ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

থার্টি ফার্স্ট , আজ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বসছে বছরের বৃহত্তম মিলনমেলা

চকরিয়া নিউজ ::

থার্টি ফার্স্ট বা ইংরেজি পুরনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে আজ রোববার বিকেল থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বসছে এ বছরের বৃহত্তম মিলনমেলা। আর মিলনমেলায় যোগ দিতে আসা পর্যটকের ভিড়ে নগরীর চার শতাধিক হোটেলে গত পক্ষকাল ধরে চলছে ‘হাউসফুল’ অবস্থা। ভ্রমণপ্রিয় মানুষ দল বেঁধে দেশের প্রধান অবকাশযাপন কেন্দ্র কক্সবাজারের দিকে ছুটে আসায় যানবাহন ও মানুষের ভিড়ে শহরে যান ও জনজটের সৃষ্টি হচ্ছে। তবে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে এ বছর কেবল দুটি হোটেল ছাড়া কোথাও অনুষ্ঠান করতে দিচ্ছে না প্রশাসন।

প্রতিবছর ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে কক্সবাজারে পর্যটকদের চাপ বাড়তে থাকে। ৩১ ডিসেম্বর হয় বৃহত্তম সমাবেশ। বছরের এ সময়েই অন্তত ১০ লাখ পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণ করেন বলে ধারণা হোটেল মালিকদের। তবে গত ৩ বছর ধরে রাতে সমুদ্র সৈকতে ওপেন এয়ার কনসার্টের অনুমতি বাতিল করায় থার্টি ফার্স্টের আগের জৌলুস কমেছে। এবছর হোটেল অভ্যন্তরের অনুষ্ঠানমালার উপরও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। কেবল কক্সবাজার শহরের ‘সাইমন বিচ রিসোর্ট’ ও ইনানীর ‘রয়েল টিউলিপ সী–পার্ল’ থার্টি ফার্স্ট উপলক্ষে অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি পেয়েছে। ফলে মূল শহরে পর্যটকদের চাপ কম থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরপরও আজ রোববার কক্সবাজারে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক অবস্থান করছেন বলে জানান কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এসএম কিবরিয়া খান।

তিনি বলেন– শুক্রবার থেকে লক্ষাধিক পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করছে। হিমছড়ি, ইনানী, সেন্টমার্টিন ও সাফারী পার্কসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে এখন উপচে পড়া ভিড়। হোটেলে কোন কক্ষ খালি নেই। কক্ষ না পেয়ে অনেকেই সৈকতে অথবা রাস্তায় খোলা আকাশের নীচে রাত কাটাচ্ছে। এরপরও কক্সবাজারের দিকে ছুটে আসছে মানুষ। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে বর্তমানে কক্সবাজারে বাণিজ্য মেলা ও উৎসব চলছে। দুটি হোটেলে নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হচ্ছে।

এদিকে গতকাল শনিবার পর্যটন এলাকা সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, পর্যটকদের ভিড়ে বিপণী কেন্দ্র ও রাস্তাঘাটে উপচে পড়া ভিড়। রাস্তায় ভয়াবহ ট্রাফিক জ্যাম। রেস্তোরাঁয় খাবারের জন্য মানুষের দীর্ঘ লাইন। সেন্টমার্টিনগামী জাহাজের টিকেট পেতেও করতে হচ্ছে হুড়োহুড়ি।

হোটেল ব্যবসায়ীরা চকরিয়া নিউজকে জানান– আজ ৩১ ডিসেম্বর নগরীর চার শতাধিক হোটেলে কোন কক্ষ খালি নেই। সরকারী–বেসরকারী অর্ধশতাধিক রেস্টহাউসেও সকল কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। এমনকি ফ্ল্যাটবাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবনগুলোও এখন ভাড়া হয়ে গেছে। বর্তমানে কক্সবাজারে প্রতিদিন প্রায় ১ লাখ ২০ মানুষের রাত কাটানোর সুযোগ রয়েছে বলে জানান কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সহ–সভাপতি শফিকুর রহমান কোম্পানী।

অন্যদিকে পর্যটকদের এই ভিড়কে পুঁজি করে এক শ্রেণীর লুটেরা ব্যবসায়ী ও শ্রমিক গলাকাটা ব্যবসা ফেঁদেছে। হয়রানি চলছে নানাভাবে। তবে অভিযোগ পেলে অপরাধ দমন ও পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ সদা প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রায়হান কাজেমী।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন চকরিয়া নিউজকে জানান– ব্যাপক হারে পর্যটক আসার সুযোগে কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে ব্যাপারে প্রশাসন সজাগ রয়েছে। পর্যটন এলাকায় জেলা প্রশাসনের একাধিক ভ্রাম্যমান আদালত কাজ করছে। নাশকতার আশংকায় থার্টি ফার্স্ট নাইটের অনুষ্ঠানে কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে।

পাঠকের মতামত: