ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জেলেরা

 কক্সবাজার প্রতিনিধি ::coxsbazar-news-pic-21-11-2016:
বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হয়ে আছে জেলেরা। একের পর এক ফিশিং ট্রলার ডাকাতি ও মাঝি-মাল্লাদের উপর আহত করার ঘটনা ভাবিয়ে তুলেছে ট্রলার মালিক ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের। চলতি মাসে এ পর্যন্ত কক্সবাজারের শতাধিক ফিশিং ট্রলারে ডাকাতি এবং অর্ধশত মাঝি-মাল্লাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারাত্মক আহত করার তথ্য পাওয়া গেছে। এতে করে সাগরে মৎস্য শিকার বন্ধ করে দিয়েছে এর সাথে জড়িতরা। ফলে উদ্বেগ-উকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে ট্রলার মালিক, মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলেরা। সাগরে মৎস্য শিকারে জেলেদের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য স্থায়ী ভাবে নৌ-বাহিনী ও কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে জাহাজের মাধ্যমে নিরাপত্তা দেয়ার দাবী জানিয়েছে ট্রলার মালিক ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা। এদিকে সাগরে জলদস্যুদের উৎপাত বন্ধ এবং জেলেদের নিরাপত্তার দাবীতে সোমবার বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয় মৎস্যজীবিরা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত উক্ত কর্মসূচিতে মৎস্য ব্যবসায়ী ঐক্য সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক জানে আলম পুতু জানান-আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে যদি সাগরে জেলেদের নিরাপত্তা প্রদান করা না হয় তাহলে নৌ-পথ অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে-বর্তমানে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর পুরোদমে যখন জেলেরা মৎস্য শিকারে সাগরে যাচ্ছে, ঠিক সেই মুর্হুত্বে ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে সংঘবদ্ধ জলদস্যু চক্র। বিশেষ করে মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও বাঁশখালী এলাকার চিহিৃত জলদস্যুরা প্রতিনিয়ত সাগরে মৎস্য শিকারে যাওয়া জেলেদের জিম্মি করে ফিশিং ট্রলারে থাকা মাছ ও গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জামাদি ডাকাতি করে নিয়ে যাচ্ছে। শুধু এতেও ক্লান্ত হচ্ছে না জলদস্যুরা। ট্রলারে থাকা জেলেদের উপরও চালায় আমানসিক ভাবে শারিরীক নির্যাতন। মৎস্য ব্যবসায়ী ঐক্য সমবায় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক জানে আলম পুতু জানান-৮ নভেম্বর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত সাগরে শতাধিক ফিশিং ট্রলারে ডাকাতি করেছে জলদস্যুরা। এসময় তাদের হাতে মারাত্মক ভাবে আহত হয়েছে অর্ধশত জেলে। এই সংগঠনের কাছ থেকে ডাকাতির শিকার কয়েকটি ফিশিং ট্রলারের নাম পাওয়া গেছে। সেগুলো হল খোরশেদ আলমের মালিকানাধীন এফবি মায়ের দোয়া, আমির হোসেনের মালিকানাধীন এফবি.., ওসমান গণি টুনুর মালিকানাধীন এফবি নিশান, আনছারের মালিকানাধীন আল্লার দান-১। জলদস্যুরা বিশেষ করে বঙ্গোপসাগরের গুলিদ্ধার, চৌদ্দগিউ ও আঠার গিউ নামক স্থানে ফিশিং ট্রলারগুলোতে ডাকাতির ঘটনা ঘটায় বলে ট্রলার মালিক সূত্রে জানা গেছে। এদিকে কোস্টগার্ড কক্সবাজার স্টেশনের ইনচার্জ হারুনুর রশিদ জানান, দিন-রাত কোস্টগার্ডের সদস্যরা সাগরে নিয়মিত টহল দিয়ে যাচ্ছে। জলদস্যুরা যাতে করে জেলেদের উপর হামলা ও ট্রলার ডাকাতি করতে না পারে সেজন্য কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন বলেন-সাগরে জলদস্যুদের হাত থেকে জেলেদের রক্ষা ও ফিশিং ট্রলারে ডাকাতি রোধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এবিষয়ে কোস্টগার্ডের সাথেও প্রতিনিয়ত আলোচনা হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

পাঠকের মতামত: