ঢাকা,বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ

আজ উদ্বোধন করবেন অতিরিক্ত ডিআইজি মোসলেহ্‌ উদ্দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::

কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারায় প্রকৃতির মনোরম পরিবেশে দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্ক তথা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক গড়ে তোলার পর থেকে পার্কের অভ্যন্তরে ছিনতাই, মাদকের কারবার ও অসামাজিক কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এমনকি দেশের প্রথম এই পার্ক ভ্রমণে এসে দেশি–বিদেশি অনেক পর্যটক–দর্শনার্থীও সর্বস্ব খুঁইয়েছেন বলে অভিযোগ ছিল। এসব কর্মকাণ্ড রোধে পার্ক কর্তৃপক্ষেরও চেষ্টার কমতি ছিল না। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পার্কে সিসিটিভি পর্যন্ত বসানো হয়। এসব কিছুর পরেও মাঝে–মধ্যে ঘটে গেছে অনাকাঙিক্ষত অনেক ঘটনা। তবে আজ থেকে এসব অনাকাঙিক্ষত ঘটনার পরিসমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে। পার্কে আগত দেশি–বিদেশি পর্যটক–দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার হুমকি নিয়ে আর বিচলিত থাকতে হবে না পার্ক কর্তৃপক্ষকে। কেননা পার্ক কর্তৃপক্ষের অনেক চেষ্টা–তদবিরের পর আজ থেকে পার্কের ভেতরে ও বাইরে নিরাপত্তার দায়িত্ব নিচ্ছে ট্যুরিস্ট পুলিশের বিশাল একটি বহর। ২২ সদস্যের এই ট্যুরিস্ট পুলিশের জন্য স্থাপন করা হচ্ছে স্থায়ী ক্যাম্পও।

পার্ক কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন, আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যমে একমাত্র প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবেন বাংলাদেশ পুলিশের শাখা ট্যুরিস্ট পুলিশ। যা দেশি–বিদেশি পর্যটক–দর্শণার্থীসহ সকলের জন্য একটা সুখবর। পার্কের সহকারী কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে জানান, প্রায় ৯শ হেক্টর বনজসম্পদ সমৃদ্ধ এই পার্কে আগত দেশি–বিদেশি পর্যটক–দর্শণার্থীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই পার্কে ট্যুরিস্ট পুলিশের স্থায়ী একটি ক্যাম্প স্থাপনের জন্য নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেন। এখানে ট্যুরিস্ট পুলিশের একটি ক্যাম্প স্থাপনের জন্য আমাদের পক্ষ থেকেও উপর মহলে আবেদন এবং চেষ্টা–তদবির করা হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে পুরো পার্কের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিচ্ছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ। আজ সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের মাধ্যমে পার্কে ট্যুরিস্ট পুলিশের যাত্রা শুরু হবে।

তিনি আরো জানান, ২২ সদস্যের এই ট্যুরিস্ট পুলিশের টিমে থাকছেন ১জন পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর), ২জন উপ–পরিদর্শক (এসআই), ১জন সহকারী উপ–পরিদর্শক (এএসআই) ও বাকীরা কনস্টেবল। তারা পালাক্রমে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। তবে ট্যুরিস্ট পুলিশের জন্য এখনো স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ না হলেও আপাতত তারা একটি রেস্ট হাউজে থেকে দায়িত্ব পালন করবেন। এতে আশা করা যাচ্ছে এখন থেকে আর এই পার্কে আর কোন অনাকাঙিক্ষত ঘটনা ঘটবে না।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) এবং বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক মো. গোলাম মওলা দৈনিক আজাদীকে বলেন, সাফারি পার্কের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে এখানে ট্যুরিস্ট পুলিশের একটি স্থায়ী ক্যাম্প স্থাপনের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে ইতোপূর্বে আবেদন করা হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। এরই অংশ হিসেবে ক্যাম্পটি স্থাপন করা হচ্ছে আজ সোমবার।

প্রকল্প পরিচালক আরো বলেন, মূলত বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কটি এমন এলাকায় প্রতিষ্ঠিত যে এলাকাটি একেবারে স্পর্শকাতর। তাছাড়া এখানে রয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালও। এমনকি মাঝে–মধ্যে শোনা যায় পার্কের অভ্যন্তরে কিছু অনাকাঙিক্ষত ঘটনার কথাও। তদুপরি দেশি–বিদেশি পর্যটকরাও যাতে এখানে এসে কোন ধরণের নিরাপত্তা হুমকিতে না পড়েন সেদিকেই আমাদের লক্ষ্য ছিল বেশি। তিনি জানান, ট্যুরিস্ট পুলিশের ক্যাম্প স্থাপন এবং আজ থেকে তাদের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করতে আসছেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোসলেহ্‌ উদ্দিন।

পাঠকের মতামত: