ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

টেকনাফে রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য সেবায় ১৬টি মেডিকেল টিম

হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ :Teknaf-pic-26.9.2017-4_1
টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য সেবায় ১৬টি মেডিকেল টিম রাতদিন কাজ করছে। বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গারা পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছেন বলে জানা গেছে। টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সুমন বড়–য়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্প এবং গ্রামে অবস্থান করা রোহিঙ্গারা প্রয়োজনের তুলনায় যথাযথ স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছেন বলে আশ্রিত রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন। গরম এবং হালকা বৃষ্টিতে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ভাইরাস রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকলেও পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সেবার কারণে রোগ বালাই তেমনটি দেখা যাচ্ছেনা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের সেবা দানের লক্ষ্যে টেকনাফে ফিল্ড পর্যায়ে সরকারী উদ্যোগে ৫টি, বেসরকারী উদ্যোগে ১১টি মেডিকেল টীম কাজ করছে। আইন শৃংখলা বাহিনী, রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি ও সাংগঠনিক ছাড়াও ১৩টি কমিউিনিটি ক্লিনিক, ২টি সাব সেন্টার, ২টি পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, ৫০ শয্যার উপজেলা হেলথ সেন্টার, মুচনী এবং লেদা ক্যাম্পে এনজিও পরিচালিত স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রের আওতায় ২৯ জন ডাক্তার, ২৭ জন নার্স, ৮ জন স্যাকমো নিয়োজিত রয়েছেন। এছাড়া বেসরকারী উদ্যোগে পরিচালিত মেডিকেল টীমে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মী রোহিঙ্গাদের সেবায় কাজ করছেন।
ক্যাম্প এবং গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে, আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সেবায় সরকারী-বেসরকারী উদ্যোগে দিবারাত্রি মেডিকেল ক্যাম্প চলছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষে নিজস্ব ডাক্তার দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে মেডিকেল ক্যাম্প। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উদ্যোগে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের সেবায় টীম গঠন করে জন্ম নিয়ন্ত্রণ ঔষধ এবং কাউন্সিলিং করতে দেখা গেছে। এছাড়া এমএসএফ, আইওএম, ইউনিসেফ, গণস্বাস্থ্য, ব্র্যাকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং সংগঠনের উদ্যোগে প্রতিদিন মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালিত হচ্ছে। যেখানে শিশু থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক পর্যন্ত সব ধরণের রোগী সেবা নিচ্ছেন। জটিল এবং কঠিন রোগে আক্রান্ত রোহিঙ্গারা এসব মেডিকেল ক্যাম্প থেকে সেবা নিয়ে সুস্থতা লাভ করছেন বলে জানা গেছে।
টেকনাফের রইক্ষ্যং পুটিবনিয়া অস্থায়ী রোহিঙ্গা শিবিরে স্থাপিত মেডিকেল ক্যাম্পে চিকিৎসা নিতে আসা ৮০ বছরের বৃদ্ধা শামারুপ বলেন ‘দেশে থাকাকালীন চিকিৎসার অভাবে বেশী কষ্টে ছিলাম। রইক্ষ্যং ক্যাম্পে এসে চিকিৎসা নিয়ে আল্লাহর রহমতে সুস্থতা লাভ করেছি। বর্তমানে আরামে আছি’।
পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শ্রুতিপূর্ণ চাকমা বলেন ‘মেডিকেল টীম গঠন করে রোহিঙ্গাদের পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ে নিয়মিত কাউন্সিলিং করা হচ্ছে। টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সুমন বড়–য়া বলেন ‘সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে প্রতিটি ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের সেবায় মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালিত হচ্ছে। এ ক্যাম্প গুলোর মাধ্যমে রোহিঙ্গা নারী পুরুষ এবং শিশুদের জটিল-কঠিন রোগের চিকিৎসাও দেওয়া হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের অবাধে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য সরকারীভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্যবস্থা থাকার পরও অসচেতনতার কারণে অনেকে স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসছেনা।

পাঠকের মতামত: