ঢাকা,মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪

নজরদারিতে চট্টগ্রামের ৯৮ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী ভর্তিতে বাড়তি টাকা আদায়

CTG Lচট্রগ্রাম প্রতিনিধি :::

চট্টগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তিতে বাড়তি টাকা আদায় করার তালিকায় রয়েছে ৯৮ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান! নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই নানা খাতে এসব প্রতিষ্ঠান আদায় করছে হাজার হাজার টাকা। এ নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে শেষমেশ জেলা প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করতে মাঠে নেমে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পায়। এরমধ্যে শহরের নামিদামি অনেক স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা রয়েছে। বাড়তি ফি আদায় বন্ধে ও সার্বিক বিষয় তদারকি করতে মাঠে নেমেছে পাঁচ ম্যাজিস্ট্রেট। এ লক্ষ্যে মহানগরীকে পাঁচটি থানা এলাকায় ভাগ করে চারজন থানা শিক্ষা কর্মকর্তাকে সদস্য করে গঠন করা হয়েছে থানাভিত্তিক পাঁচটি কমিটিও। গঠিত কমিটি আগামী ২৯শে জানুয়ারি রিপোর্ট জমা দেবে। এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বর্ধিত ফি তদন্ত করতে গিয়ে ভয়ানক তথ্য পাচ্ছে জেলা প্রশাসনের গঠিত কমিটি। চিটাগাং গ্রামার স্কুলে ভর্তি ফি বাবদ ৬৩ হাজার টাকা, মাসিক বেতন ১৯ হাজার টাকা, বাংলাদেশ মহিলা সমিতি  স্কুলে সেশন ফি বাবদ ১০ হাজার টাকা এবং মেরন সান স্কুল অ্যান্ড কলেজে টিসি বাবদ ৫৫০০ টাকা আদায় করার মতো প্রমাণ পেয়েছে গঠিত কমিটি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিন বলেন, নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লাগামহীনভাবে ভর্তিবাণিজ্য করছে। নীতিমালা ভঙ্গ করে বাড়তি টাকা আদায় করা এমন প্রতিষ্ঠানের তালিকা করেছি আমরা। পুরো বিষয়টি তদারকি করতে পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এর জন্য থানাভিত্তিক পাঁচটি কমিটিও করা হয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরজমিন গিয়ে সার্বিক বিষয় যাচাই-বাছাই করে কমিটি রিপোর্ট দেবে। রিপোর্টের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. হাবিবুর রহমান ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে আরার নেতৃত্ব্বে মহানগরীর পাঁচটি থানা এলাকার আওতাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তদারকি করতে পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে পাঁচটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এরমধ্যে কোতোয়ালি থানার সকল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তদারকি করতে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমানকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। এখানে চার থানা শিক্ষা অফিসারকে সদস্য করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ভর্তি নীতিমালায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, সেশন চার্জসহ সর্বসাকুল্যে মেট্রোপলিটন এলাকায় ৩ হাজার টাকার বেশি নেয়া যাবে না। সেই সঙ্গে উন্নয়ন ফিও নেয়া যাবে না। কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠান নীতিমালা না মেনে কয়েকগুণ বেশি বাড়তি ফি আদায় করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তাই এ ভর্তি বাণিজ্য ঠেকাতে আমরা নানা প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।
ভর্তিবাণিজ্য ঠেকাতে বৃহস্পতিবার থেকে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত পাঁচ ম্যাজিস্ট্রেট। প্রথম দিনেই ম্যাজিস্ট্রেটরা বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত কয়েকগুণ বেশি টাকা আদায় করার প্রমাণ পেয়েছেন। ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান বলেন, সরজমিন বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ভর্তি ফি, মাসিক বেতন, সেশন ফি, টিসি ফিসহ নানা খাতে কয়েকগুণ বেশি অর্থ আদায়ের প্রমাণ পেয়েছি আমরা। বাড়তি টাকা আদায় প্রসঙ্গে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য নিয়েছি। সেই সঙ্গে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও বক্তব্য সংগ্রহ করেছি।’ দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটরা সরজমিন শিক্ষার্থী ভর্তি ফি, ভর্তির প্রক্রিয়া, কতটি বিভাগ রয়েছে, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন রয়েছে কিনা এসব বিষয়ও খতিয়ে দেখছেন।

পাঠকের মতামত: