ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে দুই মহিলাকে তল্লাশি ।। গণপিটুনিতে পালালো দাদা ওসমানসহ দুজন, আটক ১

chakaria-pic-24-10-16চকরিয়া প্রতিনিধি ।।

কক্সবাজারের চকরিয়ায় ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে এক মহিলা রোগী ও তার বোনকে তল্লাশি চালানোর সময় জনতার সন্দেহ হলে তিন যুবককে গণপিটুনি দেওয়ার সময় দুইজন পালিয়ে গেলেও অপরজনকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে চট্টগ্রামকক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট স্টেশনের যাত্রী ছাউনির কাছে এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে দুই মহিলার কাছে ইয়াবা রয়েছে দাবি করে তাদের দেহ ও সাথে থাকা ব্যাগ তল্লাশির পর একপর্যায়ে একটি কারে তুলে ফেলার চেষ্টা চালায় তিন যুবক। এ সময় জনতা এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে এবং তিনজনকেই গণপিটুনি দেওয়া শুরু করলে দুই যুবক কৌশলে পালিয়ে যায়। তবে অপরজনকে ধরে ফেলে জনতা।

পুলিশ জানায়, ডিবি পুলিশ পরিচয় দেওয়া তিনজনের মধ্যে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া যুবকের নাম দেলোয়ার হোসেন (২৫)। সে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের লিংক রোডস্থ মুহুরী পাড়ার মোহাম্মদ হাসানের ছেলে। পালিয়ে যাওয়া অপর দুইজনের মধ্যে একজনের বাড়ি টেকনাফে। তার নাম গিয়াস উদ্দিন। আরেকজনের নাম ওসমান গণি ওরফে দাদা ওসমান। তার বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের ছিকলঘাট এলাকায়।

ঘটনার শিকার দুই মহিলা হলো, টেকনাফ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামাবাদ পল্লান পাড়ার মাষ্টার বশিরুল ইসলামের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৩২) ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন পল্লান পাড়ার আবদুল হকের স্ত্রী শামশুন্নাহার (২৮)। তাদের মধ্যে বড়বোন জানান, ছোট বোন গত দুইবছর আগে মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করেন। চিকিৎসাজনিত সমস্যা দেখা দিলে নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী (আজ মঙ্গলবার) একই হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর জন্য একদিন আগে টেকনাফ থেকে গতকাল বিকেলে মালুমঘাট আসেন তারা। চিকিৎসার সুবিধার্থে মালুমঘাট স্টেশনের একটি আবাসিক হোটেলে কক্ষও ভাড়া নেন। কিন্তু রাতে হোটেল কক্ষ থেকে বের হয়ে স্টেশনের দোকান থেকে খাবার ক্রয় করার সময় অতর্কিতভাবে একটি কারে করে তিনজন যুবক এসে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ইয়াবা রয়েছে দাবি করে তাদের দেহ এবং সাথে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে। একপর্যায়ে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তুলে ফেলার চেষ্টা চালায় । এ সময় তাদের চিৎকারে আশপাশ থেকে লোকজন এগিয়ে এসে গণপিটুনি শুরু করে।

চকরিয়া থানার কয়েকজন অফিসার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ডিবি পুলিশ পরিচয় দেওয়া দেলোয়ারকে থানায় নিয়ে আসার পর সে নিজেকে কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের এক শীর্ষ নেতার শ্যালক বলে পরিচয় দেয় এবং ওই নেতাকে ফোন করতেও অনুরোধ করেন। এমনকি ওই নেতা তাকে ছেড়ে দিতেও পুলিশকে ফোনও করেন।

চকরিয়া থানার এসআই মো. মহিউদ্দিন খান জানান, চকরিয়ার ছিকলঘাট এলাকার কুখ্যাত বনদস্যু ও ইয়াবা স¤্রাট ওসমান গণি ওরফে দাদা ওসমান সহ তিন যুবক ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে দুই মহিলার কাছে ইয়াবা রয়েছে মর্মে দেহ এবং ব্যাগ তল্লাশী করে গাড়ীতে তুলে নেয়ার চেষ্টা করলে জনতার সন্দেহ হয়। এ সময় তাদের গণপিটুনি দেয়ার সময় ওসমান ও গিয়াস পালিয়ে যেতে পারলেও দেলোয়ারকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। এ সময় দুই মহিলাকেও উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।

চকরিয়া থানার ওসি মো. জহিরুল ইসলাম খান বলেন, আটক যুবক এবং পালিয়ে যাওয়া দুইজনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

পাঠকের মতামত: