চকরিয়া অফিস :
চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন নিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা কর্তৃক একটি এক্সকেভেটরে আগুন দেয়ার ঘটনা নিয়ে পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। গত ১৯ জুলাই সন্ধ্যার পর ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ঘুনিয়া এলকায় বিক্ষুব্ধ জনতা মাতামুহুরী নদীর চরে একটি এক্সকেভেটরে আগুন দেয়। গত ২০ জুলাই লক্ষণ দাশ কিছু লোককে সংঘঠিত করে চকরিয়া পৌর শহরের চিরিঙ্গায় মানববন্ধন করেছে। অপরদিকে এদিন ফাঁসিয়াখালী এলাকায় শতশত নারী পুরুষ অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ঘটনায় লক্ষণ দাশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
এলাকাবাসি জানায়, চকরিয়া পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলার লক্ষণ দাশ ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ঘুনিয়ায় মাতামুহুরী নদীর গাইড়বাঁধ সংলগ্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে নিয়ে যায়। এ নিয়ে ফাঁসিয়াখালী ৪নং ওয়ার্ডের এমইউপি অনিমেষ রঞ্জন দে বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অভিযোগ করেন। এলাকাবাসির পক্ষ থেকেও জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থেকে শুরু করে প্রশাসনের সর্বক্ষেত্রে অভিযোগ করেন। চকরিয়া সহকারী কমিশনার(ভূমি) ১৮ জুলাই ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বালি উত্তোলনে ব্যবহৃত একটি এক্সকেভেটর জব্ধ করেন। উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় চকিদারদারদের দিয়ে সেখানে পাহারাও বসিয়েছেন। তারপরও লক্ষণ দাশ তা অগ্রাহ্য করে ১৯ জুলাই সেখান থেকে জব্ধ করা এক্সকেভেটর দিয়ে বালি উত্তোলন করতে চেষ্টা করেন। এসময় চকিদারদের সাথে তাদের কথা কাটাকাটিও হয়। সন্ধ্যার পর আবারও বালি উত্তেলন করার চেষ্টা করা হলে বিক্ষুব্ধ জনতা এদিন সন্ধ্যার পর ওই এক্সকেভেটরে আগুন ধরিয়ে দেয়। রাত ৯টা পর্যন্ত আগুন জ্বলতে দেখা গেছে বলে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। এতে ওই এক্সকেভেটরে আগুনে পুড়ে যায়। চকরিয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খান জানান এ ব্যাপারে তিনি মৌখিকভাবে শুনেছেন, কিন্তু কোন লিখিত অভিযোগ পাননি। এলাকাবাসি জানায়, লক্ষণ দাশ ওই এলাকার বেড়িবাঁধের পাশ থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করেছেন। সেখান থেকে অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করার কারণে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন বন্যার ঝুঁকিতে পড়ে। এতে স্থানীয় জনগণ ও প্রশাসন তাকে নিষেধ করার পরও লক্ষণ দাশ তা না মেনে বালি উত্তোলন করে গেলে এক্সকেভেটরে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এলাকাবাসি জানায়; চকরিয়া উপজেলার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের মাতামুহুরী নদীর ঘুনিয়া পয়েন্টে মাতামুহুরী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে ব্যবহৃত এক্সকেভেটরে জব্ধ করেছে চকরিয়ার ভ্রাম্যমান আদালত। গত ১৮ জুলাই বিকেলে ভ্রাম্যমাান আদালতের ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো: মাহবুব-উল-আলম এর নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতাধীন কাবিখা কর্মসূচী প্রকল্পের বরাদ্ধকৃত ৩৫০মে:টন গম দ্বারা ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর ব্যবস্থাপনায় ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের ঘুনিয়া এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। গত ২০১৫ সালে কয়েক দফা ভয়াবহ বন্যায় মাতামুহুরী নদীর বন্যার পানি নির্মিত বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে প্রবেশ করে। পরে চলতি অর্থ বছরে ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে ও সার্বিক ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন কর্মসূচী দিয়ে ওই বেড়িবাঁধটি আবার মেরামত করা হয়। ভ্রাম্যমান আদালত ও ফাসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানায়, লক্ষণ দাশের নেতৃত্বে এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি মাতামুহুরী নদীর ঘুনিয়া পয়েন্ট থেকে এক্সকেভেটর গাড়ী দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। এসব বালু ট্রাক ভর্তি করে নির্মিত বেড়িবাঁধ দিয়ে চলাচলের কারণে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পাহাড়ী ঢলের পানি লোকালয়ে ঢুকে বড় ধরণের বন্যা ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা দেখা দেয়। এনিয়ে স্থানীয় ফাসিয়াখালী ৪নং ওয়ার্ডের এমইউপি অনিমেষ রঞ্জন দে বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন। প্রশাসন বিষয়টি জরুরী ভাবে আমলে নিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ত্বড়িৎ এ অভিযান পরিচালনা করে এবং এক্সকেভেটরে জব্ধ করেছেন। এলাকাবাসি জানান; তারপর ১৯ জুলাই সন্ধ্যায় বালি উত্তোলন করতে গলে বিক্ষুব্ধ জনতা এক্সকেভেটরে আগুন দেয়। এ নিয়ে এলাকায় এখন দু’ক্ষ মূখোমুখী অবস্থান নিয়েছে। গতকাল ২০ জুলাই লক্ষণ দাশ জনাদশেক লোক নিয়ে চকরিয়া পৌর শহরের চিরিঙ্গায় মানববন্ধন করেছে। অপরদিকে ফাঁসিয়াখালী এলাকায় শতশত নারী পুরুষ অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এ ব্যাপারে লক্ষণ দাশ জানান, ওই এলাকায় তার কিছু নদী সিকিস্তি জমি আবার পয়েস্তি হয়েছে। তিনি সেখানে বালি উত্তোলন করতে যান। সেখানে এলাকাবাসি তার এক্সকেভেটরে আগুন দেয়। তারা তার একটি বাসা ভেঙ্গে দেয়। এমনকি ভুপেন দেয় নামের একজনের ঔষধের দোকানেও হামলা করে। এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুব উল আলম এক্সকেভেটর জব্ধের কথা অস্বীকার করেন।
প্রকাশ:
২০১৬-০৭-২৩ ১৬:৩৮:৪২
আপডেট:২০১৬-০৭-২৩ ১৬:৩৮:৪২
- কক্সবাজারে যোগ হচ্ছে রিজিওনাল ট্রেনিং সেন্টার :
- চকরিয়ায় যাত্রীবাহি বাস চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
- আগস্টে ৪৬৭ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৭৬
- সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে চকরিয়ায় মানববন্ধন
- চাঁদাদাবী, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চেয়ারম্যান ইউনুছসহ ১২জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
- কক্সবাজার আদালতে স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর যৌতুকের মামলা!
- তামাকের ব্যবহার কমাতে শক্তিশালী কর পদক্ষেপ ও আইনের বিকল্প নেই
- চকরিয়ায় পুকুরে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে দুই বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু
- মাতামুহুরী নদীতে ১২ বসতঘর, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণে জেলা প্রশাসক
- নাইক্ষংছড়িতে টানা ৩দিন বৃষ্টির পানিতে ১৪ গ্রাম প্লাবিত
- চকরিয়ায় দুই দিনের ভারী বৃষ্টিতে নিন্মাঞ্চল প্লাবিত, ভয়াবহ বন্যার আশঙ্খা
- সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে চকরিয়ায় মানববন্ধন
- চকরিয়ায় যাত্রীবাহি বাস চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
- আগস্টে ৪৬৭ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৭৬
- চকরিয়ায় পুকুরে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে দুই বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু
- তামাকের ব্যবহার কমাতে শক্তিশালী কর পদক্ষেপ ও আইনের বিকল্প নেই
- চাঁদাদাবী, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চেয়ারম্যান ইউনুছসহ ১২জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
- কক্সবাজার আদালতে স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর যৌতুকের মামলা!
- কক্সবাজারে যোগ হচ্ছে রিজিওনাল ট্রেনিং সেন্টার :
পাঠকের মতামত: