বিনোদন ডেস্ক :::
‘বারো মাসে তেরো পার্বণ’ কথাটি কেবল বাঙালি বা বাঙালির সংস্কৃতির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এসব পার্বণ বা উৎসবেরই একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে পয়লা ফাল্গুন। আমাদের সংস্কৃতিতে পয়লা ফাল্গুনের প্রভাব এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় নিয়ে লিখেছেন ইকবাল খন্দকার
প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালি উৎসবপ্রিয় জাতি হিসেবে পরিচিত। তবে তাদের উৎসবের তালিকায় যেসব উপলক্ষ ছিল, সেগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানীয় ছিল পয়লা বৈশাখ, নবান্ন উৎসব, শীতের পিঠাপুলি উৎসব প্রভৃতি। এ তালিকার একেবারেই শেষ প্রান্তে ছিল যে দু-একটি উপলক্ষ বা উৎসব, পয়লা ফাল্গুন সেগুলোর মধ্যে অন্যতম।
ফাল্গুনের উৎসব : এক যুগ আগেও পয়লা ফাল্গুন নিয়ে ততটা আয়োজন হতো না। তার পর দিন যত যেতে থাকে, ততই যেন মানুষ নিজস্ব সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকে। আর তারই ফলে বাড়তে থাকে পয়লা ফাল্গুন উদযাপনের আয়োজন। বিষয়টি এখন এতটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে যে, এ দেশের মানুষ বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা সারা বছর ধরে অপেক্ষা করে পয়লা ফাল্গুন আসবে আর কখন হলুদ রঙে সাজিয়ে তুলবে নিজেদের, সাজিয়ে তুলবে আশপাশ। হলুদরাঙা এ পয়লা ফাল্গুন দারুণভাবে প্রভাব রেখে চলেছে আমাদের সংস্কৃতিতে। আমাদের সংস্কৃতির বিভিন্ন অনুষঙ্গ এখন আবর্তিত হচ্ছে পয়লা ফাল্গুনকে ঘিরে। কোনো একটি মাস বা ঋতুকে ঘিরে এমন প্রাণবন্ত আয়োজন অন্য কোনো সংস্কৃতিতে বিরল। আমাদের সংস্কৃতিতে পয়লা ফাল্গুনের প্রভাব বহুমুখী। একটা সময় ছিল যখন ফ্যাশন হাউজগুলো সরগরম হয়ে উঠত কেবল ঈদ, পুজো- এ ধরনের উৎসবগুলোতে। কিন্তু পয়লা ফাল্গুন আমাদের সংস্কৃতিতে এতই গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে যে, এখন ফ্যাশন হাউজগুলোর দিকে তাকালেই বোঝা যায়- ফাল্গুন এসে যাচ্ছে।
আমাদের গানের বাজারও অনেকটাই চাঙ্গা হয় পয়লা ফাল্গুনকে কেন্দ্র করে। অসংখ্য অ্যালবাম প্রকাশিত হয় এই উৎসবকে ঘিরে। আয়োজন করা হয় লাইভ কনসার্টের। টিভিতে পয়লা ফাল্গুনকেন্দ্রিক অন্যান্য অনুষ্ঠানও থাকে। লাইফ স্টাইল পাতাগুলোতে প্রভাব পড়ে পয়লা ফাল্গুনের।
এভাবে আমাদের সংস্কৃতির প্রতিটি শাখা-প্রশাখায়ই প্রভাব রাখছে পয়লা ফাল্গুন। দিন যত যাচ্ছে, ততই যেন বাড়ছে এ প্রভাব। এ প্রসঙ্গে কথাসাহিত্যিক সুমন্ত আসলামের মন্তব্য- পয়লা ফাল্গুন ছাড়া আমাদের সংস্কৃতি অনেকটাই অসম্পূর্ণ। তবে উৎসবটিকে আমরা যতটা উৎসবমুখর করে তুলতে পারব, ততটাই সমৃদ্ধ হবে আমাদের সংস্কৃতি।
পাঠকের মতামত: