ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় কুপিয়ে হাতের আঙ্গুল কেটে দেয়ার ঘটনায় মামলা, জামিনে এসে আসামির হুমকি

ddddচকরিয়ায় হাতের তিনটি আঙ্গুল কেটে দেয়া হয়েছে নুরুল আলমের

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :::

চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নে বসতবাড়িতে হামলা ও গৃহকর্তাসহ দুইজনকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা আদালত থেকে জামিনে এসে ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মামলার আসামি স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতার দাপটে অভিযুক্ত অপরাপর আসামিরা এবার বাদিকে ৩০বছর ভোগদখলীয় বসতভিটা থেকে অন্যত্র চলে যেতে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন। এ ঘটনায় মামলার বাদি ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের বরঘোনা এলাকার আহমদ ছোবাহানের ছেলে নুরুল আলম ও তাঁর পরিবার সদস্যরা বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী।

আক্রান্ত পরিবারের গৃহকর্তা দিনমুজুর নুরুল আলম (৪০) জানান, বরইতলী ইউনিয়নের বরঘোনা এলাকায় প্রায় ৩০বছর ধরে ভোগদখলীয় জায়গায় বসতঘর নির্মাণ করে তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছেন। কিন্তু এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল তাকে দুর্বল পেয়ে প্রভাব বিস্তার করে জোরপুর্বক তার বসতভিটাটি জবরদখলের জন্য অপচেষ্ঠা চালাতে শুরু করেন। সর্বশেষ গত ২৭ জানুয়ারী ১০-১৫জনের একটি দল তাঁর বাড়িতে ঢুকে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। ঘটনার সময় বাঁধা দিতে গেলে গৃহকর্তার ভাইয়ের স্ত্রী পারভীন আক্তার ও তাঁর ছেলে শোয়াইবকে বেধম মারধর করে অভিযুক্তরা। তাদেরকে উদ্ধারে এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা কুপিয়ে হাতের তিনটি আঙ্গুল কেটে দেয় গৃহকর্তা নুরুল আলমের।

নুরুল আলম জানান, ঘটনার পর তাকেসহ আহতদেরকে পরিবার সদস্যরা প্রথমে চকরিয়া উপজেলা হাসপাতাল ও পরে কক্সবাজার সদর এবং চমেক হাসপাতালে ভর্তি করে। ওইসময় বাড়িতে কোন সদস্য না থাকার সুযোগে পরদিন ২৮ জানুয়ারী অভিযুক্তরা ফের হামলা চালিয়ে গৃহকর্তা নুরুল আলমের বাড়িভিটা থেকে প্রায় ২ লাখ টাকার রকমারি গাছ কেটে নিয়ে যায়। ভাংচুর করা হয় প্রায় ৩০ হাজার টাকার ঘেরাবেড়া।

বাড়িতে হামলা ও কুপিয়ে জখমের ঘটনায় গৃহকর্তা নুরুল আলম বাদি হয়ে ঘটনার ১৪ দিন পর গত ৯ ফেব্রুয়ারী চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি নালিশী মামলা দায়ের করেন।

মামলায় আসামি করা হয়েছে স্থানীয় গুরা মিয়ার ছেলে মাহাবু, মৃত কালা মিয়ার ছেলে গুরা মিয়া, আবু ছৈয়দের ছেলে রফিক, গুরা মিয়ার ছেলে মনছুর আলম, ইউনিয়নের মোজাহেরপাড়া গ্রামের উকিল আহমদের ছেলে আওয়ামীলীগ নেতা নজরুল ইসলাম, খয়রাতিপাড়া গ্রামের শেখ আতর আলীর ছেলে নুরুল আমিন, খুইল্যা মিয়ার ছেলে আবুল বশর, মঈন উদ্দিন, জামাল উদ্দিন ও ওয়াহিদুর ছেলে আবছার।

আদালতের বিচারক বাদির নালিশি অভিযোগটি আমলে নিয়ে চকরিয়া থানার ওসিকে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খাঁন ১৪ ফেব্রুয়ারী মামলাটি নথিভুক্ত (নং ৪০) করেন। বর্তমানে মামলাটি থানার এসআই আলমগীর আলম তদন্ত করছেন।

মামলার বাদি নুরুল আলম অভিযোগ করেছেন, কিছুদিন আগে মামলার এজারনামীয় ১০জন আসামির মধ্যে ১ ও ২নং ছাড়া অপর ৮ আসামি আদালত থেকে জামিন পেয়েছে। জামিনে এসেই মামলার আসামি স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা নজরুল ইসলামের দাপটে অভিযুক্ত অপরাপর আসামিরা ফের তাকে (বাদি) বসতভিটা থেকে অন্যত্র চলে যেতে হুমকি দিচ্ছে। এ অবস্থায় মামলার বাদি ও তাঁর পরিবার সদস্যরা বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী।

স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেছেন, দিনমুজুর নুরুল আলমের বাড়িতে হামলার পর থেকে জড়িতরা তাঁর বাড়ির পাশের স্থানীয় একটি হেফজখানা ও এতিমখানা বন্ধ করে দিয়েছে। মুলত এতিমখানার জায়গাটিও তাঁরা দখলে নিতে এ কাজ করেছে বলে স্থানীয়রা দাবি করেছেন। এ অবস্থার কারনে এলাকার অন্তত দুই শতাধিক শিক্ষার্থী শিক্ষা গ্রহন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। #

 

পাঠকের মতামত: