী-পূরুষ ভীড় করে আছে। আলো ঝলমলে কৃত্রিম শাপলা ও কল্পজাহাজ ভাসানোর পাশাপাশি ফানুস উড়নোর রাখাইন সম্প্রদায়ের উৎসবকে ঘিরে বিভিন্ন ধর্মাবালম্বী মানুষের এ ভীড়। নদীর অন্তত ১০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে আলো ঝলমলে এ উৎসব উপভোগ করে লোকজন। এসময় রাখাইন সম্প্রদায়ের নারী-পূরুষরা নিজেদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী ধ্বনি-প্রতিধ্বনী তুলে।

বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন ঘিরে কক্সবাজারের চকরিয়ার মানিকপুরে এ আনন্দময় পরিবেশ ঘড়ে তুলে রাখাইন সম্প্রদায়।মানিকপুর ধর্ম বিজয় বিহারে সন্ধ্যায় আলোচনাসভা শেষে রাত ঘনিয়ে আসতেই ফানুস উড়ানো ও মাতামুহুরী নদীতে কল্পজাহাজ ভাসানো শুরু হয়। দ্বিতীয় পর্বের এ অনুষ্ঠান উদ্ভোধন করেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম। একই আদলে রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলার হারবাং, পৌরসভার মগবাজার রাখাইন পাড়া, বিনামারার বৌদ্ধ পল্লীতে প্রবারণা পূর্ণিমার উৎসব পালন করা হয়।

এর আগে মানিকপুর বৌদ্ধ প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন কমিটির সভাপতি মংহৃী রাখাইনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো.জহিরুল ইসলাম খান, চকরিয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এম.জাহেদ চৌধুরী, সুরাজপুর-মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান, কাকারা ইউপি চেয়ারম্যান শওকত ওসমান, অংহ্লা থোয়াই রাখাইন, উবাছেং রাখাইন, ছানা অং রাখাইন প্রমুখ। আলোচনা পর্ব শেষে রাখাইন তরুণীদের পাহাড়ি গানের তালে নৃত্যানুষ্ঠান উপভোগ করেন অতিথি ও দর্শকরা।

আলোচনা সভায় বক্তরা বলেন, আগামী প্রবারণা উৎসবের আগেই সরকারি বরাদ্দে রাখাইন পাড়ায় মাতামুহুরী নদীতে তৈরী করা হবে “প্রবারণা ঘাট”। মাতামুহুরীর ভরাট অংশ খনণের মাধ্যমে নদীর নিকটবর্তী বাসিন্দাদের বন্যার শংকামুক্ত করা হবে। তীর রক্ষায় ব্যবস্থা নিয়ে নদী ভাংগনের ঘ্রাস থেকে রক্ষা করা হবে নদী তীরের বাসিন্দাদের।

সভায় উপরোক্ত আশ্বাস ছাড়াও প্রধান অতিথি ইউএনও সাহেদুল ইসলাম বলেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার।এই শ্লোগান বাস্তবায়ন করতে আর্থিকসহ নানাভাবে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে অগ্রণী ভুমিকা রাখছে সরকার। প্রত্যেক ধর্মাবলম্বীদের উৎসব এখন অসম্প্রদায়িক উৎসবে রুপ পেয়েছে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে একাট্টা হওয়ায়।এছাড়া রাখাইন সম্প্রদায়ের শ্মশান নিয়ে সমস্যাও স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সমাধান করা হবে।

অনুষ্ঠান দেখতে আসা তরুন এরশাদুল হক নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, এবারেই প্রথম আমার প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব দেখা। এই উৎসব আমাকে নতুন শিক্ষা দিয়েছে। ধর্ম-বর্ণের উর্ধে উঠে সকল সম্প্রদায় একত্রিত হয়ে ফানুস উড়ানো ও জাহাজ ভাসা অনুষ্ঠানে নতুন বিনোদন পেয়েছি।

 

পাঠকের মতামত: