আগামী ২২ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কক্সবাজার জেলার মধ্যে ১৯টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। তৎমধ্যে মহেশখালীতে ৭টি। ইউনিয়ন পরিষদ গুলোর নির্বাচন প্রথম ধাপে হবার ঘোষনা আসার সাথে সাথে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান, মহিলা মেম্বার ও পুরুষ মেম্বার প্রার্থীদের দৌঁড়ঝাপ শুরু হয়ে গেছে। এমনকি কেউ মুখ না খুললেও এখন প্রকাশ্যে প্রার্থী হচ্ছে বলে বলিয়ে বেড়াচ্ছে পাশাপাশি দোয়াও চেয়ে নিচ্ছে। আওয়ামীলীগ থেকে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নৌকা প্রতিকের জন্য গত দু’দিন ধরে কক্সবাজার অবস্থান করছেন।
মহেশখালী উপজেলার মধ্যে মাতার বাড়ী ইউনিয়নটি বঙ্গোপসাগরের কুল ঘেষে অবস্থিত হলেও এই ইউনিয়নটি জেলায় টুঙ্গি পাড়া নামে পরিচিত একটি নাম। নির্বাচন কমিশন থেকে প্রথম ধাপ নির্বাচনে আগামী ২২ মার্চ মহেশখালী উপজেলার প্রায় সবকয়টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ঘোষনা আসার সাথে সাথে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নাম বিভিন্ন চায়ের দোকান, খেলার মাঠ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক অঙ্গনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নাম শুনা যাচ্ছে। ভোটারদের মুখ থেকে শুনা যাচ্ছে আওয়ামীলীগ থেকে মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ, বশির আহমদ মেম্বার, মাস্টার রুহুল আমিন, আলহাজ্ব জি.এম ছমি উদ্দিন, এনামুল হক রুহুল, এডভোকেট আবদুর রউফ, মোহাম্মদ কাউছার সিকদার, মাস্টার নুর বক্স এবং বি.এন.পি দলীয় প্রার্থী থেকে সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, শিল্পপতি রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ এস্তেফাজুল হক, যুবদল সভাপতি নুর নবী, নাছির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর, মিজবাহ সহ বিভিন্নজনের নাম। স্বতন্ত্র থেকে পুরান বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব বদর উদ্দিন। তবে ভোটাররা জানান, মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহকে দল থেকে প্রার্থী ঘোষনা করলে বিজয় হবার সম্ভাবনা যথেষ্ট বিদ্যমান। কিন্তু মাস্টার রুহুল আমিন উপজেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষনা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করলেও যুদ্ধা অপরাধীর দায়ে সদ্য মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীর ঘোষিত দল বাঘ মার্কা প্রতিক নিয়ে তার অতি নিকটতম আত্মীয় সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম মোস্তাক আহমদ সংসদ নির্বাচন করলে উক্ত প্রার্থীর পক্ষে গিয়ে বাঘ প্রতিকে ভোট চেয়েছিল আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীর বিপরীতে গিয়ে। এছাড়া সদ্য মাতার বাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫০ বছর ফুর্তি উপলক্ষ্যে প্রকাশিত চৌপাড়ে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে জনৈক এক লেখক ব্যাপক সমালোচনা করায় মাতার বাড়ীতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি উক্ত চৌপাড়ের ঐ লেখা সম্বলিত দু’টি পাতা জনগণের রোষানল থেকে বাঁচতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ছিড়ে ফেলেছে। ঐ বইয়ের সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন মাস্টার রুহুল আমিন। এছাড়া ২৩ কোটি টাকা লুটপাটের ঘটনায় দায়ের করা দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলাসহ কয়েকটি মামলায় যে ১৯ জনের নামে মামলা হয়েছে তৎমধ্যে মাস্টার রুহুল আমিনও একজন। এ কারনে তাকে নিয়ে মাতারবাড়ী রাজনৈতিক অঙ্গনে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এছাড়া বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এনামুল হক রুহুল আওয়ামীলীগ সমর্থিত হলেও বর্তমানে দায়িত্ব পালন করা কালীন এলাকার বিচার প্রার্থী, মুরুব্বীদের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরণ, মেম্বারদের সাথে মাসিক সভা না করাসহ বিভিন্ন দুর্নীতির কারণে উক্ত পরিষদের মেম্বাররা তাকে কয়েক বার অনাস্তাও দিয়েছিল। এসব এন্তাম অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আলহাজ্ব জিএম ছমি উদ্দিন আওয়ামীলীগের সভাপতি হলেও এলাকার নীরহ লোকজনের অত্যন্ত কাছের মানুষ এবং মানুষের সাথে সুন্দর ব্যবহার সহ দলীয় কর্মীদের এবং সাধারণ লোকজনের দুর্দিনে সাড়া দিয়ে মানুষের ভালোবাসা আদায় করতে সক্ষম হয়েছে। তাকে সকলেই সৎ , আদর্শবান ও ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি সকলের পরিচিত মুখ। এডভোকেট আবদুর রউফ মাতার বাড়ীর বাসিন্দা হলেও বর্তমানে কক্সবাজারে অবস্থান করে আইনজীবি পেশায় জড়িত রয়েছে। তবে উক্ত এডভোকেটের স্বভাব-চরিত্র ও বংশের ঐতিহ্য থাকায় এলাকায় তার বিরুদ্ধে সমালোচনা নেই। মাস্টার নুর বক্স একজন শান্তশিষ্ট ও ভদ্র একজন ব্যক্তি হওয়ায় এলাকায় তার বিরুদ্ধে সমালোচনা নেই। মোহাম্মদ কাউছার সিকদার এর গোষ্ঠীগত ও পরিবারের ঐতিহ্য রয়েছে এলাকায়। তিনি একজন শান্তশিষ্ট রাজনীতিবীদ ও ব্যবসায়ী। তিনি প্রার্থী হওয়ার জন্য কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন এখন থেকে। এমনকি বশির মেম্বারের আর্থিক স্বচ্ছলতা ও জনপ্রিয়তা বিভিন্ন এলাকায় থাকায় এ বার আওয়ামীলীগ থেকে প্রার্থী হওয়ার জন্য কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে। এ প্রতিনিধি বশির মেম্বারের সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, আওয়ামীলীগ থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান এনামুল হক রুহুলকে মনোনয়ন দিলে তিনি নিশ্চয় নির্বাচন করবেন। এছাড়া নৌকা প্রতীক এডভোকেট আবদুর রউফকে দিলে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাড়াবেন। তবে সাফ কথা, মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ জনগনের কাতারে থেকে আওয়ামীলীগ কর্মকান্ডে স্বচ্চ কাজ করায় সাধারণ লোকজনের মন জয় করতে পারায় মাতার বাড়ীর বিভিন্ন স্থানে তার সমর্থক রয়েছে। তবে গতকাল কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক একজন নেতার সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান- মাতারবাড়ী থেকে এড. আব্দু রউফ, জিএম ছমি উদ্দিন ও বর্তমান চেয়ারম্যান এনামূল হক রুহুল এর নাম কেন্দ্রে পাঠানোর জন্য লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। তবে এ সংবাদ মাতারবাড়ীর মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়লে অনেকে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জানান, নৌকার প্রতীক বর্তমান চেয়ারম্যানকে দিলে এই ইউনিয়ন থেকে নৌকার বিজয় হাত ছাড়া হয়ে যাবে। তবে, জিএম ছমি উদ্দিন ও মাষ্টার মোহাম্মদ উল্লাহকে নৌকার প্রতিক দিলে বি.এন.পি প্রার্থী নুরুল ইসলামের সাথে এ দু’জনের হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই হবে ।
পাঠকের মতামত: