ঢাকা,মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় বারবাকিয়ায় নৌকার প্রার্থী পরাজয়ের নেপথ্যে দলের অসহযোগিতা ও প্রশাসনের ডিগবাজি!

পেকুয়া-ইউপি-নিবর্কাচন-150x150পেকুয়া প্রতিনিধি :::

পেকুয়ায় দলের অসহযোগিতা ও প্রশাসনের ডিগবাজিতে বারবাকিয়া ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পরাজিত হয়েছে। ইউপি নির্বাচনে আ’লীগ ওই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে জনপ্রিয় প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। কিন্তু ঘরের শত্রুতায় কাল হয়েছে নৌকা প্রতীকের জন্য। স্বল্প সংখ্যক ভোটের ব্যবধানে জামাত সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী এইচএম বদিউল আলম জিহাদী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

 ইউপি নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থী জিএম কাসেম তুমুল প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। গন সংযোগ, মিছিল-মিটিংয়ে তার কর্মী সমর্থকদের সরব উপস্থিতি বারবাকিয়ার নির্বাচনকে উচ্ছাসে পরিনত করে। প্রতিদ্বন্ধি ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম ধানের শীষের প্রার্থী ও চশমা প্রতীকের প্রার্থী জামাত নেতা বদিউল আলম প্রচার প্রচারনায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর ধারে কাছেও যেতে পারেনি। তবে ভোটের ফলাফলে জয়ী হয়েছেন জামাত সমর্থিত প্রার্থী বদিউল আলম।

 স্থানীয়রা জানিয়েছেন বারবাকিয়ায় আ’লীগের প্রার্থী জিএম কাসেম হেভিওয়েট প্রার্থী হলেও তিনি অর্থ নৈতিকভাবে দুর্বল। অপরদিকে জামাত ও বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী দু’জনেই বিত্তশালী। নির্বাচনে জিএম কাসেম কর্মী সমর্থকের কোন ধরনের অর্থের যোগান দিতে না পারলেও তার পক্ষে স্বেচ্ছায় ভোট করেছে মানুষ।

 খোঁজ নিয়ে জানা গেছে পেকুয়ায় প্রশাসন ছিল আ’লীগ প্রার্থীদের বিপরীত অবস্থানে। আ’লীগ ক্ষমতায় অধিষ্টিত থাকলেও পেকুয়ার প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত হয়েছে বিএনপি-জামাতের অনুকুলে। প্রচার প্রচারনার সময়েও স্থানীয় প্রশাসন আ’লীগ প্রার্থীদের অন্তরায় হিসেবে কাজ করেছে। আ’লীগ প্রার্থীদের হতাশ করতে নির্বাচনের লেবেল ফিল্ড ছিলনা। তারা অঘোষিতভাবে বিএনপি-জামাতকে নির্বাচনী বৈতরনী পার করতে কৌশল অবলম্বন করেন।

 জানাগেছে ৩১মার্চ অনুষ্টিত নির্বাচনে বারবাকিয়া ইউপিতে বদিউল আলম চশমা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রাপ্ত ভোট ৩,৭৬৯। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জিএম কাসেমকে মাত্র ৩২৬ভোটে পরাজিত করেন। জিএম কাসেমের প্রাপ্ত ভোট ৩৪৪৩। তবে কেন্দ্র ওয়ারি ভোট গননায় প্রাথমিকভাবে জিএম কাসেম বিজয়ী ঘোষনা করা হয়। ১২২ভোটে বদিউল আলমের ছেয়ে এগিয়ে থাকায় তাকে জয়ী ঘোষনা করেন। এরপর আ’লীগ নেতাকর্মীরা রাস্তায় নেমে বিজয় উল্লাসও করেন।

 নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জিএম কাসেম অভিযোগ করেছেন নির্বাচনে প্রাথমিকভাবে ভোট গননায় তাকে বিজয়ী ঘোষনা করে। এর কিছুক্ষন পর ভোটের বাক্স উপজেলায় স্থানান্তরিত হওয়ার পর ফলাফল পাল্টানো হয়। রাতে ফের ঘোাষনা দেয়া হয় জামাত প্রার্থী বদিউল আলমকে। তিনি অভিযোগ করেন উপজেলায় পুনভোট গননার অযুহাত দেখিয়ে আমার ৩০৯টি ভোট বাতিল ঘোষনা করে। নির্বাচনী কর্মকর্তারা মোটাংকের টাকায় ম্যানেজ হয়ে নৌকার ভোটের চিত্র পাল্টিয়ে দেয়। সোলতানুল উলুম মাদ্রাসা কেন্দ্রে তার প্রাপ্ত ভোট থেকে ৩০৯টি ভোট বাতিল ঘোষনা করে।

 জিএম কাসেম অভিযোগ করেছেন নির্বাচনে তৃনমুল আ’লীগ থেকে তাকে সহযোগিতা করা হয়েছে। কিন্তু দলের নীতি নির্ধারক পর্যায় থেকে কোন ধরনের সহযোগিতা করা হয়নি। অতীতের দু’টি ইউপি নির্বাচনে ওই ইউনিয়ন থেকে জেলা আ’লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ হোছাইন প্রার্থী হন। তিনি দু’বারই পরাজিত হয়েছেন। বারবাকিয়া তার অনুগত লোকজন আমাকে পরাজিত করতে তৎপর ছিল। ইউনিয়ন আ’লীগের কিছু দায়িত্বশীল নেতা সরাসরি নৌকার বিপক্ষে কাজ করেছে। মুলত প্রশাসন ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে ফলাফল পাল্টিয়ে নৌকার নিশ্চিত বিজয়কে ছিনিয়ে নিয়েছে।

 এদিকে ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে বারবাকিয়ায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষনা করলেও পরবর্তীতে চেয়ারম্যান হিসেবে বদিউল আলমকে ঘোষনা করা নিয়ে এলাকায় অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বারবাকিয়ার সাধারন মানুষ ঘোষিত ফলাফল প্রত্যাখান করেছেন। তারা জানিয়েছেন চক্রান্ত করে প্রশাসনের যোগসাজসে আ’লীগ প্রার্থীর নিশ্চি বিজয় ঠেকিয়ে দেয়। উপজেলায় এসে প্রাপ্ত ভোট থেকে ৩০৯টি ভোট কিভাবে বাতিল করা হয় এ প্রশ্ন আমাদের। এটি আ’লীগ প্রার্থীর সাথে প্রশাসনের চরম প্রহসন।

পাঠকের মতামত: