ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

নাফ নদীতে মাছ শিকার বন্ধ : কিন্তু বন্ধ নেই ইয়াবা পাচার : এক রাতে ১৪ কোটি টাকার ইয়াবা উদ্ধার

naffগিয়াস উদ্দিন ভুলু, টেকনাফ ॥

ইয়াবা পাচার প্রতিরোধে সরকার মায়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকা নাফ নদীতে রাতের বেলায় মাছ শিকার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশনা সঠিকভাবে পালন করে যাচ্ছে নাফ নদী উপকূলীয় এলাকার ১০ হাজার জেলে পরিবার। নাফ নদী থেকে ইয়াবা পাচার বন্ধ রাখতে সরকার এই কঠোর সিদ্ধান্ত হাতে নেয়। অথচ ইয়াবা পাচারকারীরা বিজিবির চোখকে ফাঁকি দিয়ে সুকৌশলে চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা পাচার। প্রতিদিন মায়ানমার হতে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পাচার হয়ে আসছে লক্ষ লক্ষ ইয়াবা। সেই ইয়াবাগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছে চিহ্নীত মাদক পাচারকারীরা। এছাড়াও প্রতিনিয়ত টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কে যান বাহনে তল্লাশী চালিয়ে আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে আটক হচ্ছে ইয়াবাসহ হতদরিদ্র গোটি কয়েক ইয়াবার বাহক। কিন্তু ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে ইয়াবা পাচারের মুল হোতারা। এদিকে ইয়াবা পাচার প্রতিরোধ করতে প্রশাসনের সদস্যরা সরকারি নির্দেশে যতই কঠোর হচ্ছে ততই দিনের পর দিন বাড়ছে ইয়াবা পাচারকারীদের সংখ্যা। সে ধারাবাহিকতায় গত ৩০ জুলাই রোববার ভোর রাতে ২ বিজিবির সৈনিকেরা টেকনাফ নাফ নদীর ২টি পয়েন্টে পৃথক অভিযান চালিয়ে ১৩ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা মুল্যের ৪ লক্ষ ৬০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। তবে এসমস্ত ইয়াবাগুলোর সাথে কোন পাচারকারীকে আটক করতে পারেনি বিজিবি। তথ্য সুত্রে জানা যায়, সাবরাং ইউনিয়নের লাফারঘুনা থেকে ১২ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা মুল্যের ৪ লক্ষ ৩০ হাজার ইয়াবা এবং হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাংখালী থেকে ৯০ লক্ষ টাকা মুল্যের ৩০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে বিজিবি। অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ-২ বিজিবি’র অধিনায়ক এস এম আরিফুল ইসলাম জানান ‘বিশ্বস্ত সুত্রের মাধ্যমে জানা যায়, মায়ানমার হতে ইয়াবার একটি চালান সাবরাং ইউনিয়নের লাফারঘুনা মাঠ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে সাবরাং বিওপির হাবিলদার মোঃ মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টহলদল ৩০ জুলাই রবিবার ভোররাত ৩ টায় উক্ত স্থানে মাঠের এক পাশে অবস্থান নিয়ে ওঁৎ পেতে থাকে। ভোর ৪টায় ৪/৫ জন লোককে ৪টি বস্তা মাথায় করে মাঠ দিয়ে আসতে দেখে এসময় বিজিবি উপস্থিতি নজরে পড়লে পাচারকারীরা বস্তাগুলো ফেলে সুকৌশলে পালিয়ে যায়। পরে টহলদল ইয়াবা পাচারকারী কর্তৃক ফেলে যাওয়া বস্তাগুলো তল্লাশী করে ৪ লক্ষ ৩০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

অপরদিকে একইদিন হ্নীলা বিওপির সুবেদার মোঃ আতাউর রহমানের নেতৃত্বে ২৯ জুলাই দিবাগত গভীর রাতে খারাংখালি লবন মাঠ থেকে একই কায়দায় ৩০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। তিনি আরো জানান, নাফ নদী থেকে ইয়াবা পাচার বন্ধ করতে সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী আমাদের সদস্যরা রাত দিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তার সফলতা হিসেবে আমরা এই ইয়াবাগুলো উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। তবে পাচারকারীদের চিহ্নীত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য খুব শিঘ্রয় কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হবে। এই অভিযানে সফলতা পাওয়ার জন্য স্থানীয় জনগন, জনপ্রতিনিধিদেরকে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে এগিয়ে আসতে হবে॥

পাঠকের মতামত: