ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি হজফ্লাইট শুরু আগামী রোববার

চট্রগ্রাম প্রতিনিধি ::

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের সরাসরি প্রথম হজফ্লাইট আগামী রবিবার(২২ জুলাই) থেকে শুরু হচ্ছে। বাংলাদেশ বিমানে করে সরাসরি ও শিডিউল মিলিয়ে এবার ১০ হাজারেরও অধিকহজযাত্রী চট্টগ্রাম থেকে সৌদি যাওয়ার সুযোগ পাবেন, এমনই প্রত্যাশা বিমান কর্তৃপক্ষের।
যদিও এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আটাব) ও হজ এজেন্সিস এসোসিয়েশন অববাংলাদেশ (হাব) নেতারা অভিযোগ করেছেন, এবার চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি হজফ্লাইট কমিয়ে দেয়া হয়েছে। এতেকরে সাড়ে ৯ হাজারেরও অধিক হজযাত্রীর ভোগান্তি হবে। তাই আরো অন্তত পাঁচটি ফ্লাইট বাড়ানোর দাবিজানিয়েছেন ক্ষুব্ধ আটাব ও হাব নেতারা।
বিমান সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম–মদিনা রুটের দুটি ফ্লাইটসহ গত বছর চট্টগ্রাম থেকে ১৭টি হজফ্লাইট সৌদি আরবগিয়েছিল। ফ্লাইট সংকটের কারণে এবার চট্টগ্রাম–সৌদি আরব রুটে আটটি হজফ্লাইট কমিয়ে দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রামথেকে এবার সরাসরি সৌদিআরব যাবে ৯টি ফ্লাইট। এরমধ্যে ৫টি ফ্লাইট চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি জেদ্দায় এবংঅবশিষ্ট ৪টি ফ্লাইট যাবে মদিনায়। গত বছর থেকেই চট্টগ্রাম–মদিনা রুটে হজফ্লাইট শুরু হয়েছিল।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চট্টগ্রামের স্টেশন ম্যানেজার গোলাম নাসের আজমি স্বাক্ষরিত হজ ফ্লাইট শিডিউলেদেখা যায়, ২২ জুলাই থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত চট্টগ্রাম থেকে ৯টি ফ্লাইট সৌদি আরব যাবে। চট্টগ্রাম–মদিনা ফ্লাইটদিয়েই চট্টগ্রাম থেকে প্রথম হজফ্লাইট শুরু হবে। এজন্য চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমান বন্দরে প্রথম দিনে সংক্ষিপ্তঅনুষ্ঠানেরও পরিকল্পনা রয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষের। এরপর ২৩ জুলাই, ২৮ থেকে ৩০ জুলাই, ২ আগস্ট, ৮, ৯ ও ১২আগস্ট অপরাপর ফ্লাইটগুলো চট্টগ্রাম থেকে সৌদি আরব (জেদ্দা ও মদিনায়) যাবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানায়, সরাসরি ৯টি হজ ফ্লাইটে চার হাজারের মতো হজযাত্রী সৌদি আরবে যেতে পারবেন। শিডিউলফ্লাইটের বাইরে চট্টগ্রাম থেকে সপ্তাহে দুইদিন (মঙ্গলবার ও শুক্রবার) রাতে জেদ্দাগামী সাধারণ যাত্রীদের ফ্লাইটেওহজযাত্রীরা যেতে পারবেন।
বিমান বাংলাদেশ সংশ্লিষ্টরা জানান, এবছর ভাড়া করা উড়োজাহাজে হজযাত্রী পরিবহন করা যাচ্ছে না। এছাড়া, সৌদি সিভিল এভিয়েশন বাংলাদেশের সিভিল এভিয়েশনকে জানিয়েছে, এবার নির্ধারিত ফ্লাইট স্লটের অতিরিক্তকোনো স্লট বিমান বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে না। এ কারণে ফ্লাইট সংকটে পড়েছে বিমান। যার প্রভাবেচট্টগ্রাম থেকে এবার হজফ্লাইট কমিয়ে দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, ভাড়া করা উড়োজাহাজে হজযাত্রী পরিবহনে সৌদি সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করায় নতুন সংকটেপড়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। বিমান কর্তৃপক্ষ হজযাত্রী পরিবহনে দুটি উড়োজাহাজ ভাড়া করেছিল। এদুই উড়োজাহাজে ৪১৯ করে ৮৩৮ জন হজযাত্রী পরিবহনের কথা ছিল। সংকট সমাধানে বিমানকে সৌদি আরবেরতিনটি রুট সাময়িকভাবে বন্ধ করতে হয়েছে। হজফ্লাইটে উড়োজাহাজ ভাড়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকায় নিয়মিত১৫টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনায় সমস্যায় পড়েছে বিমান। এছাড়া বিমানের পরিকল্পনা ছিল নিজস্বউড়োজাহাজ দিয়ে হজ ফ্লাইট পরিচালনা করে ভাড়া করা উড়োজাহাজ দিয়ে সৌদি আরবের বাকি তিনটি গন্তব্যেরফ্লাইট ঠিক রাখা।
জানতে চাইলে বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, ভাড়ার উড়োজাহাজ দিয়ে যাতে সৌদিআরবে ফ্লাইট চালানো যায় এজন্য বিমান চেষ্টা করে যাচ্ছে। আশা করছি, শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে।
এদিকে, হজযাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে চট্টগ্রাম থেকে জেদ্দাগামী শিডিউলে ন্যূনতম আরও ৫টি সরাসরি ফ্লাইটবরাদ্দের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রচেষ্টা চালানোর আশ্বাস দিয়েছেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
শনিবার আটাব ও হাব, চট্টগ্রাম জোনের কর্মকর্তাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে মেয়র প্রচেষ্টা চালানোর এই আশ্বাসদেন।
আটাব চট্টগ্রাম জোনের সচিব এইচ এম মুজিবুল হক শুক্কুর এ প্রতিনিধির প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিগত সময়ে চট্টগ্রামথেকে জেদ্দায় ১৭টি এবং মদিনায় ২টিসহ ১৯টি সরাসরি ফ্লাইট চালু ছিল। কিন্তু ফ্লাইট সংখ্যা কমিয়ে দিয়ে এ বছরজেদ্দায় ৫টি এবং মদিনায় ৪টি ফ্লাইটের শিডিউল রাখা হয়েছে। কিন্তু এ ৯টি ফ্লাইট দিয়ে ৯ হাজার ৬০০ জনহজযাত্রী পরিবহন করা অসম্ভব। আটাব’র এই নেতা চট্টগ্রামের হজ যাত্রীদের পরিবহন সংকট নিরসনে আগামী ১০থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ন্যূনতম আরো ৫টি সরাসরি জেদ্দাগামী ফ্লাইট বৃদ্ধির দাবি জানান।
হজযাত্রীদের জ্ঞাতব্য : প্রত্যেক হজযাত্রী বিনামূল্যে সর্বাধিক দুটি লাগেজে ৪৬ কেজি মালামাল বহন করতে পারবেন।এছাড়া কেবিন ব্যাগেজে ৭ কেজি মালামাল সঙ্গে নিতে পারবেন। কোনো অবস্থাতেই একেকটি ব্যাগেজের ওজন ২৩কেজির বেশি হবে না। প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য ৫ লিটার জমজমের পানি ঢাকা/চট্টগ্রাম/সিলেটে নিয়ে আসা হবে এবংহাজীরা ঢাকা/চট্টগ্রাম/সিলেট ফেরত আসার পর তাদের তা দেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: