ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

বিনোদন শূণ্য লামা

ওওওওওওমোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ

১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর বর্তমান সরকার প্রধান বঙ্গবন্ধু’র কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৩দশকের পার্বত্য সমস্যা শান্তি চুক্তি মধ্য দিয়ে সফল সমাপ্তির হয়। তারপর থেকে ব্যাপক উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে পাহাড়ি এলাকায়। প্রকৃতিক সৌন্দর্য্যরে অপার সম্ভাবনা থাকায় তিন পার্বত্য জেলাকে পর্যটন জোন হিসেবে ঘোষনা করা হয়। তবে পর্যটন শিল্পে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে জেলা কেন্দ্রীক। উন্নয়নের কর্ণধার ও সরকারের কর্তা ব্যাক্তিদের বৈষম্যমূলক উন্নয়নের কারণে পর্যটনের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও উপজেলা গুলো পিছিয়ে আছে। লামা উপজেলা তেমনি একটি উপজেলা। রয়েছে হাজার সম্ভাবনা নেই উদ্যোগ।

সবুজ স্নিগ্ধ বনানী ঘেরা নৈসর্গিক সৌন্দর্য ও বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর অরন্যরাণী লামা। ৬৭১.৮৪ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের মধ্যে নদী এলাকা ৭৮.১৭৩ বর্গ কিলোমিটার, সংরক্ষিত বনভূমি ৩৩২.৮২৭ বর্গ কিলোমিটার ও চাষাবাদযোগ্য ভূমির আয়তন ২৬০.৮৪৫ বর্গ কিলোমিটার। ২০১১ সালের আদমশুমারীর তথ্যমতে উপজেলার মোট জনসংখ্যা ১ লাখ ১৩ হাজার ৪১৩ জন। আর পরিবার ২২ হাজার ৪৪৭টি। ১৯২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর লামা থানা গঠিত হয়। ১৯৭০ সালের ৯ অক্টোবর আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি, বাঁইশারী ও গজালিয়াকে নিয়ে লামা মহকুমায় উন্নীত হয়। বর্তমানে এ উপজেলায় ১৮টি মৌজা, ৭টি ইউনিয়ন এবং ৪৪০টি পাড়া ও ৪৪০ জন কারবারী রয়েছে। বান্দরবান জেলার এক তৃতীয়াংশ মানুষের এ উপজেলায় বসবাস। এ কারনে জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে লামা উপজেলা গুরুপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

লামা উপজেলায় বিনোদন প্রেমীদের কথা ভেবে ২০০৪ সালে লামা পৌর শহরের অদূরে মিরিঞ্জা নামক পাহাড়ে নির্মাণ করা হয় পর্যটন মিরিঞ্জাটি। এক দশক না যেতেই প্রশাসনের অব্যবস্থাপনায় ও সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে পর্যটনটি। মাঝে মধ্যে নানান পদক্ষেপ নিলেও আলোর মূখ দেখেনি প্রকল্প গুলো। বর্তমানে পর্যটনটি নেশাগ্রস্থ বখাটে যুবকের আড্ডার নিরাপদ স্থান হিসেবে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। চলে পতিতাবৃত্তি সহ নানান অপকর্ম।

মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্সটি শহরের একটু দূরে হওয়ায় কোমলমতি শিশুদের কথা চিন্তা করে উপজেলা পরিষদের পিছনে তৈরি করা হয় লামা উপজেলার একমাত্র শিশুপার্ক। দোলনা, ঢেঁকিকল, সিলিপার, গোলঘর ও ফুলেল বাগান দিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে শুরু হয় পার্কটি। কয়েকবছর না যেতেই সংস্কারের অভাবে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়।

সরকারের উদ্যোগ থাকলে লামা উপজেলায় পর্যটন শিল্পে ভূমিকা রাখতে পারে এমন কয়েকটি দর্শনীয় স্থান যেমন, মাতামুহুরী নদীর অববাহিকতা, দুঃখ সুখের পাহাড়, দেড় শত বছরের পুরানো সাবেক বিলছড়ি বৌদ্ধ বিহার, ৬টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সহ পাহাড়ি বাঙ্গালীদের মধ্যে সম্পৃতির অন্যান্য দৃষ্টান্ত, পাহাড়ে গড়ে উঠা পরিকল্পিত বনায়ন।

পর্যটন শূণ্য লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের ‘কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে লামা উপজেলা বিনোদন প্রেমীদের পছন্দের একমাত্র স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। যদিও নিদিষ্ট দিন, উচ্চ পর্যায়ের সুপারিশ ও পূর্বানুমতি ছাড়া প্রবেশ করার সুযোগ নেই সেখানে।

লামা উপজেলার প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষের বিনোদনের কথা চিন্তা করে পূর্বের পর্যটন গুলো সংস্কার করে ও প্রস্তাবিত স্থান গুলো পর্যটন হিসেবে উন্নয়ন করার প্রাণের দাবীতে রুপ নিয়েছে লামাবাসির। এতে করে কক্সবাজার জেলা ও বান্দরবান জেলা সদরের মত লামা উপজেলাও পর্যটন শিল্পে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে সচেতন জনগণ ও সাধারণ মানুষ।

পাঠকের মতামত: