চকরিয়া উপজেলায় এই প্রথম অনুষ্ঠিত আন্তঃ কলেজ ও স্কুল-মাদ্রাসা বিতর্ক প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ড গতকাল ২৭ এপ্রিল সম্পন্ন হয়েছে। জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে (টিআইবি)’র সহায়তায় উপজেলা প্রশাসন ও সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) যৌথভাবে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের ৫৯টি বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা নিয়ে প্রতিযোগিতার উপাঞ্চলভিত্তিক বাছাই শেষে উপাঞ্চল চ্যাম্পিয়নদের নিয়ে সেমিফাইনাল রাউন্ড হয় গত ২৬ এপ্রিল জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলার প্রথম দিনে। কলেজ পর্যায়ে চারটি দল সেমিফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।
উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে সেমিফাইনালে বদরখালী কলেজকে হারিয়ে ফাইনালে উন্নীত হয় ডুলাহাজারা কলেজ এবং চকরিয়া কলেজকে হারিয়ে ফাইনালের টিকেট পায় চকরিয়া আবাসিক মহিলা কলেজ। মাধ্যমিক পর্যায়ে সেমিফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ ও মালুমঘাট আইডিয়াল হাই স্কুল এবং বহদ্দারকাটা উচ্চ বিদ্যালয় ও ইলিশিয়া জমিলা বেগম উচ্চ বিদ্যালয়। এতে ফাইনালে উন্নীত হয় কোরক বিদ্যাপীঠ ও বহদ্দারকাটা উচ্চ বিদ্যালয়। ফাইনালে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয় চকরিয়া আবাসিক মহিলা কলেজ। প্রতিযোগিতার সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াই ছিলো মাধ্যমিক পর্যায়ের ফাইনালে।
টানটান উত্তেজনায় অনুষ্ঠিত ফাইনালে বহদ্দারকাটা উচ্চ বিদ্যালয়কে সামান্য ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ বিতার্কিক দল। এ বিভাগে শ্রেষ্ঠ বক্তা নির্বাচিত হন কোরক বিদ্যাপীঠের আবদুল্লাহ মোঃ ইয়াছের এবং কলেজ পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক নির্বাচিত হন চকরিয়া আবাসিক মহিলা কলেজের নওমা আফরিন মাম্মি। প্রতিযোগিতায় মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন চকরিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ দিদারুল আলম এবং বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ভেটেনারী সার্জন ডা. ফেরদৌসি আকতার, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম আযাদ এবং সহকারি প্রোগ্রামার আজিমুল ইসলাম।
দর্শক সারিতে বসে এসময় প্রতিযোগিদের বক্তব্য উপভোগ করেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম ও কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম লিটু। এর আগে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উপলক্ষে বিজ্ঞান বিষয়ক উপস্থিত বক্তব্য প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত বক্তব্য প্রতিযোগিতা সঞ্চালনা করেন ডুলাহাজারা কলেজের শিক্ষক সিন্টু কুমার চৌধুরী। এছাড়াও অনুষ্ঠিত হয় তথ্য অধিকার আইন বিষয়ক উন্মুক্ত কুইজ প্রতিযোগিতা। কুইজ প্রতিযোগিতা পরিচালনা করেন টিআইবি’র এরিয়া ম্যানেজার মোঃ জসিম উদ্দিন। কুইজ প্রতিযোগিতার প্রতিটি প্রশ্নে শিক্ষার্থীরা উত্তর দেয়ার জন্য একযোগে হাত তুলে পুরো অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলে। কুইজ প্রতিযোগিতায় মোট ২৬ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়াও বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণকারি এবং বিজ্ঞান মেলায় স্টল প্রদানকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুরস্কৃত করা হয়। ষ্টলে কলেজ পর্যায়ে প্রথম হন ডুলাহাজারা কলেজ, দ্বিতীয় হন চকরিয়া আবাসিক মহিলা কলেজ এবং তৃতীয় হন চকরিয়া কলেজ। মাধ্যমিক পর্যায়ে স্টলে প্রথম হন চকরিয়া কেন্দ্রীয় উচ্চ বিদ্যালয়, দ্বিতীয় হন চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ এবং তৃতীয় হন বদরখালী কলোনীজেশন উচ্চ বিদ্যালয়।
চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিজ্ঞান মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানের পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাহেদুল ইসলাম। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) মোঃ দিদারুল আলমের সভাপতিত্বে ও টিআইবি’র এরিয়া ম্যানেজার মোঃ জসিম উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম লিটু এবং জেলা পরিষদ সদস্য আবু তৈয়ব। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কোরক বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক নূরুল আখের, বহদ্দারকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রদান শিক্ষক মশিউর রহমান আরিফ, সনাক ইয়েস উপ-কমিটির আহবায়ক জিয়াউদ্দিন, এবং উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ।
পাঠকের মতামত: