ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ার সাত ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র তান্ডবে দেড় হাজার কাচা-ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত: নিহত ১, মাত্র ১৩ মে:টন চাল বরাদ্দ: ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষোভ!

FB_IMG_1496145497692মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া :::

কক্সবাজারের উপকূলীয় উপজেলা পেকুয়ায় ঘুর্র্ণিঝড় ‘মোরা’র তান্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উজানটিয়া ইউনিয়নের নতুন ঘোনা গ্রামের আজিজুর রহমান পুত্র আবদুল হাকিম নামের একজন নিহত হয়েছে। উজানটিয়া ইউনিয়নে অপর ১ জন গুরুতর আহত হয়েছে। তবে তার নাম এখনো পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী উপজেলার সাত ইউনিয়নের প্রায় দেড় হাজার কাচা ঘর বাড়ি ঘূর্ণিঝড় মোরার তান্ডবে বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। এদিকে পেকুয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে মাত্র ১৩ মে:টন চাল, চার বস্তা চিড়া, ১৫০ প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে ৩০ মে রাতে এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সৌব্রাত দাশ।

 পেকুয়ার পিআইও সৌভ্রাত দাশ জানান, ঘূর্ণিঝড় মোরার তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা ৩০ মে রাত ৮টা পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির তালিকা জমা দেয়নি। তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিক তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, ইউনিয়ন সমূহের চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তালিকা পাওয়া গেলে পর্যাপ্ত ্রতাণ সামগ্রী বরাদ্দ চেয়ে সরকারের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে অবহিত করা হবে।

 এছাড়াও বিভিন্ন গ্রামীণ অবকাটামো ও স্থাপনার ব্যাপক ক্ষতি হয়। মগনামা-বানিরারছড়া সড়কের পেকুয়া উপজেলা পয়েন্টের বিভিন্ন এলাকায় সড়কের গাছও উপড়ে গেছে। ৩০ মে সকাল ৭টা থেকে একটানা দুপুর ১২ টা পর্যন্ত পেকুয়া উপজেলার উপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড় মোরার প্রভাবের কারণে তীব্র ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়। এদিকে ২৯ মে রাত থেকে উপজেলা প্রশাসন ঘূর্ণিঝড় মোরার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় উপকূলীয় এলাকার জনসাধরনে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শাফায়াত আজিজ রাজু ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুবুল হক জানান, ২৯ মে রাত পেকুয়া বিভিন্ন ইউনিয়নের জনসাধরনে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ৩০ মে ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে পেকুয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কাচা-ঘর বাড়ি বিধ্বস্থ হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করে সরকারের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার কাজ চলছে। এছাড়াও আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া লোকজনের মাঝে ২৯ মে রাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করা হয়েছিল।

 ৩০ মে বিকালে পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, মগনামা ইউনিয়নের বাইন্যা ঘোরা, দারিয়াখালী, কুম পাড়া, মগঘোনা, দরদরি ঘোনা, শরৎঘোনা ও পশ্চিমকূল, কাকপাড়া গ্রামের কাচাঘর বাড়ি, বসত বাড়ির গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিকালে মগনামার ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী তার ইউনিয়নের ক্ষতিগগ্রস্থ বিভিন্ন গ্রাম পরিদর্শন করেছেন।

উজানটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এটিএম শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড়ের কাচাঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। তিনি তার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

 রাজাখালী ইউনিয়নের সাগরে সন্নিকটের বেশ কয়েকটি গ্রামেও মোরার তান্ডবে কাচা ঘর বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। বিভিন্ন গ্রামে ঘর বাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার পাশাপাশি গাছপালাও উপড়ে গিয়ে ব্যাপক ক্সয়ক্ষতি হয়েছে। এদিকে পেকুয়া সদর ইউনিয়ন, বারবাকিয়া ও টইটং ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামেও ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

 পেকুয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় মোরার তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্দ না দেওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেক পরিবার বসত ঘর হারিয়ে ঝড়বৃষ্টির মাঝে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। স্থানীয়রা পেকুয়ার সাত ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাসমূহের জনসাধরনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্দসহ ক্ষতিগ্রস্থ লোকজনের পূর্ণবাসনের সরকারের উচ্চ টর্যায়ের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন।

পাঠকের মতামত: