ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় পিকআপ চাপায় নিহত ৬ ভাইয়ের পরিবারের পাশে জেলা প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার মালুমঘাটের হাসিনা পাড়ায় পিকআপ চাপায় নিহত ৬ ভাইয়ের শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা জানাতে বুধবার আজ (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টায় নিহতদের বাড়িতে আসেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশিদ।
এসময় তিনি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৬ পরিবারের মধ্যে প্রতি পরিবারকে ৬০ হাজার টাকা করে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা হস্তান্তর করেন এবং তাদের জন্য মালুমঘাট হিন্দুপাড়া (নাথপাড়া) এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার মুজিববর্ষের জমি সহ ৮টি নতুন বাড়ি শীঘ্রই করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সে অনুযায়ী কাজ বাস্তবায়ন করার জন্যে চকরিয়ার ইউএনও ও এসিল্যান্ডকে নির্দেশনা দেন। এছাড়া নিহতদের পরিবারে যাদের কর্মসংস্থান দরকার, তাদেরকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করা হবে বলে ঘোষণা দেন। তিনি অতিশীঘ্রই প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারের জন্য বড় পরিসরে বরাদ্দ এনে দেয়ার আশাও ব্যক্ত করেন এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সবসময় খবরাখবর রাখার জন্য চকরিয়ার ইউএনও ও এসিল্যান্ডকে নির্দেশনা দেন।
এসময় অনুষ্ঠানে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেপি দেওয়ান, সহকারি পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) মোঃ তফিকুল আলম, সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ রাহাত উজ জামান, থানার ওসি মোঃ ওসমান গনি, স্থানীয় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের জাতীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানিকভাবে নগদ আর্থিক সহায়তা, ফিক্স ডিপোজিতের কাগজপত্র ও খাদ্য সামগ্রী হস্তান্তর করা হয়।
এ ঘটনায় রক্তিমের ছোট ভাই প্লাবন সুশীল (২৪) বাদী হয়ে পিকআপ চালককে আসামি করে চকরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে র‌্যাব-১৫ এর একটি দল ঢাকা থেকে চালক সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেন। তাকে চকরিয়া সিনিযর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেয়া হলে বিচারক তাকে তিন দিনের রিমান্ড দেন। রিমান্ড শেষে তাকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন আদালত।

উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট এলাকায় পিতার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার পথে পিকআপ চাপায় একসাথে ৫ ভাই ঘটনাস্থলে মারা যায়। পরে ১৪ দিন পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রক্তিম শীলও (৩৫) মারা যান। আহত বোন হীরা শীল এলনও মালমুঘাট মেমোরিয়াল খ্রীস্টান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মা মৃণালীনি বালা সুশীল বলেন, আমার পরিবারে আর উপার্জনক্ষম কেউ রইল না। আমার বেঁচে থেকে এখন কি হবে। আমি এখন কি নিয়ে বেঁচে থাকব। চোখের সামনে অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই দেখছিনা।

পাঠকের মতামত: