নিউজ ডেস্ক ::::
অপরূপ সৌন্দের্যের এক লীলাভূমি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। এ সমুদ্রের উপকূল ঘেঁষে নির্মাণ করা হয়েছে কক্সবাজার আন্তর্জাতকি বিমানবন্দর। দৃষ্টি নন্দন এ বিমানবন্দটির সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পাবে সমুদ্র সৈকত ও সমুদ্রের কূল ঘেঁষে গড়ে ওঠার কারণে। উখিয়া নিউজ ডটকম। এটি হবে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আধুনিক বিমানবন্দর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যটন নগরী কক্সবাজারে সম্প্রতি সুপরিসর বোয়িং বিমান চলাচল উদ্বোধনের পর পর্যটন খাতে নতুন দিগন্তের সুচনা হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধাসহ আন্তর্জাতিক মানের এ বিমানবন্দরটি চালু হলে প্রতিদিন হাজার হাজার বিদেশী পর্যটক সরাসরি বিমান যোগে কক্সবাজার আসা যাওয়া করতে পারবে। এছাড়া বিমানবন্দরটি যে ধরনের মডেলে স্থাপন নির্মাণ করা হচ্রেছ তা হবে একটি আকর্ষণী ও দর্শনীয় গুরুত্বপুর্ণ বিমানবন্দর। বিশ্বের উন্নত মডেলের বিমানবন্দরগুলোর একটি অন্যতম সৌন্দর্য বিমানবন্দর হবে কক্সবাজার বিমানবন্দর।
কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আমিনুল হাসিব বলেন, সমুদ্রের কুল ঘেঁষে গড়ে তোলা আন্তর্জাতিকমানে বিমানবন্দর বিশ্বে খুবই কম। জাপানে অবশ্য এধরনের সমুদ্র তীরে বিমানবন্দ রয়েছে। তবে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি হবেউন্নত বিশের বিমানবন্দরগুলোর একটি অন্যতম মডেল।
প্রকৌশলী হাসিব বলেন, ২০১৮ সাল থেকেই এখানে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল শুর হবে, আমরা এমনটি আশা করছি। তবে বিমানবন্দরের পুরোপুরি কাজ শেষ হতে ২০২৫ সাল পর্যন্ত লাগতে পারে। ২০১৮ সালের পর থেকে শুরু হবে পরবর্তী পর্বের নির্মাণ কাজ। তিনি বলেন, এটি বিশ্বের অন্য কোন বিমানবন্দরের মডেলের সাথে মিল নেই, এটি সম্পুর্ণ আলাদা একটি মডেল। কক্সবাজার বিমানবন্দরটি ওপর থেকে ঝিনুক আকৃতির দেখা যাবে। পৃথিবীর কোথাও এধরনের মডেলের বিমানবন্দর নেই। এটি বাংলাদেশের একটি দর্শনীয় স্থান হবে। তিনি বলেন, এ বিমানবন্দর থেকে মাত্র দেড় ঘন্টায় চীনের কুনমিনং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের পর্যটন খাতকে সমৃদ্ধ করতে ও এই খাত থেকে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধিতে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করা ছিল পর্যটন নগরবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবী। অবশেষে সেই দাবি বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকতের উপকূল ঘেঁষে এ বিমানবন্দর নির্মাণ শেষে পুরো পর্যটন নগরীর সৌন্দর্য বেড়ে যাবে। দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক অপরূপ সুন্দরতম পর্যটন নগরী কক্সবাজার বিশ্বের পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠবে। তাছাড়া বিমান বন্দরের আলোকসজ্জার কারণে রাতের দৃশ্য হবে আরও আকর্ষণীয়। এর ফলে এখানে পর্যটকদের আগমন কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে। যা দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে।
পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সাথে আকাশ পথে সারা বিশ্বের যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে সরকার কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দরে রুপ দিতে যাচ্ছে। সিভিল এভিয়েশন ও সংশিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই বিমানবন্দর নির্মাণের ফলে দেশের পর্যটন খাত আরও সমৃদ্ধ হবে। এই খাত থেকে সরকারের আয় কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে। বাড়বে বিদেশী পর্যটকদের আগমন।উখিয়া নিউজ ডটকম
সিভিল এভিয়েশনের তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী শহীদুল আফরোজ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যান্য খাতে উন্নায়নের পাশাপাশি দেশের আকাশ পথের যোগাযোগ ব্যবস্থা, পর্যটন খাত ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটাতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করছেন। তিনি বলেন, দেশের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে সকল বাধা-বিঘœকে পেছনে ফেলে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করছে সরকার। ইতোমধ্যে কক্সবাজার বিমানবন্দরে বোয়িং কোম্পানীর সুপরিসর বিমান চলাচল শুরু করেছে। পাশাপাশি বিমানবন্দরের উন্নয়র কাজও দ্রæতগতিতে এগিয়ে চলেছে।
সিভিল এভিয়েশন সুত্র জানায়, ২০০৯ সালে ও ২০১২ সালে বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার পরিকল্পনা করলেও বিভিন্ন সমস্যায় তা বাস্তবায়ন হয়নি। ২০১৫ সালের ২ জুলাই ১১শ’ ৯৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে বিমানবন্দর উন্নয়নের কাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রকল্প অনুযায়ী বিমানবন্দরের রানওয়ে ৬ হাজার ৭৭৫ ফুট থেকে ৯ হাজার ফুট দীর্ঘ, এবং ১৫০ ফুট থেকে ২০০ ফুট চওড়া করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে ১৩ কোটি ৫০ লাখ ঘনমিটার ভূমি উন্নয়ন করা হচ্ছে। এছাড়া বিমান রানওয়ে থেকে টার্মিনালে আসার ১ লাখ ৯৭ হাজার টেক্সিওয়ে এবং রানওয়ের পিসিএন (পেভমেন্ট শক্তি বৃদ্ধিকরণ) বর্তমান ১৯ একক থেকে ৯০ তে উন্নীতকরণের কাজ করছে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। -সুত্র ইনকিলাব
পাঠকের মতামত: