চকরিয়া পৌরশহরে ডেভেলপার কোম্পানীর নানা প্রতারণার ফাঁদে পড়ে ভুমি মালিকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। চুক্তির মাধ্যমে মার্কেট নির্মাণ করার প্রলোভন দেখিয়ে অল্প কিছু কাজ করলেও বেশির ভাগ ডেভেলাপার কোম্পানীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী ভুমি মালিকরা। এ অবস্থার কারনে থানা ও আদালত মামলার খড়ক নিয়ে চরমভাবে হিমসিম খেতে হচ্ছে অনেক ভুমি মালিককে।
চকরিয়া শহরের মার্কেট মালিক অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য ইদ্রিস মিয়া বলেন, তিনি সরকারি চাকুরীতে থাকা অবস্থায় চট্টগ্রামের সাতকানিয়া এলাকার রিয়েল টেক রিয়েলেটি লিমিটেড নামের একটি ডেভলাপার কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সরওয়ার কামালের প্রস্তাবে রাজি হয়ে চকরিয়া শহরের নিজের জায়গায় অংশিদারিত্বের মাধ্যমে সমান ভাগে মার্কেট নির্মাণের জন্য চুক্তি করেন। তিনি বলেন, সরলমনে বিশ্বাস করে ডেভলাপার কোম্পানীর সাথে রেজিষ্ট্রাট চুক্তি করার জন্য একমত হলে রিয়েল টেক রিয়েলেটির পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সরওয়ার কামাল ও গ্রান্ডপ্রিক্স প্রাইভেট লিমিটেড এর পক্ষে জাফর আলম চুক্তিতে আবদ্ধ হন।
ইদ্রিছ মিয়া অভিযোগ করেছেন, মার্কেট নির্মান কাজ শেষের দিকে ডেভলাপার ব্যবসায়ীরা লোভে পড়ে কৌশলে তাঁর (ইদ্রিস মিয়া) জমির কেড়ে নেয়ার জন্য প্রতিবেশি মৃত আব্বাছ মিয়া গং নামে ওই জমির অন্য ওয়ারিশ সৃষ্টি করে। এ ঘটনার জেরে কয়েকবছর ধরে তিনি জায়গার মালিকানা প্রতিষ্ঠা নিয়ে চকরিয়া থানা, আদালত ও জনপ্রতিনিধি কাছে বিচারের নামে প্রতিনিয়ত হয়রানী শিকার হচ্ছেন।
ইদ্রিস মিয়া অন্য ওয়ারিশ সৃষ্টির প্রসংঙ্গে বলেন, চকরিয়া পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের সমশের পাড়া এলাকার মৃত আব্বাছ মিয়ার স্ত্রী ছলমা খাতুন বাদী হয়ে আদালতে ইতোমধ্যে একটি স্বত্ব সাব্যস্তে অনুমতি প্রত্যাহার খাসদখলের আবেদন করেন। ওই মামলা আদালত ২০১৪ সালের ৩মার্চ ৬১ নং আদেশে নন প্রশিকিউশন সুত্রে খারিজ করে দেন। কিন্তু তারপরও আব্বাছ মিয়া গং তাদের প্রাপ্ত অংশের চেয়ে মার্কেটের অতিরিক্ত জায়গা এখনও ভোগদখলে রেখেছেন। বর্তমানে ওই জমি স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে রেজিষ্ট্রাট ও আন রেজিষ্ট্রোট চুক্তি করে দীর্ঘ বছর পর্যন্ত অভিনব কৌশলে অতিরিক্ত জমি দখলের পায়তারা করে আসছে।
বর্তমান ডেপলারদের চুক্তি অনুয়ায়ী চকরিয়া পৌরসভার ওয়াবদারোর্ডস্থ আমিনা শপিং সেন্টার নামে একটি মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। ওই মার্কেটে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। অধ্যবধি পর্যন্ত কোন দোকানদার ভাড়া বাবদ কোন টাকা পয়সা ভুমি মালিকদের দেয়ার জন্য ডেপলার কোম্পানী কোন ধরণের ব্যব¯’া করে না দিয়ে নিজেদের পকেট ভর্তি ও ভিন্ন ওয়ারিশ তৈরী করে নানা জবর দখলের পায়তারা করে আসছে।
ভুক্তভোগী ইদ্রিছ মিয়া দাবি করেন, চুক্তি অনুয়ায়ী মার্কেটে প্রথম ফটকে ২২ নং দোকানটি প্রাপ্ত হয়ে তিনি স্থানীয় মুফিজুর রহমানের পুত্র আতিকুর রহমানকে ব্যবসায়ী হিসেবে লাগিয়ত করেন। আতিকুর রহমান দোকান খুলে উন্নয়ন কাজ করতে গেলে দখলবাজ পক্ষের আব্বাছ মিয়ার পুত্র সেলিম উদ্দিন সহ ডেভলালাপার কোম্পানীর লোকজন উল্টো তাকে বেদড়ক পিঠিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় আতিকুর রহমান বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, চকরিয়া শহরে যত্রতত্র ভাবে গড়ে উঠা ডেভলাপার কোম্পানী গুলো ইমারত আইন লঙ্ঘন করে চলছে। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারের নিয়মনীতি অমান্য করে কার্যক্রম চালিয়ে আসলেও প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ রয়েছে নীরব দর্শকের ভুমিকায়। এতে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ভুমি মালিক পক্ষের লোকজন। ##
পাঠকের মতামত: